যোগ্য প্রধান শিক্ষক, অধ্যক্ষ নিয়োগে বড় বাধা এমপিরা - দৈনিকশিক্ষা

যোগ্য প্রধান শিক্ষক, অধ্যক্ষ নিয়োগে বড় বাধা এমপিরা

বিভাষ বাড়ৈ |

নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগের প্রেক্ষাপটে বেসরকারী স্কুল-কলেজের গবর্নিং বডির ‘মনোনীত’ সভাপতির পদ থেকে আদালতের নির্দেশে সম্প্রতি অব্যাহতি দেয়া হয় সংসদ সদস্যদের। এরপর গবর্নিং বডির প্রভাব কমিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে নিবন্ধন পরীক্ষার মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়া শুরু করে সরকার। তবে তার পরেও স্কুল, কলেজে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের হস্তক্ষেপ বন্ধ হয়নি। প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠানে থাকায় এসব পদে এখন পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে অযাচিত হস্তক্ষেপ করছেন স্থানীয় অনেক নেতা। অবৈধ প্রভাবের ফলে বৈধভাবে নিয়োগ দেয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

এদিকে প্রভাবশালী নেতাদের হস্তক্ষেপ, নিয়োগ পরীক্ষায় ভাল করলেও অযোগ্যকে নির্বাচন করাসহ নানা কারণে বেসরকারী স্কুল-কলেজ জড়িয়ে পড়ছে ভয়াবহ মামলা সঙ্কটে। মাউশি অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ মুহূর্তে মামলা আছে অন্তত ১২ হাজার, যার মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মামলাই হবে প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ নিয়োগকে কেন্দ্র করে। এমন অবস্থায় ৩০ হাজার এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্তত ছয় হাজার প্রতিষ্ঠান চলছে নিয়মিত প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ ছাড়া। মেধাবী ও যোগ্যদের নিয়োগে প্রভাবশালীদের বাধা, কোন কোন ক্ষেত্রে গবর্নিং বডির অনিয়মসহ নানা কারণে বছরের পর বছর ধরে প্রতিষ্ঠানপ্রধান ছাড়াই চলছে এসব স্কুল ও কলেজ।

কোথাও কোথাও গবর্নিং বডি যোগ্য কাউকে নিয়োগ দিতে চাইলেও দেখা যাচ্ছে, স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা অযোগ্যদের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়ে তাদের নিয়োগে চাপ দিচ্ছেন। সারাদেশের বেসরকারী স্কুল-কলেজের নিয়োগ নিয়ে মাউশি অধিদফতরসহ বিভিন্ন শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার এ সঙ্কটের চিত্রই পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংসদ সদস্য কিংবা স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা এক সময় সবচেয়ে বেশি হস্তক্ষেপ করতেন শিক্ষক নিয়োগে। আর এ কাজে বড় ধরনের বাণিজ্যেরও অভিযোগ ছিল। কিন্তু ইতোমধ্যেই সহকারী শিক্ষক নিয়োগ চলে গেছে সরকারের হাতে। এসব শিক্ষক নিয়োগ দেয় বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। ফলে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আর অনিয়ম বা টাকা রোজগারের সুযোগ নেই। রাজধানীসহ বিভাগীয় পর্যায়ের বেশকিছু নামী-দামী স্কুল এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের স্কুলে এখনও আয় অনেক বেশি। কারণ এসব প্রতিষ্ঠানে অনেক শিক্ষার্থী ও তাদের টিউশন ফি বেশি হওয়ায় সেখান থেকে বাণিজ্যের সুযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে আছে প্রতিষ্ঠানের হাতে থাকা প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা। আছে কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগে প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতাও। আর এসব ক্ষেত্রেই প্রতিষ্ঠানে প্রভাব বিস্তার করছেন নেতারা। নিজে না পারলেও বসছেন নেতাদের স্ত্রী, সন্তান ও আত্মীয়স্বজন। নয়ত পছন্দের কোন নেতা।

সাতক্ষীরা শহরে অবস্থিত রসুলপুর হাই স্কুল। একুশে পদকপ্রাপ্ত জাতীয় অধ্যাপক, দেশবরণ্যে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রয়াত অধ্যাপক ডাঃ এম আর খানের সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক নেই দীর্ঘদিন। গবর্নিং বডির সদস্য ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির শুভাকাক্সক্ষীরা চান একজন যোগ্য প্রধান শিক্ষক। এ নিয়ে চেষ্টারও কমতি নেই শিক্ষক বা উদ্যোক্তাদের। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির সঙ্কটের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা। তার আবদার, তিনি যাকে পছন্দ করেছেন তাকেই প্রধান শিক্ষক পদে আসীন করতে হবে। কিন্তু তারচেয়েও যোগ্য ও মেধাবী শিক্ষক এ পদের জন্য থাকায় প্রতিষ্ঠানটির স্বার্থসংশ্লিষ্ট কেউ তা মানতে পারছেন না। আবার প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় তার আবদার এড়িয়ে যাওয়ারও সাহস পাচ্ছেন না। অভিযোগ আছে ওই অযোগ্য ব্যক্তির আর্থিক লেনদেনের।

এদিকে এমন এক জটিলতার মুখে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে আছে। অথচ প্রতিষ্ঠানটিতে প্রধান শিক্ষকের অভাবে ক্রমেই সঙ্কট বাড়ছে। একাডেমিক সঙ্কট সমাধানে একজন যোগ্য প্রধান শিক্ষক দ্রুত নিয়োগ চান এলাকাবাসী। তারা এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশি অধিদফতরের সহায়তা কামনা করেছেন।

কেবল সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুর হাই স্কুলই নয়, নানা প্রতিকূলতার কারণে নিয়মিত প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক ও উপাধ্যক্ষ ছাড়াই চলছে দেশের ছয় হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কোথাও কোথাও সঙ্কটের কারণ প্রভাবশালী সাংসদ, না হয় গবনির্ং বডিতে থাকা এমপির মনোনীত ও তার মদদপুষ্ট অন্য কোন ব্যক্তি।

কুমিল্লার ১৬ উপজেলার ৫৯৮টি বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। দীর্ঘদিন ধরে ওই পদগুলো শূন্য থাকায় বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠান চলছে ভারপ্রাপ্ত কোন প্রধান শিক্ষক দিয়ে।

এ জেলার ৫৯৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে মেঘনা উপজেলা ছাড়া অন্য ১৫টি উপজেলায় ৫৮টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। দেবীদ্বারে আটটি, চৌদ্দগ্রামে সাতটি, আদর্শ সদর ও সদর দক্ষিণ উপজেলায় ছয়টি করে, হোমনায় পাঁচটি, নাঙ্গলকোট, বরুড়া ও বুড়িচংয়ে চারটি করে, দাউদকান্দি, চান্দিনা ও মুরাদনগরে তিনটি করে, ব্রাহ্মণপাড়ায় দুটি, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ ও তিতাসে একটি করে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। জেলা শিক্ষা অফিস বলছে, অবসরে যাওয়া, আইনী জটিলতা ও দক্ষ শিক্ষক না পাওয়া, প্রভাবশালীদের চাপসহ নানা কারণে প্রধান শিক্ষকের পদগুলো শূন্য পড়ে আছে।

মাউশির কর্মকর্তারা বলছেন, কেবল সাতক্ষীরার এ প্রতিষ্ঠান বা কুমিল্লারই এ অবস্থা নয়, সারাদেশেই বেসরকারী স্কুল-কলেজে মোটামুটি একই চিত্র। রাজধানী থেকে শুরু করে জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বা উপাধ্যক্ষদের দিয়েই। আর নিয়োগে ঘুষের অভিযোগ আসে প্রায়ই। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, টাকা ছাড়া নিয়োগ এটা এখন একেবারেই অসম্ভব। চাকরিপ্রার্থীরা জমিজমা, স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি এবং ঋণ করে টাকা হাতে নিয়ে বসে থাকেন। এ নিয়ে তাদেরও চলে নানা ধরনের তৎপরতা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, টাকা ছাড়া নিয়োগের আশা এখন আর কেউ করেন না। প্রতিষ্ঠানের প্রধান হতে হলে প্রভাবশালীদের খুশি করতে হয়। আর প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা অনিয়মে রাজি না হলে প্রভাবশালীরা নিয়োগই বন্ধ করে রাখেন।

এদিকে রাজধানীতেই অন্তত ৫০০ স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা আছে যেখানে প্রধান শিক্ষক, অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নেই। হয় নিয়োগে দুই প্রার্থীর মামলা, না হয় গবর্নিং বডিতে থাকা প্রভাবশালী নেতা তার পছন্দের ব্যক্তিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব দিয়েই বছরের পর বছর চালিয়ে যাচ্ছেন এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নামী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত মতিঝিল মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজে অধ্যক্ষ নেই অন্তত আট বছর। সভাপতি তার পছন্দের এক শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়ে নিজের মতো করে চালাচ্ছেন প্রতিষ্ঠান। অথচ অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের কোন উদ্যোগ নেই।

নিয়মিত অধ্যক্ষ নেই ভিকারুননিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজেও। যদিও এখানে পরিচালনা পর্ষদে এখন আছেন সরকারী কর্মকর্তারাই। মিরপুরের শহীদ আবু তালেব উচ্চ বিদ্যালয় পাঁচ বছর ধরে চলছে নিয়মিত অধ্যক্ষ ছাড়া। মানিকনগর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই প্রায় সাত বছর ধরে। এভাবে রাজধানীর পাঁচ শতাধিক প্রতিষ্ঠানে কোন নিয়মিত প্রধান নেই।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর খোঁজখবর রাখে সারাদেশের নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানের। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বলছেন, যে জেলা বা উপজেলাতেই যাচ্ছি দেখা যায় বেশকিছু প্রতিষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ আছেন। এ অবস্থার জন্য অনেক কারণ থাকলেও বিষয়টি শিক্ষার জন্য ভাল নয় বলে বলছেন মাউশি অধিদফতরের কর্মকর্তারা। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশে এমপিওভুক্ত মোট স্কুল ১৬ হাজার, কলেজ তিন হাজার, মাদ্রাসা সাড়ে নয় হাজার, কারিগরি প্রতিষ্ঠান দুই হাজার। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্য বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকের অনুপাতে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী বাংলাদেশে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনুসারে বাংলাদেশেই শিক্ষক সবচেয়ে কম।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় শিক্ষার্থী-শিক্ষক অনুপাতের তুলনামূলক চিত্র উঠে এসেছে ব্যানবেইসের এডুকেশন রিপোর্টে। প্রতিবেদনের তথ্যমতে, বাংলাদেশে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষায় প্রতি একজন শিক্ষকের বিপরীতে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩৫ জন। দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারতে এ অনুপাত ৩১, নেপালে ২৯, পাকিস্তানে ১৯ ও শ্রীলঙ্কায় ১৭। এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষায় শিক্ষার্থী-শিক্ষক অনুপাতে সবচেয়ে ভাল অবস্থানে রয়েছে ভুটান। দেশটিতে প্রতি একজন শিক্ষকের বিপরীতে শিক্ষার্থী রয়েছে ১৪ জন।

মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক সঙ্কটের বিষয়টি স্বীকার করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. এসএম ওয়াহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষায় যতটুকু উন্নয়ন প্রয়োজন ছিল, ততটা করা সম্ভব হয়নি। দেশের অধিকাংশ বিদ্যালয়ই বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয়। এসব বিদ্যালয় আর্থিক সঙ্কটের কারণে পর্যাপ্তসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারে না। তবে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সঙ্কটসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্যালয়গুলোকে নানা সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।

মাউশির আইন শাখার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, রীতিমতো মামলার জালে আটকে পড়েছে শিক্ষা খাত। কথায় কথায় ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আবার প্রতিষ্ঠান ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করছে। বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কেউ অধিকারবঞ্চিত হয়ে আবার কেউ অধিকার আদায়ে মামলা ঠুকে দিচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারীদের এসব মামলার বিবাদী হচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আবার কিছু কিছু মামলার বাদীও রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কারণে-অকারণে করা এসব মামলা বছরের পর বছর চলতে থাকলেও নিষ্পত্তির সংখ্যা খুব কম। আর মামলা চালাতে প্রতি বছর সরকারী কোষাগার থেকে ব্যয় হচ্ছে কোটি কোটি টাকা।

মন্ত্রণালয়ের আইন শাখা থেকে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরকে বিবাদী করে প্রায় ১২ হাজার মামলা রয়েছে। এর মধ্যে সরাসরি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে দেড় হাজারের মতো। আর বেশিরভাগ মামলা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। কিন্তু উর্ধতন কর্তৃপক্ষ হিসেবে আসামি হয়েছে মন্ত্রণালয় বা শিক্ষা সচিব। আইন শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব মামলার বেশিরভাগ বাদী কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। মামলার অধিকাংশই শিক্ষা বাণিজ্যে বাধা দেয়া, শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তি জটিলতা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটি, শিক্ষকদের সাময়িক বরখাস্ত আদেশ, পদোন্নতি, জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন ইত্যাদি বিষয়েও মামলা হচ্ছে।

অন্যদিকে আদালতের রায়ের পরেও চেহারা বদলায়নি গবর্নিং বডির। সাংসদ চলে গেলেও এসেছেন তাদের আপনজন। না হয় এডহক কমিটির নামে প্রশাসন ক্যাডারের কোন কর্মকর্তা, যারা আদালতের রায় মেনে গবনির্ং বডির নির্বাচন না দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিষ্ঠান। ফলে আগের চেয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনিয়ম আরও বাড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রবীণ শিক্ষক নেতা মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম বলছিলেন, আমরা প্রধান শিক্ষক বা প্রিন্সিপালকে বলি হেড অব ইনস্টিটিউশন। কিন্তু দেখা যায়, এসএমসি বা জিবির সভাপতিরাই মূলত প্রতিষ্ঠানপ্রধান। ইউনেস্কো বলেছে, স্কুল লিডার হবেন হেড টিচার। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকই একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য আবশ্যকীয়। প্রধান শিক্ষকই হবেন তার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার। তবে এলাকার গণ্যমান্যদের নিয়ে পরামর্শক বা উপদেষ্টা কমিটি হতে পারে। আর্থিক বিষয়ও থাকবে প্রধান শিক্ষক বা প্রিন্সিপালের হাতে। তবে আর্থিক স্বচ্ছতার জন্য কমিটি, শৃঙ্খলার জন্য কমিটিসহ নানা বিষয়ের জন্য নানা কমিটি থাকতে পারে। আর সরকারের গাইডলাইন অনুযায়ীই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলবে। এমন না হলে শিক্ষক সঙ্কট বা অন্য কোন সমস্যার ভাল সমাধান হবে না।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি শিক্ষক নেতা ও মিরপুর সিদ্ধান্ত হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম রনি বলছিলেন, দেশের অসংখ্য স্কুল-কলেজে নিয়মিত প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ নেই। শিক্ষকরা আমাদের বিষয়টি জানান সব সময়। আবার আদালতের রায়ের পরেও গবর্নিং বডির অবস্থা বদলায়নি। এমপিরা অধিকাংশই আছেন। না হয় তার মনোনীত অন্য কেউ আছেন। নির্বাচনও দেয়া হচ্ছে না।

সৌজন্যে: জনকন্ঠ

ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038890838623047