বরিশাল ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের মেয়াদোত্তীর্ণ ছাত্র কর্মপরিষদ (বাকসু) বাতিল হবে কি হবে না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। একই সঙ্গে অনুমতি ছাড়া ক্যাম্পাসে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজের প্রশাসনিক ভবনে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। কলেজ শাখা ছাত্রলীগ নেতা ও বাকসুর ক্রীড়া সম্পাদক ফয়সাল আহম্মেদ ওরফে মুন্নাকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির আশঙ্কায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ স ম ইমানুল হাকিম। সভায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক শাহ সাজেদাকে আহ্বায়ক করে করা তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক এ এস কাইউম উদ্দিন আহম্মেদ, ফিন্যান্স বিভাগের প্রধান এস এম আলাউদ্দিন, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ইউসুফ আলী ও ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক বিল্লাল হোসেন। তাঁদের পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান কাইউম উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ছাত্রলীগের এক নেতাকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় কলেজে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে একাডেমিক কাউন্সিলের সভা বসে। সেখানে একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করেন, মেয়াদোত্তীর্ণ ছাত্র কর্মপরিষদের দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কলেজের পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠছে। ছাত্র সংসদের আদলে গঠিত অস্থায়ী ছাত্র কর্মপরিষদের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। তাই মেয়াদোত্তীর্ণ ছাত্র কর্মপরিষদ কার্যকর রাখা ঠিক হবে না। এ অবস্থায় ছাত্র কর্মপরিষদ অকার্যকর বা বাতিল হবে কি না, সেটা যাচাই-বাছাই করার জন্য কমিটি করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া ক্যাম্পাসে অনুমতি ছাড়া মিছিল বা সমাবেশ নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি ক্যাম্পাসে স্থায়ী পুলিশচৌকি স্থাপনেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
একাডেমিক কাউন্সিলে উপস্থিত একাধিক শিক্ষক জানান, অকার্যকর ছাত্র কর্মপরিষদ কলেজ নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা কলেজের স্বাভাবিক কাজেও খবরদারি করার চেষ্টা চালায়। পরিষদের সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুই পক্ষে বিভক্ত হওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে আধিপত্য বিস্তারের মহড়া। যার সূত্র ধরে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেই চলেছে।
কলেজ সূত্র জানায়, তিন মাসের জন্য করা ছাত্র কর্মপরিষদ পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। এই কমিটি বাতিল হলে কলেজের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে সবার প্রত্যাশা।
গত মঙ্গলবার রাতে ছাত্র কর্মপরিষদের ক্রীড়া সম্পাদক ফয়সাল আহম্মেদকে কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষ। এ ঘটনার প্রতিবাদে পরের দিন কলেজে বিক্ষোভ করে ছাত্রলীগের একাংশ। পুলিশ লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।