মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস হচ্ছে না। এতে তথ্য-প্রযুক্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। প্রায় দেড় বছর আগে গাংনী উপজেলার ৬৮টি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাস চালানোর জন্য একটি করে ল্যাপটপ, মডেম, সিম, প্রজেক্টরসহ নানা উপকরণ দেয়া হলেও সেগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে না। পাশাপাশি উপজেলার ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ল্যাব দেয়া হয়েছে।
সেখানে আটটি থেকে ১৬টি পর্যন্ত কম্পিউটার দেয়া হয়েছে। শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে সরকার তথা শিক্ষা মন্ত্রণালয় সকল শিক্ষার্থীর জন্য তথ্য-প্রযুক্তি বিষয় বাধ্যতামূলক করলেও শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের অনীহা বা গাফিলতির কারণে তথ্য-প্রযুক্তি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান নিতে পারছে না। নানা অজুহাত দেখিয়ে শিক্ষকরা মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নিচ্ছেন না।
হাতেগোনা কয়েকটি বিদ্যালয়ে সপ্তাহে বা মাসে দু’একটি মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নেয়া হলেও বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে কোন ক্লাস হয় না। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের মনিটরিং না থাকায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাস হচ্ছে না। একইভাবে দু’একটি ল্যাবে শিক্ষার্থীরা বসার সুযোগ পেলেও প্রায় ল্যাবকক্ষ বছরে একদিনও খোলা পড়েনি। সে কারণে কম্পিউটারগুলো ধূলায় আচ্ছাদিত। আবার বেশির ভাগ বিদ্যালয়ের ল্যাপটপ, কম্পিউটার ও প্রজেক্টর প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে তাদের স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েরা ব্যবহার করছে। অথচ আইসিটির অনুমোদন রক্ষা করার জন্য প্রতিনিয়ত ক্লাস নেয়া হচ্ছে বলে ভুয়া রিপোর্ট জেলা শিক্ষা অফিসের ড্যাশ বোর্ডে পাঠানো হচ্ছে।
বেশির ভাগ স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, প্রশিক্ষিত শিক্ষক না থাকা, বিদ্যালয়ে অবকাঠামো না থাকা এবং বিদ্যুত ব্যবস্থা না থাকায় তারা মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নিতে পারছেন না। উপজেলা শিক্ষা অফিসার ঠিকমতো মনিটরিং করেন না। মাস শেষে কিছু টাকা ধরিয়ে দিলে রিপোর্ট দিয়ে দেয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর হাবিবুল বাসার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, লোকবলের অভাবে ঠিকমতো মনিটরিং করা সম্ভব হয় না। ড্যাশ বোর্ডে রিপোর্ট পাঠানোর বিষয়টি আমার জানা নেই।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সুভাষ চন্দ্র গোলদার জানান, যে সকল বিদ্যালয় মাল্টিমিডিয়া ক্লাস না নিয়ে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করছে এবং প্রশিক্ষিত শিক্ষকদের কাজে লাগাচ্ছে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে ল্যাপটপ, মডেম, প্রজেক্টরসহ সমস্ত মালামাল ফেরত নেয়া হবে।