পাবলিক পরীক্ষায় শূন্য পাস প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা - Dainikshiksha

পাবলিক পরীক্ষায় শূন্য পাস প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা

রাকিব উদ্দিন |

জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় শূন্য পাস করা ৫৯টি স্কুল ও মাদ্রাসার পাঠদানের অনুমতি বাতিল হচ্ছে। পাঠদানে ন্যূনতম সফলতা দেখাতে না পারায় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যাচ্ছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। প্রথমে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শো-কজ) এবং এর আলোকে প্রতিষ্ঠানগুলোর পাঠদানের অনুমতি বাতিল ও স্বীকৃতি নবায়ন স্থগিত রাখার সিন্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় এবার যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে কোন শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি সেসব প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এবার অষ্টম শ্রেণীর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও মাদ্রাসার জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) ৫৯টি প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করেনি। গত বছর এই ধরনের প্রতিষ্ঠান ছিল ২৮টি। পুরোপুরি ব্যর্থ ৫৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৫টিই মাদ্রাসা। এই ২৫টি মাদ্রাসা থেকে এবার জেডিসি পরীক্ষায় মাত্র ১১৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল বলে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাজানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর একেএম ছায়েফ উল্লাহ  বলেন, ‘যেসব মাদ্রাসা থেকে জেডিসি পরীক্ষায় কেউ পাস করেনি সেসব মাদ্রাসা থাকার কোন প্রয়োজন নেই।’

গত বছর সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে ঢাকা বোর্ডে ৬টি, রাজশাহীতে ৫টি, কুমিল্লায় একটি, যশোরে ৯টি এবং দিনাজপুরে ১৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষার্থী জেএসসি পরীক্ষায় পাস করতে পারেনি। তবে চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেট বোর্ডে কোন শূন্য পাস স্কুল নেই।

এ ব্যাপারে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিব (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) শাহেদুল কবির চৌধুরী বলেন, ‘যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে এবার জেএসসি- জেডিসি পরীক্ষায় কেউ পাস করেনি সেগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এগুলোর সব ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এরপর প্রথমে তাদের শো-কজ করা হবে। পরে পাঠদানের অনুমতি বাতিল বা স্থগিত করা হতে পারে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বীকৃতি নবায়নও বন্ধ রাখা হতে পারে।’

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর উচ্চ মাধ্যমিকে (এইচএসসি) সারাদেশের ১৩৫টি কলেজ ও মাদ্রাসায় কোন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি, যার একটি অংশ এমপিওভুক্ত। আর এক হাজার ৩৮৩টি কলেজ ও মাদ্রাসায় দু’তিনজন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। এগুলোর প্রায় অর্ধেকই এমপিওভুক্ত। রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন পাওয়া এসব কলেজ এখন অস্থিত্ব সংকটের মুখে রয়েছে।

কিন্তু এমপিওভুক্ত যেসব কলেজ ও মাদ্রাসায় কেউ ভর্তি হয়নি, সেগুলোর শিক্ষক কর্মচারীরা বসে বসে সরকার থেকে বেতনভাতা ভোগ করছেন বলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ন্যূনতম শিক্ষার্থী ভর্তি না হওয়ায় ২০১৬ সালে ৭৯টি কলেজ ও মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয়া হয় বলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এছাড়া গত বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায়ও ৯৩টি স্কুল ও মাদ্রাসা থেকে কোন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়নি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাদ্রাসা বোর্ডের প্রতিষ্ঠান ছিল ৮২টি, যার মধ্যে তিনটি মাদ্রাসা ছিল এমপিওভুক্ত। বাকি স্কুলের মধ্যে ঢাকা বোর্ডের দুটি, রাজশাহীর একটি, কুমিল্লার দুটি, যশোরের দুটি, চট্টগ্রামের একটি, বরিশালের দুটি এবং দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের একটি।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসা বোর্ডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সংবাকে জানান, ‘৮২টি প্রতিষ্ঠানকেই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছিল। জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় গত বছর ১৮/২০টি মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এমপিওভুক্ত মাদ্রাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়া যায়নি। এজন্য এমপিও সুবিধা পাওয়া ব্যর্থ তিনটি মাদ্রাসার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি।’

জানা গেছে, শিক্ষা বোর্ডগুলো ব্যর্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করে থাকে। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা অনেক ক্ষেত্রেই বোর্ডের সুপারিশ বাস্তবায়ন করে না। গত বছর আলিমসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় কোন শিক্ষার্থী পাস না করা ১০/১৫টি প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের স্বীকৃতি বাতিল করতে মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেছিল মাদ্রাসা বোর্ড। ওই সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘ব্যর্থ স্কুল-কলেজের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এককভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু এমপিওভুক্তসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের পরিচালিত মাদ্রাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন আব্যশক। এজন্য শূন্য পাস মাদ্রাসাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না।’

জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিন গত ৩০ ডিসেম্বর শূন্যভাগ পাস করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘এসব প্রতিষ্ঠান থাকার কোন কারণ নেই। এ ধরনের স্কুল অনেকগুলো গড়েছে, যেগুলোতে লেখাপড়া ভালো হয় না বা পাস করলেও একজন-দুইজন পাস করে। আমরা এগুলো রাখতে চাই না। বরং ওই স্কুলগুলোকে কোথাও মার্জ (একীভূত) করে হোক বা ওই স্কুলের ছাত্রদের অন্য ব্যবস্থা করে হোক, যেন ভালো লেখাপড়া হয় সেদিকে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’

 

সৌজন্যে: সংবাদ

দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা - dainik shiksha চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? - dainik shiksha স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার - dainik shiksha কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032920837402344