নওগাঁর বদলগাছিতে দুই মাদ্রাসাছাত্রকে ব্লেড দিয়ে শরীর কেটে দেয়ার অভিযোগে ওই মাদ্রাসার বড় হুজুর ও ছোট হুজুরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার দুপুরে গ্রেফতারদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এদিকে একটি মহল বিষয়টি ভিন্ন খাতে নেয়ার জন্য তৎপর বলে জানা গেছে। উপজেলার হাকিমপুর হাজিউদ্দিন হারামাইল সৈয়দ জয়নাল আবেদিন নুরানি হাফেজিয়া মাদ্রাসায় শনিবার এ ঘটনা ঘটে।
মামলার এজাহারে সূত্রে জানা গেছে, মিনারুল ইসলাম ঘটনার এক সপ্তাহ আগে মাদ্রাসা ছেড়ে পালিয়ে বাড়িতে চলে যায়। সে আর মাদ্রাসায় পড়বে না তার অভিভাবকদের জানায়। অভিভাবকেরা মাদ্রাসায় থাকা জিনিসপত্র তাকে বাড়িতে নিয়ে আসতে বলে।
গত শনিবার বিকেলে মিনারুল ইসলাম তার মামাতো ভাই রেজাউল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে মাদ্রাসায় যায়। মাদ্রাসার বড় হুজুর (প্রধান শিক্ষক) ফিরোজ আহাম্মেদ ও ছোট হুজুর মোকারম হোসেন তাদের একটি কক্ষে বেঁধে রেখে মারপিট করে আটকে রাখেন।
এরপর দুই শিক্ষক মিলে মিনারুলকে আবারো মারপিট ও হাত ব্লেড দিয়ে কেটে দেন। মিনারুলের সঙ্গে আসার অপরাধে তার মামাতো ভাই রেজাউল করিমের ডান মাদ্রাসা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। তারা বাড়িতে ফিরে ঘটনাটি তাদের অভিভাবকদের জানায়। এদিকে বুধবার সকালে মাদ্রাসার গিয়ে দেখা যায়, হাকিমপুর গ্রামের শতাধিক লোকজন মাদ্রাসায় জড়ো হয়েছেন।
প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মির মহিউদ্দিন জানান, মাদ্রাসার ওই দুই শিক্ষক অভিভাবক ছাড়া জিনিসপত্র দেয়া যাবে না বলে জানায়। এরপর মিনারুল ও তার মামাতো ভাই মাদ্রাসা থেকে চলে যায়। এরপর কী হয়েছে তা জানেন না তিনি। এ ঘটনার দুই দিন পর গত সোমবার রাতে পুলিশ মাদরাসায় এসে তাদের দুই শিক্ষককে থানায় ধরে নিয়ে যায়।
মিনারুল ইসলাম বলেন, গত রোববার হুজুরদের মারপিটে আমার জ্বর উঠে। এরপর ছুটি চাইলেও হুজুররা না দিলে পালিয়ে আসি। মাদ্রাসায় থাকা জিনিসপত্র নিতে গত শনিবার বিকেলে যাই। কিন্তু হুজুররা না দিলে সেগুলো ছাত্রদের উপস্থিতিতে নিয়ে আসতে লাগি। এ সময় ফিরোজ হুজুর আহাম্মেদ ও ছোট শিক্ষক মোকারম হোসেন এসে তাদের মারপিট করে তার এবং মামাত ভাইকে ব্লেড দিয়ে কেটে দেন।
বদলগাছি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শেষে দুই হুজুরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মাদ্রাসার ছাত্র মিনারুল ইসলাম ও তার মামাতো ভাইয়ের শরীর ব্লেড দিয়ে কেটে দেয়ার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মাদ্রাসা ছাত্রের বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করে করাগারো পাঠানো হয়েছে।