বিনামূল্যের বইয়ের সঠিক পরিসংখ্যান নেই উপজেলায় - দৈনিকশিক্ষা

বিনামূল্যের বইয়ের সঠিক পরিসংখ্যান নেই উপজেলায়

নিজস্ব প্রতিবেদক |

উপজেলা শিক্ষা অফিসে প্রতিবছরের বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তকের চাহিদা, প্রাপ্তি, বিতরণ ও উদ্বৃত্তের তথ্য যথাযথ সংরক্ষণ করা হচ্ছে না। শিক্ষার্থীর তুলনায় পাঠ্যপুস্তকের অতিরিক্ত চাহিদা ও উদ্বৃত্ত থাকা বিষয়ে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে এ মন্তব্য করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বেশ কয়েকটি উপজেলায় প্রতিবছর অতিরিক্ত চাহিদা দিয়ে বই নেওয়া হয়। অনেক উপজেলায় পাঠ্যপুস্তক উদ্বৃত্ত না থাকার বিষয়টিও সঠিক মনে করছে না অনুসন্ধান কমিটি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে উপজেলাভিত্তিক পাঠ্যপুস্তকের চাহিদা, প্রাপ্তি, বিদ্যালয়গুলোয় বিতরণ ও উদ্বৃত্তের পরিমাণ এবং উদ্বৃত্তের কারণ বিষয়ে একটি সমীক্ষা করতে ওই প্রতিবেদন তৈরি করে এনসিটিবির পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য জানান, কোম্পানীগঞ্জ, হাতিয়া, কবিরহাট, রামগঞ্জ, আখাউড়া, বাঞ্ছারামপুর, বি.বাড়িয়া সদর, শাহরাস্তি, কচুয়া, হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর সদর, বরুড়া, হোমনা, কুমিল্লা আদর্শ সদর, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, বোয়ালখালী, চন্দনাইশ, হাটহাজারী, মিরসরাই, রাউজান, সীতাকু-, চট্টগ্রাম মেট্রো, দীঘিনালা, মানিকছড়ি, রামগড়, রাজস্থালী, নানিয়ারচর, বরকল, চকরিয়া, কুতুবদিয়া, টেকনাফ, পেকুয়া, বায়েজিদ, কোতোয়ালিসহ বেশ কিছু থানার পাঠ্যপুস্তকের তথ্য পাওয়া যায়নি। এরা কোনো তথ্য এনসিটিবিকে সরবরাহ করেনি। ধরে নেওয়া হয়েছে, এসব তথ্য তাদের কাছে সংরক্ষিত নেই।

সূত্রমতে, অনেক উপজেলায় চাহিদার অতিরিক্ত বিনামূল্যে পাঠ্যবই নিয়েছে। সব বিদ্যালয়ে বিতরণের পরও হাজার হাজার বই অতিরিক্ত পড়ে রয়েছে উপজেলার গুদামঘরে। এতে সরকারের অর্থিক অপচয় হচ্ছে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, গত বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে এ বছর থেকে যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে জন্য থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করি, আগামীতে পাঠ্যপুস্তকের চাহিদা নিরূপণ, উৎপাদন, বিতরণের ব্যবস্থাপনা নির্ভুল হবে।

এনসিটিবির অনুসন্ধান প্রতিবেদন অনুযায়ী, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানায় ২০১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৪২ হাজার ৪১৮। তাদের জন্য বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তকের চাহিদা ছিল ৬ লাখ ১৯ হাজার। এনসিটিবি থেকে দেওয়া হয়েছে ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০০। থানাধীন বিদ্যালয়গুলোয় বিতরণ করা হয় ৫ লাখ ৫৬ হাজার ১৫০। উদ্বৃত্ত ছিল ৬২ হাজার ৮৫০ কপি। এ বছর নোয়াখালী সদর থানাধীন বিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষার্থী ছিল ৩৯ হাজার। তাদের বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তকের চাহিদা ৫ লাখ ২৮ হাজার ৫৯৩। চাহিদার সমপরিমাণ বই দেওয়া হয় এনসিটিবি থেকে। বিতরণ করা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ৫৪৩। উদ্বৃত্ত ৫ হাজার ৫০ কপি।

লক্ষ্মীপুর সদর থানাধীন বিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৪০। তাদের বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তকের চাহিদা ছিল ৬৪ লাখ ৬ হাজার ৩৪৫ কপি; বিতরণ করা হয় ৬ লাখ ৪৫ হাজার ৩৯৪ এবং উদ্বৃত্ত ছিল ৯৫১ কপি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাছিরনগর থানাধীন বিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষার্থী ছিল ১৮ হাজার ২৭৮ জন। তাদের বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তকের চাহিদা ছিল ২৬ লাখ ৫ হাজার ৫২৬। চাহিদার সমপরিমাণ বই দেওয়া হয়েছে এনসিটিবি থেকে। বিতরণ করা হয় ২ লাখ ৫৮ হাজার ৩৬ কপি। উদ্বৃত্ত ছিল ৭ হাজার ৪৯০ কপি। এই জেলার কসবা উপজেলাধীন বিদ্যালয়গুলোয় বিতরণের পর বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক উদ্বৃত্ত ছিল ১ হাজার ৬০০ কপি। বিদ্যালয়গুলো বিতরণের পর বিজয়নগর উপজেলায় উদ্বৃত্ত ছিল ৬ হাজার ১১০ কপি। চাঁদপুর জেলার দক্ষিণ মতলব থানাধীন বিদ্যালয়গুলোয় বিতরণের পর ৩ হাজার ৪০০ বই উদ্বৃত্ত। ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলাধীন বিদ্যালয়গুলোয় বিতরণের পর উদ্বৃত্ত ৫৯৪ কপি বই। জেলা সদর থানাধীন সব বিদ্যালয়ে বিতরণের পর উদ্বৃত্ত ছিল ৫ হাজার ৯৪৪ বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক। কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার সব বিদ্যালয়ে বিতরণের পর উদ্বৃত্ত ছিল ৪ হাজার ৯০০ বই। চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী থানার সব বিদ্যালয়ে বিতরণের পর উদ্বৃত্ত ছিল ৭ হাজার ২০০ বই। ফটিকছড়ি থানাধীন বিদ্যালয়গুলোয় বিতরণের পর উদ্বৃত্ত ছিল ৯ হাজার ৭৩ বই। এমন অনেক উপজেলায় চাহিদার অতিরিক্ত পাঠ্যপুস্তক নেওয়া হয়।

পাঠ্যপুস্তকের অতিরিক্ত চাহিদা প্রেরণ ও এর উদ্বৃত্তের পরিমাণ হ্রাসকল্পে উপজেলা পর্যায়ে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমকে মনিটরিং এবং কোনো উপজেলায় শিক্ষার্থীর তুলনায় পাঠ্যপুস্তকের অস্বাভাবিক চাহিদা, একাধিক বছরে অস্বাভাবিক উদ্বৃত্ত পরীক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে শাস্তির আওতায় আনার সুপারিশ করেছে অনুসন্ধান কমিটি।

কমিটিতে ছিলেন এনসিটিবির সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) প্রফেসর ড. মিয়া ইনামুল হক সিদ্দিকী, ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর মো. ফরহাদুল ইসলাম, সৈয়দ মাহফুজ আলী, বিশেষজ্ঞ আনোয়ারুল হক, ঊর্ধ্বতন ভা-ার কর্মকর্তা মো. জিয়াউল হক।

মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0067269802093506