আমরা ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) কর্তৃক জারিকৃত বিজ্ঞপ্তি নম্বর ২৩৫ -এর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (সাধারণ) পদে আবেদন করি। আবেদনের দীর্ঘ দুই বছর পর মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। যার চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়েছে ৫-১২-২০১৬ তারিখে। দীর্ঘ ২ বছরের বেশি সময় ধরে পর্যায়ক্রমে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষ করেও কোটা বহির্ভূত মেধা তালিকায় সুপারিশপ্রাপ্ত হইনি। রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে এই পদের জন্য ৭১০ জন লোকবলের চাহিদা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড পিএসসিতে পাঠিয়েছে। তাগিদ দিয়েছে দ্রুত এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য।
নন-ক্যাডার বিধিমালা ২০১০ অনুযায়ী ৫০ শতাংশ পদ বিসিএস নন-ক্যাডার থেকে দিলেও বাকি ৫০ শতাংশ পদের বিপরীতে নতুন বিজ্ঞপ্তি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ব্যাপার। অথচ আমরা ৩৮১২ জন চাকরিপ্রার্থী এই পদের বিপরীতে মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন করে প্যানেলে থাকলেও নিয়োগের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। আবার ৪১১ শূন্য পদের বিপরীতে ৪৫৬ জনকে সুপারিশ করা হলেও প্রাধিকার কোটার ৬০টি পদ যোগ্য প্রার্থীর অভাবে শূন্য রাখা হয়েছে। এখানে মেধা কোটার অনেক প্রার্থীর পদ শূন্য; কিন্তু তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়নি। উল্লেখ্য, অতীতেও এই পদের পরীক্ষায় প্যানেলের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। অথচ বিসিএস (৩৫) ও অন্যান্য নিয়োগে প্রাধিকার কোটার শূন্য পদ মেধা কোটা থেকে পূরণের দৃষ্টান্ত থাকলেও আমাদের ক্ষেত্রে পিএসসির সে রকম কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। অধিকন্তু ৩৪তম বিসিএস নন-ক্যাডারে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ৪৬২, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধানশিক্ষক পদে ৮৯৮, কর পরিদর্শক ৩১৯, শ্রম পরিদর্শক ৬৫, সঞ্চয় অফিসার পদে ২৮ জনকে পিএসসি সুপারিশ করেন; অথচ যেখানে নন-ক্যাডার বিধিমালা ২০১০ অনুসরণ করা হয়নি।
কেননা ঐ পদগুলোর ৫০ শতাংশ যদি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হতো, তবে সাধারণ চাকরিপ্রার্থী হিসেবে সবার অংশগ্রহণের সুযোগ থাকত। চাহিদার সকল পদ নন-ক্যাডার থাকা সত্ত্বেও তা পুরোটাই পূরণ করা হয় বিসিএস নন-ক্যাডার থেকে যা নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রতি বৈষম্যের দৃষ্টান্ত হিসেবেই প্রতীয়মান। অথচ ভিন্ন দৃষ্টান্ত রয়েছে নার্স নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে। এখানে ৩৬০০ জনের নিয়োগের উল্লেখ থাকলেও পরবর্তী সময়ে অধিক জনবল প্রয়োজন সাপেক্ষে পিএসসি নতুন বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে ঐ বিজ্ঞপ্তিতেই ৯৬০০ জনকে সুপারিশ করেন। আমাদের ক্ষেত্রেও এমন একটি পদক্ষেপ প্রয়োজন। তাই আমাদের প্যানেল থেকেই চাহিদার শূন্য পদে নিয়োগের প্রক্রিয়ায় সরকারি কর্মকমিশনের দৃষ্টি প্রত্যাশা করছি।
ফাহিম বসুনিয়া
মিরপুর, ঢাকা