প্রতিষ্ঠার দশ বছরেও সমৃদ্ধ হয়নি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরী এ্যান্ড ইনফরমেশন সেন্টার। পর্যাপ্ত বইয়ের অভাবে যেমন গ্রন্থাগার বিমুখ হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা, তেমনি প্রয়োজনীয় তথ্য ও জ্ঞানার্জনের দিক থেকেও পিছিয়ে পড়ছেন।
লাইব্রেরি ঘুরে দেখা গেছে, দ্বিতীয় তলায় বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি, শিক্ষক-কর্মকর্তা-গবেষকদের জন্য একটি এবং অন্যান্য অনুষদের শিক্ষার্থীদের জন্যে একটি করে কক্ষ থাকলেও প্রয়োজনীয় বই নেই। রিডিং রুমে বইয়ের সেলফ আছে, কিন্তু সেলফগুলোতে পর্যাপ্ত বই নেই। অধিকাংশ সেলফই ফাঁকা।
এ ব্যাপারে সেন্ট্রাল লাইব্রেরী এ্যান্ড ইনফরমেশন সেন্টারের উপ-পরিচালক আব্দুস সামাদ প্রধান বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ডিডিসি স্কিম অনুসারে গ্রন্থাগারের পুস্তকগুলো সজ্জিত আছে। ফলে এক বিভাগের বই অন্য বিভাগের সেলফে রাখার সুযোগ নেই। আর প্রত্যেকটি বইয়ের মোট পরিমাণের ৬০ শতাংশই স্টোর রুমে ইস্যু রিটার্নের জন্য সংরক্ষিত থাকে। বাকি ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নের জন্য রাখা হয়। এ কারণে বইয়ের সেলফগুলো ফাঁকা দেখায়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গ্রন্থাগারে পর্যাপ্ত বই নেই। অথচ নিজেদের বই নিয়েও সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। গ্রন্থাগারে যে সীমিত বই রয়েছে, তাতে সব সময় সবার চাহিদা মেটে না। পর্যাপ্ত পরিমাণ বই না থাকায় এবং প্রয়োজন মতো বই ভেতরে আনতে না দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরিতে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
গ্রন্থাগার সূত্রে জানা যায়, প্রায় ছয় হাজার বই এখানে থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ টি বিভাগের মধ্যে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, লোকপ্রশাসন, ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানসহ মোট ৬টি বিভাগের কোন বই এখনো লাইব্রেরিতে নেই। ফলে ওই ছয়টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা গ্রন্থাগারে যাওয়ার প্রয়োজনই বোধ করছেন না। তাদের একমাত্র ভরসা এখন জার্নাল রুম। যেসব বিভাগের বই সেখানে আছে, তাও পর্যাপ্ত পরিমাণ নয়।
ছয়টি বিভাগের কোন বই না থাকার কারণ জানতে চাইলে আব্দুস সামাদ বলেন, ২০১৩ সালে লাইব্রেরিতে বই ক্রয়ের জন্য পঞ্চাশ লক্ষ টাকার একটি টেন্ডার নোটিশ করা হয়। কিন্তু ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে চালুকৃত ৬টি বিভাগ সেই টেন্ডারটি ধরতে পারেনি। এবছর ২৭ লাখ টাকার একটি টেন্ডার অনুমোদনের জন্য উপাচার্য বরাবর পাঠানো হয়েছে। সেখানে ওই ছয়টি বিভাগকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।