বৈধ নিয়োগ হওয়ার পরও এমপিও সুবিধা থেকে বঞ্চিত টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের সহকারী লাইব্রেরিয়ান এবং ল্যাব এসিসটেন্টরা। সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দ্বৈত নীতির কারণে ২০১০ সাল থেকে সরকারের বেতন ভাতা থেকে বঞ্চিতরা মানবেতর জীবন যাপন করছে প্রায় তিনশতাধিক সহকারী লাইব্রেরিয়ান এবং ল্যাব এসিসটেন্ট। দ্রুত এমপিওভুক্ত করে সরকারি বেতন ভাতা প্রদানের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের কাছে আবেদন করেছেন ভুক্তভুগীরা।
শেরপুর জেলাধীন একাধিক টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের সহকারী লাইব্রেরিয়ানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১০ সালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার সময় এর আগে নিয়োগ পাওয়া লাইব্রেরিয়ান ও ল্যাব এসিসটেন্ট পদ বিলুপ্ত করে দেওয়া হয়। অথচ ১৯৯৫ সালের জনবল অনুযায়ী প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে এসব পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল।
এই নীতিমালা অনুযায়ী নিয়োগ পাওয়া অনেকে এমপিওভুক্ত হয়েছেন আদালতের শরণাপন্ন হয়ে। যারা আদালতে মামলা করেননি এমন প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি প্রতিষ্ঠানের উল্লিখিত পদ এমপিওভুক্ত বঞ্চিত। নকলা এ টু জেড টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল আলম জানান, তার প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয় ২০০৪ সালে। ১৯৯৫ সালের জনবল অনুযায়ী লাইব্রেরিয়ান ও ল্যাব এসিসটেন্ট পদেও নিয়োগ নেয়া হয়। কিন্তু ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে জারি করা নতুন এমপিও জনবল নীতিমালা এইসব পদে এমপিও দেয়া হয়নি।
অথচ এদের বৈধ নিয়োগ ছিল। যদি ২০১০ সালের নীতিমালার পর নিয়োগ হতো, তাদের এমপিওভুক্ত না করা হলে প্রশ্ন উঠত না। ময়মনসিংহের মাইজবাড়ি টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজর একজন শিক্ষক জানান, ২০১০ সালের এমপিও নীতিমালায় সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যখন একটি করে লাইব্রেরিয়ান পদ অনুমোদন করে তখন কেন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এই পদ বাতিল করা হবে? এটা সরকারের দ্বৈতনীতি। এ কারণে ১৯৯৫ সালের নিয়োগ পাওয়া কিছু লাইব্রেরিয়ান আদালতে মামলা করলে, তাদের পক্ষে রায় পায়। তারা এমপিওভুক্ত হয়ে সরকারি বেতন ভাতা পাচ্ছেন।
যারা আদালতে যায়নি, তারা সরকারের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। এসব পদে নিয়োগ পাওয়া অনেকে প্রতিষ্ঠানের সামান্য বেতনে দিনযাপন করছেন। এমপিওভুক্ত টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজে চাকরি করেও পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর জানান, বিষয়টি তার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এসব লাইব্রেরিয়ান ও ল্যাব এসিসটেন্টের জন্য সরকারি বিধিবিধান অনুযায়ী কিছু করার সুযোগ থাকলে অবশ্যই তিনি উদ্যোগ নিবেন।