শিক্ষকদের ক্ষোভ এবং ছাত্রলীগের প্রতিবাদের মুখে অভিষেক অনুষ্ঠান স্থগিত করেছে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষ। বুধবার (০৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টায় নবনির্বাচিত শিক্ষক পরিষদ ও শিক্ষক ক্লাবের অভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে।
গত সোমবার কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক জেসমিন আক্তার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে অনুষ্ঠানের কথা জানানো হয়েছিল শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকীর মাসে অভিষেক অনুষ্ঠানের নামে ‘আনন্দ আয়োজন’ নিয়ে ক্ষোভ ও সমালোচনার সৃষ্টি হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে। এক পর্যায়ে শিক্ষকদের মধ্যেও অনুষ্ঠানের পক্ষে অর্থাৎ অধ্যক্ষপন্থী এবং অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থাৎ অধ্যক্ষবিরোধী-এই দুটি বলয়ের সৃষ্টি হয়।
এই পরিস্থিতিতে বুধবার সকাল ১০টা থেকে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনের সামনে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। অভিষেক অনুষ্ঠান প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তারা মিছিলও করে। শিক্ষকদের একটি অংশও অনুষ্ঠান বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়। সার্বিক পরিস্থিতিতে অধ্যক্ষ জেসমিন আক্তার একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক ডেকে আয়োজন স্থগিত করেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
জানতে চাইলে অধ্যক্ষ জেসমিন আক্তার বলেন, একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক ডেকেছিলাম। সেখানে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে, যেহেতু আগস্ট মাস শোকের মাস। এই মাসে অভিষেক অনুষ্ঠান করা সমীচীন হবে না। আগামী মাসে আমরা এই অনুষ্ঠান করব। তবে নির্বাচিত শিক্ষক পরিষদ তাদের দায়িত্ব পালন করে যাবে।
গত ২৯ জুলাই চট্টগ্রাম কলেজে শিক্ষক পরিষদ ও শিক্ষক ক্লাবের নির্বাচন হয়। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অধ্যক্ষের কিছু সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি কলেজের জেষ্ঠ্য শিক্ষকরা। বিশেষত এবরাই প্রথম সংযুক্ত থাকা শিক্ষকদের প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে সংক্ষুব্ধ নিয়মিত শিক্ষকদের একাংশ। শোকের মাসে অভিষেক অনুষ্ঠান নিয়ে ক্ষোভ চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছে।
২৫ বছর ছাত্রশিবিরের দখলে থাকার পর ২০১৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম কলেজ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় ছাত্রলীগ। সেসময় থেকে কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা জেসমিন আক্তারের ভূমিকা নিয়ে মাঝে মাঝে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।
শোকের মাসে অভিষেক অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা যে কোনভাবে এই অনুষ্ঠান প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়।
চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের নেতা সুভাষ মল্লিক সবুজ বলেন, আমরা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে শিক্ষক পরিষদের অফিস, শিক্ষক মিলনায়তন এবং প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিই। আমাদের প্রতিবাদের মুখে অধ্যক্ষ ম্যাডাম অভিষেক অনুষ্ঠান স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছেন।