প্রশ্নবিদ্ধ শিক্ষা মন্ত্রণালয় : জনকন্ঠ সম্পাদকীয় - দৈনিকশিক্ষা

প্রশ্নবিদ্ধ শিক্ষা মন্ত্রণালয় : জনকন্ঠ সম্পাদকীয়

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

প্রায় প্রতিবছর দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনায় চরম বেকায়দায় পড়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রশাসন। চলতি এসএসসি পরীক্ষার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। গত রবিবার চলমান মাধ্যমিকের গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে আগের রাতেই প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। গণমাধ্যমে অবশ্য খবর ছিল, পরীক্ষার শুরু থেকেই নিয়মিত প্রশ্ন ফাঁস হয়ে যাচ্ছিল। তবে স্বভাবতই গণিতের চাহিদা বেশি থাকায় এটি উঠে আসে সরব আলোচনায়। অবশ্য প্রতিবারের মতো এবারও পরীক্ষার সঙ্গে জড়িত প্রশাসনিক কর্মকর্তারা প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উড়িয়ে দেন।

পরে যথাযোগ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা হলে আমতা আমতা করা শুরু করেন। পরে সাহায্য-সহযোগিতা চাওয়া হয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের। প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাতারাতি অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় ছয়জনকে। হাজির করা হয় ডিএমপির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে। বলা হয়, এই চক্রটি মেসেঞ্জারে প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। প্রতিটি প্রশ্ন তারা শিক্ষার্থী তথা অভিভাবকদের কাছে বিক্রি করেছে পাঁচ হাজার টাকায়। ধৃতদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে ল্যাপটপ, সিপিইউ, রাউটার, কম্পিউটার, মোবাইল, সিমকার্ড ও আনুষঙ্গিক। এতে বেশ বোঝা যায় যে, প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত চক্রটি সর্বদাই প্রশ্ন ফাঁস, বেচাকেনা এবং সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে সর্বাধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে থাকে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বলা হচ্ছে, বার বার প্রশ্নপত্র ফাঁসের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসন প্রধানত দায়ী। তবে যে বা যারা প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মুদ্রণ ও বিতরণের সঙ্গে জড়িত, তারাও এর দায় এড়াতে পারেন না কোন অবস্থাতেই।

প্রশ্ন ফাঁসের নাটকীয়তার সমাপ্তি এখানেই শেষ হয়নি। বরং তা আরও সম্প্রসারিত ও খোলা হয়েছে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে। গণমাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁসের খবর প্রকাশ হলে মন্ত্রী বলেন, তদন্তে যদি দেখা যায় যে, প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে, তাহলে ওই পরীক্ষা বাতিল করা হবে। এতে স্বভাবতই লাখ লাখ শিক্ষার্থী তথা অভিভাবকের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। প্রতিটি পরীক্ষাই শিক্ষার্থীদের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ এবং সেজন্য নিয়মিত বিপুল অর্থ ব্যয়ে কোচিংসহ ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে হয়। সে অবস্থায় অনুষ্ঠিত পরীক্ষা আবার নতুন করে নেয়া হলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ওপর কি প্রবল চাপ পড়ে, তা সহজেই অনুমেয়। অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং স্কুলগুলোর ওপরও পড়ে বাড়তি ব্যয়ের বোঝা। এও সত্য যে, প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত গুটিকতক দুষ্টচক্রের জন্য গোটা শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সমাজকে দায়ী করা চলে না কিছুতেই।

সে ক্ষেত্রে উদোর পি-ি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে লাভ নেই। যা হোক, কিয়ৎপরেই মন্ত্রী বললেন, কখন প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে, কতটুকু ফাঁস হয়েছে এবং সেটা পরীক্ষার্থীদের ওপর কতটুকু প্রভাব ফেলেছে, সেসব বিবেচনায় নিয়েই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে পরীক্ষা বাতিলের। অর্থাৎ, প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে শুরু হবে সরকার তথা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত তথা গবেষণা! অথচ প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনাটি ঘটছে প্রতিনিয়ত, প্রতিবছর। এটি প্রতিরোধে শিক্ষা প্রশাসন কি কি ব্যবস্থা নেবে, তা তাদের গবেষণার বিষয়। তবে মোটা দাগে বলা যায়, যেসব শিক্ষক প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, প্রুফ দেখা, মুদ্রণ তথা বিতরণের সঙ্গে জড়িত, তাদেরই একটা অংশ এর সঙ্গে জড়িত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে। বিপুল অর্থ ও বিত্তের প্রলোভনে শিক্ষা ব্যবস্থায়ও অনিবার্য ঢুকে গেছে দুর্নীতির দুষ্টচক্র। আদর্শ শিক্ষক বুঝি এখন কেবল স্বপ্নকল্পনা। বরং ঠগ বাছলে দেখা যাবে গাঁ উজাড় হওয়ার উপক্রম! তদুপরি পরীক্ষার হলে দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের মোবাইলসহ প্রযুক্তির ব্যবহার সীমিত করতে হবে।

 

সূত্র: জনকণ্ঠ

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0083150863647461