কুষ্টিয়া সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামে ‘প্রেমের জেরে’ শুভ মণ্ডল (১৩) নামের এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
এ ঘটনায় শুভর দাদা আবুল হোসেন মণ্ডল বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। তবে প্রেমের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেছে মেয়ের পরিবার। ঘটনাস্থল পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম পরিদর্শন করেছেন।
শুভ লক্ষ্মীপুর গ্রামের আরমান মণ্ডলের ছেলে। সে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
জানতে চাইলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রেমের সম্পর্কের জেরে কিশোরকে হত্যা করা হয়েছে বলে থানায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে শুভ মণ্ডলের সঙ্গে এক কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ব্যাপারটি মেয়ের পরিবার জানতে পারলে কয়েক দফায় শুভ ও তার পরিবারকে শাসানো হয়। এরই জেরে কিশোরীর বাবাসহ তার পরিবারের লোকজন ২ আগস্ট শুভকে নির্যাতন করেন। পরে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের হস্তক্ষেপে শুভকে উদ্ধার করে তার পরিবার।
শুভর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, আজ সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে লক্ষ্মীপুর বাজারে বাবার দোকান থেকে বাড়ি ফিরছিল শুভ। এ সময় কিশোরীর বাবা ও তিন চাচা লাঠি দিয়ে শুভকে পিটিয়ে জখম করে রাস্তায় ফেলে রাখে। পরে স্থানীয় লোকজন শুভকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
শুভর চাচা রেজোয়ান মণ্ডল অভিযোগ করেন, প্রেমের কারণে শুভকে নির্যাতন করা হয়েছিল। ওই কিশোরীর বাবা ও চাচারা শুভকে পিটিয়ে হত্যা করেন।
শুভর দাদা আবুল হোসেন জানান, ‘আমার নাতিকে ওরা পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।’
শুভর বাবা আরমান মণ্ডল জানান, ‘দোকান থেকে সকালে বাড়ি ফিরছিল শুভ। ওরা রাস্তায় আমার ছেলেকে আটকিয়ে পিটিয়েছে। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় সে।’
এদিকে ঘটনার পর থেকে ওই কিশোরীর বাবা ও চাচারা পলাতক। তবে ওই কিশোরী ও তার মা হত্যা ও প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করেছে। ওই কিশোরী সাংবাদিকদের জানায়, ‘ওই ছেলেকে আমি চিনি না। ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক থাকার প্রশ্নই আসে না।’
আবদালপুর ইউনিয়ন পরিষদের লক্ষ্মীপুর গ্রামের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, ‘এর আগে ছেলেটিকে বেঁধে নির্যাতন করেছিল ওই কিশোরীর বাবা ও চাচারা। আমার হস্তক্ষেপে বিষয়টি মীমাংসা হয়েছিল। সেটা ছিল প্রেমঘটিত ব্যাপার।’