অব্যাহত প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন দেশের বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট লেখক-বুদ্ধিজীবী-সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব ও নাগরিক।
আজ বৃহস্পতিবার ‘শিক্ষা ও শিশু রক্ষা আন্দোলন’ নামে এক সংগঠন গণমাধ্যমে এ বিবৃতি পাঠিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে বলে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও প্রচারমাধ্যম থেকে তাঁরা জানতে পারছেন। চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষাতেও বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে বলে পত্রপত্রিকায় এসেছে। এগুলোর বিষয়ে তদন্ত করে কী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলো, তা জানা যায়নি।
তাঁরা সরকারের শিক্ষা-কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন, এগুলোর সঠিকভাবে তদন্ত করা হোক। প্রশ্ন ফাঁস প্রমাণিত হলে পরীক্ষাগুলো পুনরায় গ্রহণ করা হোক। একই সঙ্গে প্রশ্ন ফাঁসের মতো অসৎ প্রক্রিয়ার সঙ্গে উচ্চ থেকে নিম্নস্তর পর্যন্ত, যারাই জড়িত থাকুক, তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। তা না হলে এটা শিক্ষাঙ্গনে ভয়াবহ দুর্যোগ ডেকে আনবে। জাতির এই ক্ষতি কখনো কাটিয়ে ওঠা যাবে না।
প্রশ্ন ফাঁসের প্রসঙ্গ ছাড়াও বিবৃতিদাতারা আরও বলেন, ‘পাশাপাশি পরীক্ষা, কক্ষ পরিদর্শনে শিথিলতা ও উত্তরপত্রের অতি শিথিল মূল্যায়নের বিষয়েও বেশ কয়েক বছর ধরে কথা হচ্ছে। আমরা অবশ্যই চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা কৃতকার্য হোক। কিন্তু পরীক্ষা গ্রহণে বা উত্তরপত্র মূল্যায়নে শিথিলতা দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের কৃতকার্য করা হলে সেই ফল তাদের জীবনে সত্যিকারের কোনো সাফল্য আনতে পারবে না।’
বিশিষ্ট এই ব্যক্তিরা বলেন, ‘শুধু বস্তুগত সম্পদে নয়, একই সঙ্গে শিক্ষা-দীক্ষায়, শিল্প-সাহিত্যে ও জ্ঞান-বিজ্ঞানে সম্পদশালী একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। আমাদের সেই স্বপ্ন সরকারের স্বপ্ন থেকে পৃথক নয় বলেই মনে করি। সে বিবেচনা থেকেই আমাদের প্রত্যাশা সরকার এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং তার স্বপ্ন, সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার দিকে এগিয়ে যাবে।’
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, অধ্যাপক হাশেম খান, সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, অধ্যাপক আবুল বারকাত, অধ্যাপক এম এম আকাশ, সংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, চলচ্চিত্রকার মোরশেদুল ইসলাম ও ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। এ ছাড়া বিদেশে অবস্থানের কারণে ই–মেইলের মাধ্যমে এ বিষয়ে সম্মতি প্রদান করেছেন সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ। আর স্বাস্থ্যগত কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অধ্যাপক আনিসুজ্জামানও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।