টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে এবং প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী সার্টিফিকেট পরীক্ষা (পিইসি) পাসের সনদ দেওয়ার নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কয়েক দিন ধরে এভাবে টাকা আদায় করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এলাকাবাসী জানান, গোড়াই ইউনিয়নের মীর দেওহাটা গ্রামে অবস্থিত মীর দেওহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ২০১৫ সালে পিইসি পরীক্ষা পাসের সনদ দিতে ২০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। অনেক দরিদ্র শিক্ষার্থীর অভিভাবকেরা টাকা দিতে না পারায় সনদ নিতে পারেননি বলে জানা গেছে।
ওই গ্রামের বাসিন্দা টেম্পোচালক লিটন মিয়ার স্ত্রী আকলিমা আক্তার জানান, তাঁর দুই ছেলের মধ্যে ছোট ছেলে সিয়াম হোসেনকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য ৫০ টাকা ভর্তি ফি দিতে হয়েছে। আর বড় ছেলে ইস্রাফিল হোসেন ২০১৫ সালে পিইসি পরীক্ষায় পাস করেছে। কিন্তু ২০০ টাকা না দেওয়ায় বিদ্যালয় থেকে তাঁকে পাসের সনদ দেওয়া হয়নি।
আবদুল আলীম নামে এক শিক্ষার্থীর দাদি একই গ্রামের জাকির মোল্লার স্ত্রী নাছিমা বেগম জানান, তার (আলীম) পঞ্চম শ্রেণি পাসের সনদের জন্য বিদ্যালয়ে ২০০ টাকা দিতে হয়েছে।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সখিনা আক্তার জানান, বিদ্যালয়ে ২০১৫ সালে ২১৫ জন শিক্ষার্থী ছিল। এ বছর ইতিমধ্যে প্রায় ১৮০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। তিনি প্রশিক্ষণে রয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়া হচ্ছে না। তাঁর পরিবর্তে বর্তমানে সহকারী শিক্ষক রেহানা আক্তার দায়িত্ব পালন করছেন।
সহকারী শিক্ষক রেহানা আক্তার প্রধান শিক্ষকের নির্দেশ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তির সময় ৫০ টাকা ও পিইসি পরীক্ষার সনদের জন্য ২০০ টাকা করে নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বই বিতরণ উৎসবের সময় গতকাল শুক্রবার তাঁর (সখিনা) উপস্থিতিতেও অনেকে টাকা দিয়েছেন।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খলিলুর রহমান জানান, কোনো অজুহাতেই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা নয়। কেউ টাকা নিয়ে থাকলে তা ফেরত দিতে হবে। সেই সঙ্গে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।