বোর্ডের ভুলে অকৃতকার্য চার হাজার শিক্ষার্থী - Dainikshiksha

বোর্ডের ভুলে অকৃতকার্য চার হাজার শিক্ষার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের ভুলে এ বছর এইচএসসিতে পাস নম্বর পেয়েও অকৃতকার্য হয়েছে চার হাজার শিক্ষার্থী। বোর্ডের টেব্যুলেশন নীতিমালায় এক রকম এবং উত্তরপত্র মূল্যায়ন নির্দেশিকায় আরেক রকম লেখা থাকায় বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নির্দেশিকা ও নীতিমালায় অসঙ্গতি থাকার কথা স্বীকার করলেও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন তারা ঠিক করেছেন। বোর্ড কর্মকর্তাদের স্ববিরোধী কথাবার্তায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাঁঠালবাড়ীয়া শহিদ আবুল কাসেম স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল মোসা. মায়মুনা খাতুন। সে সব বিষয়ে পাস করলেও পদার্থবিজ্ঞানের প্রথম ও দ্বিতীয়পত্রের সৃজনশীল অংশে ৪০ নম্বরের মধ্যে পাস নম্বর ১২ করে মোট ২৪ নম্বর পেয়েছে।

মায়মুনা সৃজনশীল, নৈর্ব্যক্তিক ও ব্যবহারিক অংশ মিলে পদার্থবিজ্ঞানের প্রথমপত্রে মোট নম্বর পেয়েছে ১০০-এর মধ্যে ৫৪ ও দ্বিতীয়পত্রে পেয়েছে ৫১ নম্বর। তারপরও এ বিষয়ে তার ফলাফল অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে। ওই একই কলেজের আরেক শিক্ষার্থী মোসা. তানিয়া রহমান এ বছর মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিয়েছিল। তাকেও একইভাবে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে।

তানিয়া রসায়ন শাস্ত্রের প্রথম ও দ্বিতীয়পত্রের সৃজনশীল অংশে ৪০ নম্বরের মধ্যে পাস নম্বর ১২ করে পেয়েছে। মায়মুনার মতো তানিয়াও দুই অংশে ২৪ নম্বর পেয়েছে। সে সৃজনশীল, নৈর্ব্যক্তিক ও ব্যবহারিক অংশ মিলে রসায়ন শাস্ত্রের প্রথমপত্রে পেয়েছে ৫১ ও দ্বিতীয়পত্রে পেয়েছে ৫৫ নম্বর। তারপরও তাকে এই বিষয়ে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, একইভাবে এবারের পরীক্ষায় প্রায় চার হাজার শিক্ষার্থীকে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে। বিজ্ঞান শাখার পদার্থ, রসায়ন ও জীববিজ্ঞানের সৃজনশীল অংশে এই অকৃতকার্যতা দেখানো হয়েছে। অথচ তারা সবাই সৃজনশীল অংশে ৪০ নম্বরের মধ্যে পাস নম্বর ১২ করে পেয়েছে। পরীক্ষকদের কাছে শিক্ষা বোর্ড যে নির্দেশিকা দিয়েছিল তাতে ১২ নম্বর করে পেলে পাস বলে বিবেচিত হবে উল্লেখ ছিল।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, যে প্রক্রিয়ায় ফলাফল মূল্যায়ন করা হয়েছে তা সঠিকই আছে। ব্যাখ্যা উপস্থাপন করে এই কর্মকর্তা আরও বলেন, বোর্ডের টেব্যুলেশন নীতিমালা অনুযায়ী, সৃজনশীল অংশের একটিতে ১২ পেলেও অপরটিতে ১৩ পেতে হবে। অর্থাৎ দুই অংশ মিলে অবশ্যই ২৫ নম্বর পেতে হবে। কেউ মোট ২৫ না পেলে পাস করবে না। তবে তিনি স্বীকার করেন পরীক্ষকদের নির্দেশিকায় ১২ নম্বরে পাসের যে কথা বলা হয়েছে সেটা ঠিক হয়নি।

বোর্ডের আরেক কর্মকর্তা বলেন, কেউ একটি অংশে শূন্য পেয়ে অন্য অংশে ২৫ পেলেও পাস করবে। নাইমুল হক নামের একজন অভিভাবক বলেন, পরীক্ষকদের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে পাস নম্বর ১২ হবে। আবার টেব্যুলেশন করার সময় দুই অংশ মিলে ২৫ বিবেচনা করা হয়েছে। এসব বোর্ডের গাফিলতি ও অদূরদর্শিতার কারণেই ঘটেছে। তবে সিনিয়র একজন পরীক্ষক যুগান্তরকে বলেন, বোর্ড থেকে তাদের যে নির্দেশিকা ছিল তার কোথাও বলা নেই কোনো বিষয়ের দুই অংশ মিলে ২৫ নম্বর পেতে হবে।

বরং পাস নম্বর ১২ লেখা আছে। এমনকি আমাদের মৌখিকভাবেও বলা হয়নি যে দুই অংশ মিলে ২৫ পেতে হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেন, গত ১০ বছর ধরে দুই অংশ মিলে ২৫ নম্বর না পেলে শিক্ষার্থীকে পাস করানো হয় না। আগে কেউ কিছু জানত না। এ বছর গ্রেডিং সিস্টেমের সঙ্গে নম্বর দেয়ায় বিষয়টা সবার নজরে এসেছে। এছাড়া উত্তরপত্র পরীক্ষণের সাধারণ নির্দেশনাবলিতেও পাস নম্বর ১২ লেখা থাকায় তা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আরও বিভ্রান্তি তৈরি করেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সামসুল কালাম আজাদ বলেন, টেব্যুলেশন নীতিমালা অনুযায়ী দুই পত্রের সৃজনশীল অংশ মিলে একজন শিক্ষার্থীকে অবশ্যই ২৫ পেতে হবে। অন্যথায় তাকে পাস করানো যাবে না।

এ হিসেবে ফলাফল সঠিক দেয়া হয়েছে। যদিও পরীক্ষকদের কাছে পাঠানো গোপন নির্দেশনাবলি ত্র“টিপূর্ণ ছিল। পরীক্ষকদের কাছে পাঠানো নির্দেশনাবলিতে ১২ পেলে পাস নম্বর লেখাটা সঠিক ছিল না। ওখানে লেখা উচিত ছিল ১২ দশমিক ৫। এটা গত কয়েক বছর ধরেই হয়ে আসছে। এ বছর গ্রেডের পাশাপাশি নম্বর দেয়াতে বিষয়টা জানাজানি হয়েছে। আগামীতে এ রকম ভুল আর থাকবে না।

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0064980983734131