নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটি মার্চেন্ট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রকে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক তাকে দুটি থাপ্পড় দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
নির্যাতিত ওই ছাত্রের নাম ইউনুস আলী। সে উপজেলার ভোগডাবুরী ইউনিয়নের নিজ ভোগডাবুরী প্রামাণিকপাড়ার ইলিয়াস আলীর ছেলে।
ইউনুস আলী অভিযোগ করে বলে, ‘গত মঙ্গলবার বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা শেষে আমার অজান্তে মুখ থেকে শিস বের হয়। তখন ওই কক্ষে কর্তব্যরত শিক্ষিকা চন্দ্রা মেডাম প্রধান শিক্ষককে বলে দেন। প্রধান শিক্ষক আমার শার্টের কলার ধরে উপর্যুপরি চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন। আমি স্যারের পা ধরে মিনতি করি, স্যার, আমার ভুল হয়েছে, আর কখনো এমন ভুল করব না। স্যার তখন জুতা খুলে মারতে মারতে পাশের কক্ষে নিয়ে যান। সেখানেও ছাত্রছাত্রীদের সামনে মারডাং করেন আর বলেন, “তোর বাপ এখানে আছে জানিস না।” আরও অনেক অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন।’
বাবা ইলিয়াস আলী বলেন, ‘এটা কী ধরনের শাসন। আমি এর বিচার চাই।’
মা রিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘ছেলে অপরাধ করলে শিক্ষক শাসন করতেই পারেন। কিন্তু ওই শিশু বাচ্চাকে এমনভাবে মেরেছেন, ওর গাল-মুখ ফুলে গেছে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন, রাতে তার প্রচণ্ড জ্বর এসেছে। জ্বরে সে প্রলাপ বকছে। আমি প্রধান শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
ভোগডাবুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। একটি কোমলমতি শিশুকে এভাবে নির্যাতন করা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’
ডোমার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ওই শিক্ষক এর আগেও এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। ছাত্রছাত্রীদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে এমন প্রধান শিক্ষক কারও কাম্য নয়।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শিস দেওয়ার অপরাধে তাকে আমি দুটি থাপ্পড় দিয়েছি, আর বলেছি, এর পরে আবার শিস দিলে তোকে চাপ মাটি দিব।’ গালমন্দ করা ও জুতা দিয়ে পেটানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোমিনুল হক বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর আমি বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, প্রধান শিক্ষক তাকে কয়েকটা টালা থাপ্পড় দিয়েছেন। এ নিয়ে আমরা কমিটির সবাই মিলে বসে কী করা যায়, সিদ্ধান্ত নেব।’