পাঠ্যবই সরবরাহে দেরি: কালো তালিকায় ১৮ প্রতিষ্ঠান - Dainikshiksha

পাঠ্যবই সরবরাহে দেরি: কালো তালিকায় ১৮ প্রতিষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিবেদক |

পহেলা জানুয়ারি ‘পাঠ্যপুস্তক উৎসব’ পালন করলেও হাজার হাজার শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছেনি নতুন বই আজও। বই না পাওয়ায় এসব শিক্ষার্থী পড়েছে বিপাকে। যথা সময়ে বই সরবরাহ না করার জন্য মুদ্রণ কাজে নিয়োজিত ১৮ প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করছে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এর মধ্যে ১৭টিকে শোকজ করা হয়েছে। এদের জরিমানার মুখোমুখি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

একটি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এর মালিক বলেন, বই ছাপার প্রয়োজনীয় উপকরণ সময়মতো না পাওয়ায় এ বিলম্ব। এতে আমাদের কোনো দোষ নেই। এনসিটিবি বলছে, যথাসময়ে বই না দেয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে শোকজ করা হয়েছে। আইনানুযায়ী তাদের জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে। ভুলে ভরা পাঠ্যপুস্তক নিয়ে সারা দেশে হইচই থামতে না থামতেই এনসিটিবি আরেকটি নতুন কেলেংকারিতে পড়ল।

সূত্র বলছে, পাঠ্যপুস্তক বোর্ড মনোনীত ১৮টি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান প্রায় ২১ লাখ বই সরবরাহ করেনি। ফলে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার অসংখ্য শিক্ষার্থী নতুন বই পায়নি। এদের বেশির ভাগই ইংরেজি ভার্সনের শিক্ষার্থী।

সময় মতো বই না দেয়ায় জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এসব প্রতিষ্ঠানের জামানতের অর্থ বাজেয়াপ্তের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এছাড়া তাদের আরও দু’ধরনের জরিমানার অর্থও গুনতে হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছর ৭২টি প্রতিষ্ঠান সময় মতো পাঠ্যবই সরবরাহ না করলেও ১৮টি প্রতিষ্ঠানের অপরাধ গুরুতর। ফলে ১৮টি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করার প্রক্রিয়াও চলছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগামী বছর আর বই ছাপার কাজ দেয়া হবে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

ফেব্রুয়ারির ১৮ তারিখ পার হওয়ার পরও পাঠ্যবই সরবরাহ করতে না পারার ব্যর্থতার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এনসিটিবির কর্মকর্তাদের দুষছেন। এনসিটিবির দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবহেলার কারণেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দু’জন কর্মকর্তা বলেন, এনসিটিবির কর্মকর্তারা গ্রুপে ভাগ হয়ে প্রেস মনিটরিং করেন। এজন্য মোটা অংকের সম্মানীও নেন। এরপরও নির্ধারিত সময়ে কাজ তুলতে না পারা রহস্যজনক। বিষয়টি আমলে নেয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা প্রথমে বই সরবরাহ বাকি নেই বলে দাবি করেন। পরে ১৭টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাওয়ার কথা জানালে তিনি বলেন, ওইসব প্রতিষ্ঠান কিছু দেরি করেছে। এ কারণে তাদের শোকজ করা হয়েছে। এছাড়া সরকারি ক্রয় আইন (পিপিআর) অনুযায়ী তাদের জরিমানা করা হবে।

মন্ত্রণালয় বলছে, ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৭টি প্রতিষ্ঠান মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) ও এসএসসি ভোকেশনাল, ইবতেদায়ি, দাখিল ও দাখিল ভোকেশনালের ২০ লাখ ৭ হাজার ৭৭৭টি বই সরবরাহ করেনি। এগুলোর মধ্যে নূরকার্ড বোর্ড বক্স ফ্যাক্টরি ১ লাখ ১০ হাজার বই দেয়নি। এছাড়া মাদার প্রিন্টার্স ১ লাখ ২০ হাজার ২৫৫, প্লাসিড প্রিন্টার্স অ্যান্ড প্যাকেজেস ৪ লাখ ৫০ হাজার ৪২৫, নিউ জাহিদ আর্ট প্রেস ৯০ হাজার ৮২৫, লিবার্টি প্রিন্টিং ওয়ার্কস ১ লাখ ৩৫ হাজার, খান প্রিন্টার্স ২ লাখ ৫০ হাজার ৭২৫, কোয়ালিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিশার্স ১ লাখ ৮৫ হাজার ৩০, গ্লোবাল প্রিন্টিং ইকুইপমেন্ট ৭০ হাজার ৫০০, দ্য ক্যাপিটাল প্রেস ৫০ হাজার, মনির প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন ৮০ হাজার, নাজমুননাহার প্রেস ৮৬ হাজার ৯৭০, কালচারাল প্রেস ১২ হাজার, কাজল প্রিন্টিং ওয়ার্কস ২ লাখ ৮৪৮, দিগন্ত অফসেট প্রিন্টার্স ১৬ হাজার ১২০, বর্ণ সংযোজন ৮০ হাজার ৫৭৯, আবু প্রিন্টার্স ৬০ হাজার বই দিতে পারেনি। এ তালিকায় আনন্দ প্রিন্টার্সের নাম আছে। তবে এনসিটিবির এক কর্মকর্তা জানান, ভুলক্রমে তালিকায় নাম দেয়া হয়েছে। ২২ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠানটি বই দিয়েছে। তবে তারা নির্ধারিত সময়ের পর বই দিয়েছে।

জানা গেছে, এ ১৭টিকেই ১৩ ফেব্রুয়ারি ৩ দিনের সময় দিয়ে শোকজ করা হয়। শোকজের জবাবের পর এদের বিরুদ্ধে প্রথম ২৮ দিনে বই দিতে না পারার এক ধরনের জরিমানা, ২৮ দিন পার হওয়ার জন্য মোট কাজের ১০ শতাংশ অর্থ জরিমানা এবং জামানতের অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হবে। সাধারণত প্রাপ্ত কাজের মোট অর্থের ১০ শতাংশ জামানত রাখা হয়। এ বছর মাধ্যমিক স্তরের জন্য প্রায় ২৫ কোটি বই ছাপানো হয়।

এ ব্যাপারে আনন্দ প্রিন্টার্সের মালিক রাব্বানী জব্বার  বলেন, বই ছাপার প্রয়োজনীয় উপকরণ আমরা সময় মতো পাইনি। এছাড়া ইংরেজি ভার্সনের একটি বই পুনঃটেন্ডারের ঘটনা ঘটেছে। এসব কারণে সঠিক সময়ে বই সরবরাহ করা সম্ভব হবে না মর্মে আগেই চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। তারপরও কারণ দর্শানো চিঠি দেয়া হয়েছে। আমরা এরই মধ্যে এর জবাব দিয়েছি।

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0067031383514404