রোগীদের সুবিধার্থে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) রিউমাটোলজি স্পেশালাইজড ক্লিনিক চালু হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি ব্লকের ১৭ তলায় ক্লাসরুমে রোগীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ ক্লিনিকের উদ্বোধন করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বহির্বিভাগ ভবন-১ এর ৪০৯ নম্বর কক্ষে রোগীরা বিশেষায়িত এ ক্লিনিকের সেবাটি নিতে পারবেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন রিউমাটোলজি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মিনহাজ রহিম চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোঃ আবদুর রহিম, রিউমাটোলজি মেডিসিন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক ও অধ্যাপক ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম। প্রধান বক্তা ছিলেন ডা. মোহাম্মদ জিয়াউল হায়দার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও নির্মোহভাবে রোগীদের স্বার্থে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের মেডিকেল শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করতে নিরলস প্রচেষ্টা চলছে। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রোগীরা যাতে কোনোরকম ভোগান্তির শিকার না হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকেই সতর্ক থাকতে হবে। দেশের সবচেয়ে অগ্রসরমান স্বাস্থ্যসেবা খাত দিন দিন আরো এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিপ্রিয় ও সুন্দরতম দেশ।
এ দেশ আজ অপার সম্ভাবনার জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। সর্বক্ষেত্রেই এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। চিকিৎসকবৃন্দকে আত্মমর্যদা যথাযথভাবে উপলব্ধি করার মাধ্যমে মহান পেশা চিকিৎসা শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবাকে আরো আরো এগিয়ে নিতে হবে।
রিউমাটোলজি স্পেশালাইজড ক্লিনিকের বিষয়ে রিউমাটোলজি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মিনহাজ রহিম চৌধুরী জানান, ১২০টি বড় ধরনের রোগসহ ৬ শতাধিক রোগ রিউমাটোলজির অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু সাধারণ মানুষ বা রোগীরা রিউমাটোলজি বলতে শুধু বাতজ্বরকেই জানেন।
আসলে বাতজ্বর হলো বাতরোগসমূহের একটিমাত্র রোগ। তিনি জানান, আজ স্পনডাইলোঅর্থাটিস, আরলি অর্থাটিস ও রিউমাটোরেট অর্থাটিস (আরএ) যে ক্লিনিকটি চালু হলো এর মাধ্যমে বাতরোগসমূহে আক্রান্ত রোগীদের রোগ প্রাথমিকভাবেই চিহ্নিত করা ও সঠিক চিকিৎসা প্রদান করা সহজ হবে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো তুলনামূলকভাবে তরুণ বয়সে বা কর্মক্ষম বয়সে এ রোগে পুরুষ ও মহিলারা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। পুরুষরা স্পনডাইলোঅর্থাটিস রোগে ১৮ থেকে ৪০ বছর এবং মহিলারা আরএ রোগে ২১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে বেশি আক্রান্ত হয়।
এ রোগের লক্ষণ হলো গিঁট ফুলে যাওয়া, কোমড় ও জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা। যা পরবর্তী সময়ে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রতঙ্গেও ছড়িয়ে পড়ে । রোগী এক সময় পঙ্গু হয়ে যায়। কিন্তু এ রোগ ও রোগের চিকিৎসার বিষয়ে দেশের বেশিরভাগ মানুষই জানে না। ফলে সঠিক চিকিৎসার অভাবে রোগীরা তাদের মূল্যবান কর্মক্ষম বয়সে সীমাহীন কষ্টে ভুগছে।
বিএসএমএমইউর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার এ কথা বলা হয়।