প্রস্তুতি নেই, পাঠ্যবই ছেপেই বলা হলো বাধ্যতামূলক - দৈনিকশিক্ষা

প্রস্তুতি নেই, পাঠ্যবই ছেপেই বলা হলো বাধ্যতামূলক

নিজস্ব প্রতিবেদক |

শিক্ষানীতির আলোকে আধুনিক প্রযুক্তিতে দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হলেও এ বিষয়টি নিয়ে চলছে চরম দুর্গতি। কোনোরকম প্রস্তুতি না নিয়েই পাঠ্যবই ছেপেই এ বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এক কোটিরও বেশি শিক্ষার্থীকে।

২০১১ সাল থেকে এ বিষয়টি পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। সরকারি হাইস্কুল, সরকারি কলেজ এবং মাদ্রাসা সব ক্ষেত্রেই একই অবস্থা। আবার ২০১১ সালের নভেম্বরে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন শ্রেণি ও শাখার শিক্ষক নিয়োগ বন্ধে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এরপর বন্ধ হয়ে আছে বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় আইসিটির শিক্ষক নিয়োগ ও এমপিওভুক্তি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষক নিয়োগ ও পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ না দিয়েই এভাবে নতুন বিষয় চালু করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষার্থীদের বিপাকে ফেলছে। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হচ্ছে, কিন্তু কিছুই শিখছে না। একইভাবে সৃজনশীল পদ্ধতি চালু নিয়েও একই অবস্থা তৈরি করে মন্ত্রণালয়। শিক্ষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ না দিয়েই শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতি, ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বাধ্যতামূলক এই ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি’ পাঠ্যবইয়ের অন্যতম লেখক মোস্তফা জব্বারও শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজনীয়তাসহ একাধিক বিষয় তুলে ধরেছেন। কিন্তু মন্ত্রণালয় এ বিষয়ের কোনো পরামর্শই আমলে নেয়নি।

জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এর আলোকে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে, ২০১৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে সপ্তম শ্রেণিতে ও ২০১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে, ২০১৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে নবম শ্রেণিতে ও ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নামক নতুন বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত ও বাধ্যতামূলকভাবে পাঠ্য করা হয়েছে। মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান তিন বিভাগেই বিষয়টি বাধ্যতামূলক। মনে হচ্ছে, বাধ্যতামূলক করেই যেন সরকার তার দায়িত্ব শেষ করেছে। কিছু শিক্ষককে শুধু প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে, কিন্তু শিক্ষক নিয়োগ হয়নি।

দেশে প্রায় তিনশ সরকারি কলেজ রয়েছে। এসব কলেজে একজনও আইসিটির শিক্ষক নেই। অন্য বিষয়ের শিক্ষকদের সংক্ষিপ্ত একটি প্রশিক্ষণ দিয়েই ‘আইসিটি’ বিষয়ে পড়ানোর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের অবস্থাও একই। প্রায় সাড়ে তিনশ স্কুলে আইসিটির শিক্ষক নেই। বাধ্যতামূলক করার ৫ বছরে শিক্ষক নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হয়েছে মন্ত্রণালয়।

এছাড়া দেশের এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল রয়েছে ১৬ হাজার ৯টি। এর মধ্যে সাড়ে ৮ হাজার স্কুলে এমপিওভুক্ত আইসিটির শিক্ষক নেই। মাদ্রাসা ৬ হাজার ৪৭১টি। এর মধ্যে শিক্ষক নেই ৫ হাজার মাদ্রাসায়। আর বেসরকারি অর্ধেকের বেশি কলেজে আইসিটির শিক্ষক নেই। এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক এলিয়াছ হোসেন বলেন, এসব পদ সৃষ্টির জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সাধারণ সম্পাদক আই কে সেলিম উল্লাহ খন্দকার বলেন, আইসিটির বিষয়ে শিক্ষক না থাকায় অন্য বিষয়ের শিক্ষক পড়ান। শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন বলেন, কলেজে আইসিটির শিক্ষক না থাকলেও ততটা সমস্যা হচ্ছে না। পদার্থ বিদ্যা বিষয়ে যারা পড়ান তারা এ বিষয়টি পড়াতে পারছেন। এছাড়া শিক্ষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তবে মাধ্যমিকে সমস্যা হচ্ছে। সরকারি স্কুলে এ পদে নিয়োগ দিতে হলে নিয়োগবিধি পরিবর্তন করতে হবে বলে তিনি জানান। ৩৬তম বিসিএসে আইসিটির শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন দিতে পিএসসিকে বলা হয়েছিল। পিএসসি জানিয়েছে পদ সৃষ্টি ছাড়া এভাবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া যাবে না।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আইসিটি শিক্ষকের এমপিওভুক্তি বন্ধ

২০১১ সালের ১২ নভেম্বর স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার অতিরিক্ত শ্রেণি শাখা/বিভাগ খোলার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের এমপিও বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। সেখানে বলা হয়, এভাবে কোনো শিক্ষক নিয়োগ দিলে তার বেতন-ভাতা সরকার বহন করবে না। এরপর থেকেই আইসিটির শিক্ষকের এমপিও বন্ধ রয়েছে। সরকারি বেতন-ভাতা না থাকায় এ পদে যোগ্য শিক্ষক পায়নি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035579204559326