মাধবপুর উপজেলার শাহজালাল কলেজের বাতিলকৃত নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পেতে দৌঁড়ঝাঁপে প্রার্থীরা। কাড়ি কাড়ি টাকার খেলা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কলেজ সুত্রে জানা যায়, এইচএসসি (বিএম) এর ৩টি পদে গত ২২ জুন ২০১৫ এবং ডিগ্রী (পাস) কোর্সের শিক্ষক কর্মচারী মিলে আরও ১১ টি পদে নিয়োগের জন্য ২৬ অক্টোবর জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
অধিকতর যোগ্য ও অভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগের লক্ষে্্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও বাস্তবে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র।
খণ্ডকালীন শিক্ষকরা তাদের নিয়োগ পাকাপোক্ত করতে প্রায় প্রত্যেক বিষয়েই পার্শ্ববতী চৌমুহনী খুর্শিদ হাই স্কুল এন্ড কলেজ, ধর্মঘর কলেজ সহ আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নিজেদের বন্ধুবান্ধব ও পরিচিতজনদের ডামি প্রার্থী বানিয়ে নামেমাত্র সাজানো নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সবাই।
এদিকে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের উপ-পরিদর্শক আবুল হোসেন ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (ভোকেশনাল) ফেরদৌস আলম স্বাক্ষরিত এইচএসসি (বিএম) এর জন্য গঠিত বাছাই কমিটিতে তাদের সদস্য মনোনয়ন সংক্রান্ত চিঠিতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ৬ মাস অর্থাৎ ২১-১২-২০১৫ ইং এর মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ রয়েছে।
সে হিসেবে উল্লেখিত তারিখ পেরিয়ে যাওয়ায় এ নিয়োগ প্রক্রিয়া কার্যকারিতা হারিয়েছে বলে জানান আরেকটি কলেজের অধ্যক্ষ।
এছাড়া গত ২২ অক্টোবর ২০১৫ তারিখ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের তৎকালীন সচিব নজরুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত সর্বশেষ প্রজ্ঞাপনে ২২ অক্টোবরের পর পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করলে তা অবৈধ ও এমপিওভুক্তি হবে না মর্মে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। অথচ ডিগ্রী (পাস) কোর্সের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশিত হয় ২৬ অক্টোবর।
এসব অনিয়ম পরিচালনা কমিটির নজরে আসলে গত ২৫ ডিসেম্বর কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য এড. মাহবুব আলীর সভাপতিত্বে পরিচালনা কমিটির সভা অনুষ্টিত হয়।
ওই সভায় অনিয়ম, স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ও যোগ্য প্রার্থীর অভাবে কলেজের সকল নিয়োগ প্রক্রিয়া সর্ব সম্মতিক্রমে বাতিলের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
পরিচালনা কমটির সদস্য কামেশ রঞ্জন কর, আব্দুর রহমান, আবদুল খালেক, হাবিবুর রহমান, আতাউর রহমানসহ আরও কয়েকজন নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
যা অতীতে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু তারপরও কলেজের অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রেজুলেশন করে সবার স্বাক্ষর নিয়ে তা কার্যকর না করে কালক্ষেপন শুরু করে।
বিশ্বস্তু সুত্রে প্রকাশ নিয়োগ প্রার্থীরা পরিচালনা কমিটির সদস্যদের মোটা অংকের অর্থের প্রলোভনও দেখাচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিচালনা কমিটির একাধিক সদস্য দৈনিকশিক্ষাডটমকে জানান, গত সভায় পরিচালনা কমিটির সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য দ্রুত রেজুলেশন করে সিদ্ধান্ত কার্যকরের নির্দেশ দেন অধ্যক্ষকে। কিন্তু অধ্যক্ষ সিদ্ধান্ত কার্যকরে অহেতুক কালক্ষেপন করছেন। ফলে প্রার্থীরা আমাদের কাছে আসার সুযোগ পাচ্ছে।
এদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে বিতকিত করতে কলেজের অধ্যক্ষের নেতৃত্বে বিএনপি জামাতপন্থি একদল শিক্ষক সিদ্ধান্ত কার্যকরে অহেতুক বিলম্ব করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদেরও।
এ ব্যাপারে অধ্যক্ষের ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন নেতারা।
কলেজ অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি গত সভার সিদ্ধান্ত নিয়ে লুকোচুরি করেন। কবে নাগাদ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে এই বিষয়ে বলতে তিনি অপরাগতা প্রকাশ করেন।
বর্তমানে নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য প্রার্থীরা বেশ পেরেশান হয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে।