প্রধান শিক্ষিকাকে পদত্যাগে বাধ্য করলেন সভাপতি! - দৈনিকশিক্ষা

প্রধান শিক্ষিকাকে পদত্যাগে বাধ্য করলেন সভাপতি!

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি |

সীতাকুণ্ডের এম এ কাশেম রাজা উচ্চবিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষিকা এস এম তাসলিমাকে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। ৫ আগস্ট লাঞ্ছিত করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে পদত্যাগপত্র নেন সভাপতি এম এ কাশেম রাজা। এ সময় শিক্ষিকার মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে তাঁকে নয় ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

এ ঘটনায় ৯ আগস্ট সীতাকুণ্ড থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন প্রধান শিক্ষিকা তাসলিমা। এ ছাড়া চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষক সমিতিসহ বিভিন্ন দপ্তরে তাঁকে পদত্যাগে বাধ্য করার বিষয়টি অবহিত করে চিঠি দেন তিনি।

সীতাকুণ্ডের মাদামবিবির হাটের এই বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এম এ কাশেম রাজা। তিনি জাহাজভাঙা কারখানার ব্যবসা, সীতাকুণ্ড কুমিরা ঘাটের ইজারাসহ বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কয়েক বছর আগে কুমিরা ঘাটের যাত্রীদের জিম্মি করে ঘাট পরিচালনার অভিযোগে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় রাজার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

প্রধান শিক্ষিকা তাসলিমা লিখিত অভিযোগে বলেন, তিনি ১৭ বছর ধরে ওই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ৫ আগস্ট বিদ্যালয়ের সভা চলাকালে সভাপতি এম এ কাশেম রাজা তাঁকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। একপর্যায়ে সভাপতি তাঁর মুঠোফোন কেড়ে নেন। হাতব্যাগ কেড়ে নিয়ে তা তল্লাশি করেন। পরে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্র লিখিয়ে তাতে সই নেন।

জানা গেছে, গত বছরের ৯ অক্টোবর বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) ওই বিদ্যালয়ে মো. সাইফুল ইসলাম নামের একজন শরীরচর্চা শিক্ষক দিয়েছিল। কিন্তু তাঁকে যোগদান করতে দেননি সভাপতি। এ কারণে গত ১৬ জুলাই সভাপতিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় এনটিআরসিএ। এরপর থেকে প্রধান শিক্ষকের ওপর ক্ষিপ্ত হন রাজা।

সূত্র জানায়, ওই ঘটনার পরপর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সভাপতি পরিচালনা কমিটির সভা ডেকে বিভিন্ন দপ্তরে প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছায় পদত্যাগের বিষয়টি জানিয়ে দেন। গতকাল শনিবার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন বিষয়টি তদন্ত করতে বিদ্যালয়ে যান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন বলেন, শুনেছি ওই শিক্ষক স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। তবে পদত্যাগ করে তিনি আবার দ্বারে দ্বারে ঘুরবেন কেন, সেটাও প্রশ্ন।

প্রধান শিক্ষককে জোরপূর্বক পদত্যাগ করানোর বিষয়টি জানতে পেরে শিক্ষক সমিতির নেতারা বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. হাবিব উল্লাহ বলেন, ওই শিক্ষককে ভয়ভীতি দেখিয়ে মানসিক চাপ সৃষ্টি করে পদত্যাগপত্র লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু সভাপতির ভয়ে এখন কোনো শিক্ষক মুখ খুলছেন না।

৮ আগস্ট এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন করেন পদচ্যুত প্রধান শিক্ষিকা। জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক কাজী নাজিমুল ইসলাম বলেন, ‘এ-সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। এখন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এম এ কাশেম বলেন, ‘ওই মহিলা এখানে অনেক অনিয়ম করেছেন। ওই দিন (৫ আগস্ট) সভা চলাকালে তিনি মোবাইলে কথা রেকর্ড করছিলেন। তখন আমি মুঠোফোন কেড়ে রেখে দিয়েছি। এরপর তাঁর স্বামী এসে আমাকে গালিগালাজ করে। আমি পরে পুলিশ ডাকি। একপর্যায়ে তাসলিমা স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্র লিখে চলে যায়।’

জানতে চাইলে তাসলিমা বলেন, তাঁর স্বামী ঘরের চাবি নিতে স্কুলে যান। তখন সভাপতি তাঁর স্বামীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। একপর্যায়ে তাঁকে লাঞ্ছিত করেন। এমনকি তাঁর পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকি দেন সভাপতি।

এ ব্যাপারে কাশেম রাজাও পাল্টা একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন সীতাকুণ্ড থানায়

ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034840106964111