বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তচিন্তার বিকাশ কেন্দ্র। মুক্ত প্রাণের জায়গা। এটা শুধু পুঁথিগত বিদ্যা শেখার জায়গা নয়। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রতিটি জায়গা থেকে শিক্ষালাভ করা যায়।
এর প্রতিটি অঙ্গনে ছড়িয়ে রয়েছে শিক্ষার উপকরণ তথা বিভিন্ন অঞ্চলের বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, খেলাধুলা, গুণীজনের সঙ্গে সাক্ষাত্, বিভিন্ন এলাকার ও দেশের হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে চলাফেরা সবকিছু একজন শিক্ষার্থীকে করে তোলে জ্ঞানী। বাস্তব জীবনে ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ হতে সাহায্য করে।
এখান থেকে নিজেদের প্রতিভার বিকাশের মাধ্যমে ছড়িয়ে যায় নানা প্রান্তে। কেউ সাহিত্যিক-লেখক, কেউ নাট্যকার, সমাজসেবক, কেউ আবার গায়ক। আর এজন্যই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ওপর এক বিশেষ ভূমিকা ও প্রভাব রয়েছে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি)। কারণ ক্লাসের পরে টিএসসিতেই বসে আরেকটি জ্ঞানের মেলা। তাই তো আমরা দেখতে পাই যে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসি আছে, সে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে অধিকতর মধুর সম্পর্ক রয়েছে।
দেশে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় সংখ্যা প্রচুর। তার মধ্যে রয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, রয়েছে মেডিকেল কলেজ, প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কিছু ইনস্টিটিউট। মাত্র কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে উপযুক্ত ক্যাম্পাস । গুটিকয়েক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসি থাকলেও বেশিরভাগ পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই কোনো টিএসসি। অধিকাংশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই স্থায়ী ক্যাম্পাসও। নেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মুক্ত আলোচনার কোনো সুব্যবস্থা।
শিক্ষাক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের অবদান প্রসংশনীয়। প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনের ক্যাম্পাস নিশ্চিত করার জন্য সরকারের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টিএসসি প্রতিষ্ঠা করতে পারলে দেশ শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে পারবে বলে আশা করছি। তাই বাস্তবধর্মী ও মানসম্মত শিক্ষায় শিক্ষিত জাতি গড়তে শিক্ষাঙ্গনের নিশ্চয়তাসহ প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র স্থাপনের আহ্বান জানাই।
লেখক: মুহাম্মদ মূসা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।