সময়মতো স্কুলের ফি জমা দিতে না পারায় ১৯ জন ছাত্রছাত্রীকে স্কুলের একটি কক্ষে আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই শিক্ষার্থীদের গতকাল শনিবার থেকে শুরু হওয়া বার্ষিক পরীক্ষায়ও অংশ নিতে দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতে হায়দরাবাদের হায়াতনগর সারিথা বিদ্যা নিকেতনে।
আজ রোববার টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্কুলের কক্ষে আটক করে রাখা ওই ১৯ শিক্ষার্থীরা ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সী। এ ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্টে মামলা করেছে পুলিশ। তদন্ত শুরু হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, স্কুলের এক শিক্ষার্থীর মা-বাবা বিষয়টি প্রথমে পুলিশকে জানায়। পরে তা অধিকারকর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে জানাজানি হওয়ায় বিষয়টি সামনে চলে আসে এবং পুলিশ মামলা করে।
আটকে রাখা এক শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, ‘স্কুলের ফি জমা দিতে আসা অন্য এক অভিভাবকের ফোন নিয়ে আমার মেয়ে আটকে রাখার বিষয়টি তার মাকে জানায়। সে জানায়, তাদেরকে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়েছে এবং পরীক্ষা দিতেও দেওয়া হচ্ছে না। এ সময় আমি ফোনটি স্কুলের অধ্যক্ষ বা কোনো কর্মকর্তাকে দিতে বলি। কিন্তু তাঁরা ফোনে কথা বলতে চাননি। এরপর দ্রুত স্কুলে গিয়ে দেখি, ওই ১৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুকেও আটকে রাখা হয়েছে।’
ওই শিক্ষার্থীর বাবা আরও বলেন, ‘আমাদের মেয়ের স্কুল ফি বাকি আছে। কিন্তু আমার স্ত্রী অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে তা এপ্রিলের মধ্যে পরিশোধ করার কথা জানিয়েছেন এবং মেয়েকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিতে অনুরোধ করেছিলেন। অভিভাবকদের ডেকে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিষয়টি জানানো উচিত ছিল। শিশুদের কেউ এভাবে শাস্তি দিতে পারে না।’
অভিভাবকেরা অভিযোগ করেছেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে শিশুদের আটকে রেখে অপমান করেছে।
হায়াতনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক জে নরেন্দর গৌড় বলেন, ‘শিশুদের সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষ খুবই জঘন্য আচরণ করেছে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেছি, ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়েছে। পরে পুলিশ তাদের সেখান থেকে বের করে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। শিশুদের সঙ্গে কেন এমন আচরণ করা হলো, জানতে চাইলে স্কুল কর্তৃপক্ষ বলেছে, স্কুল ফি দিতে অভিভাবকেরা দেরি করার কারণেই এমন করা হয়েছে।’
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিশু অধিকারকর্মীরা।
শিশু অধিকারকর্মী অচ্যুত রাও বলেন, ‘স্কুল কর্তৃপক্ষের এ আচরণ শিশু অধিকারের চরম লঙ্ঘন। আমরা এ ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’