বই উৎসবকে কেন্দ্র করে নতুন বছর শুরুর দুই-তিন মাস আগে থেকেই প্রত্যেক মাধ্যমিক স্কুলে পৌঁছে যাচ্ছে নতুন পাঠ্যপুস্তক। অন্যান্য বছর বই উৎসবের পরেও শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন পাঠ্যপুস্তক পাওয়া-না পাওয়ার শঙ্কা থাকলেও, এবছর ইতিমধ্যে ৬০ থেকে ৮০ ভাগ নতুন বই স্কুলে পৌঁছে গেছে। বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, এবছর মহানগরীর ৫টি সহ চট্টগ্রাম জেলার ২০ শিক্ষা থানার দেড় হাজারোধিক স্কুলের ১ কোটি ৪৯ লাখ ৪৫ হাজার ৮৭৯টি পাঠ্যপুস্তকের চাহিদাপত্র পাঠিয়েছিল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। এর প্রেক্ষিতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃপক্ষ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে স্কুলে স্কুলে এসব পাঠ্যপুস্তক পৌঁছে দিচ্ছে।
ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসমত জাহান জানান, ‘ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ১ হাজার ৭০০ শিক্ষার্থীর জন্য থানা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী ইতিমধ্যে ৬০ ভাগ বই স্কুলে এসেছে। প্রতিবারের ন্যায় বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে বই উৎসব উদযাপনে এবার বছর শুরুর আগেই স্কুলে স্কুলে বই পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’
বছর শুরু হওয়ার ৩ মাস আগে থেকেই স্কুলে স্কুলে পাঠ্যপুস্তক পাঠানোর বিষয়টি অত্যন্ত ইতিবাচক জানিয়ে কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুকুমার দেবনাথ বলেন, ‘বছরের প্রথমদিন বই উৎসবকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ২৮ হাজারোধিক চাহিদার মধ্যে আমরা ৮০ ভাগ পাঠ্যপুস্তক পেয়েছি। সেপ্টেম্বর মাস থেকে থানা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে স্কুলে পাঠ্যপুস্তক পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এবারের বই উৎসব নতুন বইয়ের ঘ্রাণে প্রাণবন্ত হবে বলেও আশাবাদী এই শিক্ষক।
সীতাকুণ্ড থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন জানান, গতবছর বই উৎসবের আগের সপ্তাহে পাঠ্যপুস্তক পেয়েছিলাম। ওইসময় স্কুলে স্কুলে এসব পাঠ্যপুস্তক পৌঁছাতে হিমশিম খেতে হয়েছিল। এমনকি বই উৎসবের পরেও শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যপুস্তক পৌঁছাতে হয়েছিল। আর এবার বছর শেষ হওয়ার
২ মাস আগেই পাঠ্যপুস্তক উপজেলায় পৌঁছেছে। এবার উপজেলার ৬ লাখ ৩০ হাজারোধিক পাঠ্যপুস্তকের চাহিদার মধ্যে আমরা ইতিমধ্যে ৯০ ভাগ পাঠ্যপুস্তক পেয়েছি। এরমধ্যে ৮০ ভাগ পাঠ্যপুস্তক স্কুলে স্কুলে পাঠানো হয়েছে। আশা করি আগামী সপ্তাহের মধ্যে বাকি পাঠ্যপুস্তক পেয়ে যাব।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে আরা জানান, বই উৎসবকে সামনে রেখে এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ এবার আগেভাগেই নতুন পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের কাজ শুরু করে। টেন্ডারের মাধ্যমে বিষয়ভিত্তিক কিছু প্রকাশনা সংস্থাকে নতুন পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের দায়িত্ব দিয়েছে এনসিটিবি। এরপ্রেক্ষিতে প্রকাশনা সংস্থাগুলো থানা ভিত্তিক মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে স্কুলে স্কুলে নতুন এসব পাঠ্যপুস্তক পাঠিয়ে দিচ্ছে।
এবারের মাধ্যমিক স্কুল, মাদ্রাসা, কারিগরি, বাংলা ও ইংলিশ ভার্সনে চট্টগ্রাম জেলার দেড় হাজারোধিক স্কুলের ১ কোটি ৪৯ লাখ ৪৫ হাজার ৮৭৯টি পাঠ্যপুস্তকের চাহিদাপত্র এনসিটিবিতে পাঠিয়েছি। এর প্রেক্ষিতে থানাভিত্তিক ৭০ থেকে ৮০ ভাগ পাঠ্যপুস্তক ইতিমধ্যে স্কুলে পৌঁছেছে বলেও জানান তিনি।