মৌলভীবাজারে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ হয়েছে। সভাপতি ও সম্পাদকের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এতে মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী আক্তার হোসেন, শাহান আহমেদ, মাহবুব হোসেন ও রোকসান আহমেদ আহত হন। প্রকাশ্যে ছাত্রলীগ কর্মীদের দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার ওসি’র নেতৃত্বে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর পর শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গতকাল দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সিলেট জালালাবাদ কলেজের ছাত্রলীগ কর্মী শাহীন ও আসিফের ওপর শিবির কর্মীদের হামলার প্রতিবাদে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান রনি ও সাইফুর রহমান রনির নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে চৌমুহনা চত্বরে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান রনির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রনির পরিচালনায় এ সভা হয়। ওই সমাবেশে বক্তারা বলেন, ছাত্রলীগ কর্মীদের ওপর হামলার হিসাব একটা একটা করে নেয়া হবে, রাজপথের রক্তের বদলা রক্ত দিয়েই শোধ নেয়া হবে।
ছাত্রলীগের প্রতিবাদ সভা শেষে নিজেদের কোন্দলের জের ধরে সভাপতি ও সম্পাদকের উপস্থিতিতেই তাদের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তখন ছাত্রলীগ কর্মীরা প্রকাশ্যে রামদা, রোল, চাপাতি ও লাঠিসোটা নিয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে চৌমুহনা এলাকার টিসি মার্কেটের সামনে ৪/৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এ সময় সর্বত্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। চৌমুহনা এলাকার দোকানপাঠ বন্ধ হয়ে যায়। পথচারীরা ভয়ে দিগবিদিক ছোটাছুটি করে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের মধ্যে অন্তর্দলীয় কোন্দল চলে আসছিল। এর জের ধরেই এ সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষের ব্যাপারে সাধারণ সম্পাদক মো.সাইফুর রহমান রনি টেলিফোনে বলেন, ‘অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে সভাপতির বেল্টের লোকজনেরা নিজেদের মধ্যে এটা ঘটিয়েছে। এখানে আমাদের কোনো ছেলেদের সংশ্লিষ্টতা নেই।’ অনেকের ধারণা সভাপতির সঙ্গে আপনার দ্বন্দ্বের কারণে এই অপ্রীতিকর ঘটনাটি ঘটেছে- এমন প্রশ্নের জবাবে মো.সাইফুর রহমান রনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তারা নিজেরা নিজেরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’ মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার ওসি মো. সোহেল আহমদ বলেন, ‘সভাশেষে মিষ্টি নিয়ে সভাপতির দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে কেউ হতাহত হয়নি।’ ওসি আরো বলেন, ‘প্রোগ্রাম শেষে সাধারণ সম্পাদক একদিকে চলে গেছে। সভাপতি আরেকদিকে চলে গেছে। সেখানে মিষ্টি কেউ একটু বেশি খেয়েছে, কেউ একটু কম খেয়েছে। এই নিয়ে সভাপতির দুই গ্রুপের লোকজনের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে।’ তবে, অভিযোগের ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতিকে টেলিফোনে পাওয়া যায়নি।