শিক্ষা প্রসারে সব ধরনের সহযোগিতা নিঃসন্দেহে মহতী উদ্যোগ। আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল পরিবারে জন্মানো শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় সরকারের পাশাপাশি বিত্তশালী শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের সহযোগিতায় নজির বহু পূর্ব থেকে চলে আসছে। তবে, সমাজে কতিপয় বিত্তশালী ব্যক্তি দান করে থাকেন নাম কামানো বা স্বার্থসিদ্ধির জন্য ।
বেসরকারি সংস্থা ডাব্লিউ ডাব্লিউ ফাউন্ডেশনের এরকমই একটি ন্যাক্কারজনক উদাহরণ বিবেকবানদের হৃদয় কতটুকু ক্ষত করেছেন জানি না । একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে এ ধরনের দৃষ্টান্ত সমাপ্তির উদ্যোগ এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঝালকাঠী থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২০১৩ সালে মাইনুল হাসান ও ২০১৪ সালে মো: মাসরুর হাসান তমাল জেলায় প্রথম স্থান অর্জন করে। মেধার স্বীকৃতি হিসেবে শরীরের ওজনের সমপরিমান টাকা বৃত্তি দিয়েছে বেসরকারি সংস্থা ডাব্লিউ ডাব্লিউ ফাউন্ডেশন। আয়োজক সংস্থা ৫ টাকার ধাতব মুদ্রা দিয়ে তাদের শরীরের ওজন নির্ণয় করে। এতে মাইনুল হাসান ৫৮ কেজি ওজনে ৩৬ হাজার ৫০০ টাকা এবং মাসরুর ইসলাম তমাল ৭৮ কেজি ওজনে ৪৯ হাজার টাকার চেক পান।এদিকে, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ এম আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি ঝালকাঠির সন্তান। এ জেলায় এসএসসি পরীক্ষায় যে সবচেয়ে ভাল ফল করবে তার শরীরের ওজন নির্ণয় করে সমপরিমান টাকা দেওয়া হবে। এ অভিনব বৃত্তি মেধার পাশাপাশি শরীরের ওজনকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এ বৃত্তি মানুষের মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টির পাশাপাশি নতুন ধান্দার কৌশল কিনা সেই ধারণার সৃষ্টি করছে।
স্থানীয় টাইগার মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্ত্বরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় একটি দৈনিকের উপদেষ্টা সম্পাদক শাহাবউদ্দিন সিকদ্দার, ঝালকাঠী প্রেসক্লাবের সভাপতি চিত্তরঞ্জন দত্ত। বিদ্যালয়ের ব্যাবস্থাপনা কমিটির সদস্য আব্দুর রবের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রধান শিক্ষক একেএম শামসুদ্দোহা। এ বিবেক বর্জিত অনুষ্ঠানে অতিথিরা এ ধরণের উদ্যোগকে সহযোগিতা করে নিজেরাই কলঙ্কিত হয়েছেন । সচেতন মহলসহ সকলকে এ মেধাবৃত্তিকে ঘৃণাভরে প্রতাখ্যান করার আহ্বান জানাই।
লেখক: মো. সিদ্দিকুর রহমান, অাহ্বায়ক, প্রাথমিক শিক্ষক অধিকার সুরক্ষা ফোরাম।