পাঠ্যপুস্তক বোর্ড আইন সংশোধনের উদ্যোগ - দৈনিকশিক্ষা

পাঠ্যপুস্তক বোর্ড আইন সংশোধনের উদ্যোগ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) আইন সংশোধন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সংশোধিত আইনে জাতীয় এ প্রতিষ্ঠানটিকে নিজস্ব বিধি প্রণয়ন, সংরক্ষণ ও বাতিলের ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটিকে ঢেলে সাজাতে বর্তমান চারটি উইংয়ের স্থলে ছয়টি উইং করা হবে। যুক্ত হচ্ছে কারিগরি শিক্ষা ও মাদ্রাসা শিক্ষা নামে দুটি নতুন উইং। এতে বোর্ডের সদস্যও বাড়ছে দু’জন। এনসিটিবির আইনে বিদ্যালয়ের সংজ্ঞাও বদলানো হচ্ছে।

বর্তমানে বিদ্যালয় বলতে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বোঝায়; কিন্তু সংশোধিত আইনে বোঝানো হবে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে। এসব সংশোধনীসহ খসড়া আইনটি অনুমোদনের জন্য আজ সোমবারের মন্ত্রিসভা বৈঠকে উঠছে। আইনটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড আইন-২০১৬’।

এনসিটিবি হচ্ছে দেশের প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সকল শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জন এবং এর আলোকে পাঠ্যপুস্তক ও অন্যান্য শিখন-শেখানো সামগ্রী উন্নয়ন ও প্রকাশের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি প্রতিষ্ঠান। এটি পাঠ্যপুস্তক বোর্ড নামে বহুল পরিচিত। এটি বাংলাদেশের প্রাক-প্রাথমিক হতে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সকল স্তরের শিক্ষার্থীর পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, উন্নয়ন এবং মুদ্রণ করে বিনামূল্যে শিক্ষার্থীর হাতে পৌঁছে দেয়। পুস্তক প্রকাশনার সংখ্যা বিবেচনায় এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রকাশনা সংস্থা। এটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি প্রতিষ্ঠান।

আইন সংশোধন প্রসঙ্গে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা সাংবাদিকদের বলেন, “পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে ঢেলে সাজাতে সরকার আইনের সংস্কার করার উদ্যোগ নিয়েছে। আইনে বেশকিছু পরিবর্তন করা হবে। আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে খসড়া আইনটি উঠতে পারে।”

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এনসিটিবি প্রতিষ্ঠিত হয় ‘দ্য ন্যাশনাল কারিকুলাম অ্যান্ড টেক্সটবুক বোর্ড অর্ডিন্যান্স-১৯৮৩’-র ক্ষমতাবলে। সামরিক সরকার আমলের সকল অধ্যাদেশ উচ্চ আদালত বাতিল করায় পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের অস্তিত্ব বিলুপ্তির মুখে পড়ে। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধন আইন, ২০১১ এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের ফলে ১৯৭৫ সালের আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল এবং ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ থেকে ১৯৮৬ সালের ১০ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে জারি করা অধ্যাদেশগুলোর মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মপরিধিভুক্ত কোনো অধ্যাদেশ থাকলে, তা আইনে রূপান্তর করার জন্য দ্রুত উদ্যোগ নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয় আইন মন্ত্রণালয় থেকে। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় দ্রুত এ আইনের খসড়া তৈরি করে। আগের অধ্যাদেশের সংশোধন ও পরিমার্জন করে আইনটি বাংলায় রূপান্তর করে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের মতামতও নেওয়া হয়।

জানা যায়, বর্তমানে এনসিটিবিতে চারটি উইং রয়েছে।

একজন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বোর্ড সদস্য (পাঠ্যপুস্তক), সদস্য (মাধ্যমিক কারিকুলাম), সদস্য (প্রাথমিক কারিকুলাম) ও সদস্য (অর্থ) রয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে সদস্য (কারিগরি শিক্ষা) ও সদস্য (মাদ্রাসা শিক্ষা) নামে অতিরিক্ত আরও দুটি সদস্য পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। সারাদেশে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব বাড়ায় ও মাদ্রাসার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর পাঠ্যবই তৈরির উদ্দেশ্য সামনে রেখে ‘পূর্ববঙ্গ স্কুল টেক্সটবুক কমিটি’ গঠিত হয়। পরে ১৯৫৪ সালে টেক্সট বুক আইন পাস হয় এবং সে আইন অনুযায়ী স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ‘স্কুল টেক্সটবুক বোর্ড’ গঠিত হয়। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর ১৯৭২ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ স্কুল টেকস্টবুক বোর্ড রাষ্ট্রের প্রয়োজন অনুযায়ী প্রথম থেকে দশম শ্রেণির সকল বিষয়ের সকল পাঠ্যপুস্তক সংশোধন, পরিমার্জন ও পুনর্লিখন কাজ করে। ১৯৭৮ সাল থেকে শিক্ষাক্রমের ওপর ভিত্তি করে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের কাজ শুরু হয়। ১৯৮১ সালে শিক্ষাক্রম প্রণয়নের জন্য ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম উন্নয়ন কেন্দ্র (এনসিডিসি)’ নামে এবং পরে ১৯৮৩ সালে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড নামে যাত্রা শুরু করে।

আইন অনুসারে, এনসিটিবির প্রধান চেয়ারম্যান। এটি পরিচালিত হয় বোর্ডের মাধ্যমে। এর প্রধান চারটি উইং হলো শিক্ষাক্রম, প্রাথমিক শিক্ষাক্রম, পাঠ্যপুস্তক ও অর্থ উইং। প্রতিটি উইংয়ের প্রধান বোর্ডের সদস্য। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক কাজে সহায়তার জন্য রয়েছেন একজন সচিব। চেয়ারম্যান ও চারটি উইং-এর চারজন সদস্যের সমন্বয়ে বোর্ড গঠিত। বোর্ডের সাচিবিক দায়িত্ব পালন করেন বোর্ডের সচিব। এনসিটিবিতে বর্তমানে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা ৭৭ জন, দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা ২৯ জন, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ১০৯ জন এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রয়েছেন ৯৬ জন।

প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040969848632812