কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি। আর এই কমিটি ঘোষণার মাধ্যমে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরব রাজনীতির ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
সংগঠনটির নেতাকর্মীরা বলছেন, যেখানে ছাত্রলীগ থাকবে সেখানে জঙ্গিবাদের স্থান নেই। তাই আমরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি দিয়ে সরব রাজনীতিতে যাচ্ছি।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি দেওয়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বানে কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে একটি কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকায় অবস্থিত সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ২৭ জুলাই কমিটি দিয়েছে ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, ধানমণ্ডি এলাকায় অবস্থিত ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ (ইউডা), ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস (ইউল্যাব), ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, শান্ত মারিয়ম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটিতে ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
গত ২৭ জুলাই ধানমণ্ডি থানা ছাত্রলীগের সভাপতি সুজাউদ্দিন তুহিন ও সাধারণ সম্পাদক এস এস আশফাক ধানমণ্ডিতে অবস্থিত সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন।
ধানমণ্ডি থানা ছাত্রলীগ সভাপতি সুজাউদ্দিন কমিটি ঘোষণার বিষয়ে নিশ্চিত করে বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আগেও কমিটি ছিল। তবে হয়ত সেটা নীরবভাবে। এখন আমরা সরব রাজনীতিতে আসছি।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরব রাজনীতির বিষয়ে তিনি বলেন, যেখানে ছাত্রলীগ থাকবে সেখানে জঙ্গিবাদের স্থান নেই। ছাত্রলীগ নেই বলেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন জঙ্গিবাদের উত্থান হচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরেই এই কমিটি গঠনের কাজ চলছে। কিছু কমিটি দেওয়া হয়েছে। একে একে সবকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সোমবার সকালে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জঙ্গিবিরোধী মানববন্ধন কর্মসূচিতে ঢাকার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মানববন্ধনে ছাত্রলীগের সভাপতিকে অংশ নিতে দেখা গেছে।
গত ১৭ জুলাই রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও মালিকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সরকারের এক মতবিনিময় সভায় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরব রাজনীতির দাবি তোলেন।
এই দাবির পরেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরব রাজনীতি করার জন্য কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা তোড়জোড় শুরু করে। তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরব ছাত্ররাজনীতির দাবি তোলার পর বেশকিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা এই দাবিকে অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন।
তারা বলেছিলেন, এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে এবং সেশন জট তৈরি হবে। তখন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি হতে পারে কি পারে না সেটা একটা তর্কের বিষয়।
তবে ছাত্র রাজনীতি যেখানেই হোক না কেন সেটি যেন সুস্থ হয়। অসুস্থ রাজনীতি যেন কেউ না করে সেটা খেয়াল করতে হবে।