ভুয়া গেজেটে প্রতিষ্ঠিত আকবর আলী খান কলেজ: এমপিওর ভাগ্য নির্ধারণী বৈঠক আজ - Dainikshiksha

ভুয়া গেজেটে প্রতিষ্ঠিত আকবর আলী খান কলেজ: এমপিওর ভাগ্য নির্ধারণী বৈঠক আজ

মুরাদ মজুমদার |

আকবর আলী খান কারিগরি ও বাণিজ্য কলেজের ২১৪ জন শিক্ষক-কর্মচারীর স্থগিত থাকা এমপিও ছাড়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার বৈঠক আজ মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত হবে। বিধি সম্মতভাবে নিয়োগ না হওয়ায় ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিলে সবার এমপিও স্থগিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

স্বৈরশাসক এরশাদের আমলের প্রকাশিত কথিত এক গেজেটের বলে কুমিল্লার দাউদকান্দিতে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত আকবর আলী খান কলেজ। এই প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শিক্ষকই বিএনপি-জামাতপন্থী বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের অধিকাংশই কিন্ডারগাটেনসহ বিভিন্ন ব্যবসায় নিযুক্ত।

মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আজ মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি সভা ডাকা হয়েছে। কারিগরি ও বাণিজ্য কলেজের বিষয়ে সভা হলেও ওই সভায় সভাপতিত্ব করবেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো: সোহরাব হোসাইন। উপস্থিত থাকবেন অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমেদ ও রুহী রহমান এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিাচলকসহ অধিদপ্তরের চারজন অধ:স্তন কর্মকর্তা।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, আজকের সভায় যারা যোগ দেবেন তাদের মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ শুরূ করেছে এমপিও দালালচক্র। শিক্ষা অধিদপ্তরের এমপিওসংশ্লিষ্ট একজন পরিচালক ও কলেজ শাখার একজন উপ-পরিচালকের কক্ষে কয়েকজন এমপিওদালালকে দেখা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী দৈনিকশিক্ষাডটকমকে জানান, মানবাধিকার সংগঠনের ব্যানার ব্যবহার করে যারা এমপিও বন্ধ করার জন্য মাসের পর মাস তৎপর ছিলেন তারাই আবার বন্ধ হওয়া এমপিও ফিরিয়ে দেয়ার তদবির করছেন। নানা যুক্তি দেখাচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, কলেজটির এমপিও বন্ধের পক্ষে মাসের পর মাস কাজ করা মানবাধিকার সংগঠনের ঠিকানায় অধিদপ্তর থেকে চিঠি দেয়া হলেও ওই ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এদিকে কলেজটির এমপিওশীটে দেখা যায় কয়েকজন শিক্ষক এমপিওভুক্ত হয়ে নিয়মিত বেতন ভাতা পেয়ে আসছিলেন কিন্তু তারা কোন বিষয়ের শিক্ষক তা উল্লেখ নেই।

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চাশিক্ষা অধিদপ্তরের দুজন কর্মকর্তা তদন্ত করেন প্রতিবেদন জমা দেন গতবছরের ১৭ আগস্ট।

দৈনিকশিক্ষার হাতে থাকা তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, আকবর আলী খান কলেজের অধ্যক্ষ এবং সভাপতির মনগড়া নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাউশির প্রতিনিধি রাখার বাধ্যবাধকতা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি তা করেনি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটিতে ২১৪জন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী পাশপাশি অনেক শিক্ষক ও কর্মচারী রয়েছেন। যারা সবাই অবৈধ উপায়ে নিয়োগ প্রাপ্ত। নিয়োগবিধি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির কোনো নিয়োগই বিধিসম্মত হয়নি।

জানা যায়, ঢাকায় একটি মহিলা শাখাসহ ৫টি এবং দেশের অন্যান্য জেলা- পঞ্চগড়, মেহেরপুর, রাজবাড়ী, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, নরসিংদী, ময়মনসিংহ, কিশোরগজ্ঞ, গাজীপুর, মানিকগজ্ঞ, চিটাগাংরোড (নারায়ণগঞ্জ), মতলব উত্তর, মনোহরদি, হোসেনপুর, কটিয়াদি, পাকুন্দিয়া, চান্দিনা, বুড়িচং, বরুড়া, গোপালগজ্ঞ, হোমনা, মুরাদনগর ইত্যাদি স্থানে শাখা এবং দেশের প্রায় ৩৫টি স্থায়ী অঞ্চলসহ বেশ কয়টি জেলাতে আকবর আলী খান কলেজের ভ্রাম্যমাণ প্রশিক্ষণ ইউনিট রয়েছে।

দুর্নীতির অভিযোগে কলেজটির অধ্যক্ষের এমপিও সাময়িক স্থগিত হয় ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে। এরপর তিনি ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে সাময়িক স্থগিতাদেশ বাতিলের চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হন। গত ২৪ এপ্রিল কলেজটির মূল শাখার অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রাজ্জাক এর এমপিও স্থায়ীভাবে স্থগিত ও বাতিল কেন হবে না তা জানাতে কারণ দর্শানো নোটিশ দিতে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

অধ্যক্ষ আবদুর রাজ্জাক এমপিও বাবদ সরকারি কোষাগার থেকে যত টাকা অবৈধভাবে নিয়েছেন তা সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়ার জন্য পিডিআর আইন ১৯১৩ অনুযায়ী মামলা দায়ের করার জন্য অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে।

কারিগরি বোর্ডর চেয়ারম্যান বরাবর লেখা মন্ত্রণালয়ের অপর এক চিঠিতে কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি মো. রশিদুল হক খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়।

গত বছরের ২৪ এপ্রিল মন্ত্রণালয়ের এমপিও অধিশাখার উপ-সচিব নুসরাত জাবীন বানু স্বাক্ষরিত তিনটি আলাদা চিঠিতে শাখা বন্ধ, এমপিও স্থগিত ও অধিদপ্তর এবং বোর্ডকে এসব নির্দেশের কথা বলা হয়েছে।

গত বছর শিক্ষাসচিবকে লেখা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের এক চিঠিতে বলা হয়েছে, নিয়োগে মহাপরিচালকের প্রতিনিধি না থাকায় সব নিয়োগই অবৈধ ছিল।

অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: মেজবাহ উদ্দিন বলেছন, যে গেজেটের কথা বলে আকবর আলী খান কলেজ প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত সেই গেজেটের কোনো অস্তিত্ব নেই। কোনো মূল কপি নেই বিজি প্রেসে। শুধু ফটোকপি পাওয়া গেছে।

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.006760835647583