নওগাঁর নিয়ামতপুরের একটি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মুঠোফোনে উত্ত্যক্ত করা ও যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ করেছে ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রী। তবে প্রধান শিক্ষক এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছেন। ওই ছাত্রীর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৫ ডিসেম্বর ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি। ওই ছাত্রীর অভিযোগ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন সময় মুঠোফোনে কারণে-অকারণে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। প্রায় সময়ই অশ্লীল ও আপত্তিকর কথা বলতেন।
বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ না থাকার সুযোগে পড়াশোনার খোঁজখবরের অজুহাতে বিভিন্নভাবে কুপ্রস্তাব দিতেন। এমনকি তাঁকে বিয়েরও প্রলোভন দেখান। পরে এ ব্যাপারে তার সহপাঠী ও বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকদের জানালে বিষয়টি জানাজানি হয়। ৪ ডিসেম্বর প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে তার সহপাঠী ও স্থানীয় লোকজন বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করে এবং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির বাড়ি ঘেরাও করে। পরে ওই শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করে। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই দিনই প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গতকাল বুধবার মুঠোফোনে বলেন, দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা আহ্বান করেন তিনি। সভায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওই ছাত্রীর অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ঘটনাটি আরও খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকে এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি।’এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওয়াজেদ আলী মৃধা জানান, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি বিষয়টি লিখিতভাবে তাঁকে জানিয়েছেন। তদন্তের ভিত্তিতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।