যশোরের অভয়নগর উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বিদ্যালয়টি যশোর জেলার নওয়াপাড়া পৌরসভায় ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে রাজ টেক্সটাইল মিলের ভিতরে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আশ পাশের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষকেরা অবসরে চলে গেছেন। বিদ্যালয়টি ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাস থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসাবে গেজেটভুক্ত হয়েছে। শিক্ষকরা সরকারি তালিকাভুক্ত হয়েছে। বিদ্যালয়ের গায়ে লেখা আছে রাজ টেক্সটাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। কিন্তু সরকারিকরণের পরও শিক্ষকদের দুঃখ ঘুচলো না।
সাড়ে ৩ বছর অতিবাহিত হয়ে গেল কিন্তু কর্মরত ৪ জন শিক্ষকদের ভাগ্যের চাকা ঘুরলো না, জুটলো না বেতন-ভাতা। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে ৩’শ ৮০ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে ১ জন ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিসহ ১১ জন শিক্ষার্থী এ প্লাস পেয়েছিল। গত কয়েক বছরও পাশের হার শতভাগ।
সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ হয়নি কোন বিল্ডিং।জরাজীর্ণ টিনসেট আর বাঁশের খুটি দ্বারা নির্মিত বিদ্যালয়টি। ঘুনি পোকায় খেয়ে গেছে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো। বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে শিক্ষার্থীদের গায়ে। এর মধ্যেই চলে শিক্ষাদান কার্যক্রম। বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় বিদ্যুৎ লাইনটিও বিচ্ছিন্ন করেছে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম এ মামুন জানায়, শিক্ষকরা দীর্ঘদিন মানবেতর জীবনযাপন করছে কিন্তু শিক্ষকদের আন্তরিকতার অভাব নেই। এই বিদ্যালয় থেকে আ. আজিজ, আকছেদ, খুরশিদা নামে তিন জন শিক্ষক বিনা বেতনে অবসর গ্রহণ করেছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। বকেয়া বিল পরিশোধ করে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের ভবনের ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ডিও লেটার নিয়ে মন্ত্রনালয়ে জমা দেয়া হয়েছে, দেখি কবে অনুমোদন হয়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জিএম আলমগীর কবিরের সাথে কথা বললে তিনি জানান, বিদ্যালয়টি সরকারি হয়ে গেছে, শিক্ষকরাও গেজেটভুক্ত হয়ে গেছে। এখন বেতনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বিদ্যালয়ের ভবনের কোন বরাদ্দ নেই, এ জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হবে।