রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণ, বন্ধুসহ শিক্ষক গ্রেপ্তার - Dainikshiksha

রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণ, বন্ধুসহ শিক্ষক গ্রেপ্তার

রাজশাহী প্রতিনিধি |

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সম্পর্ক তৈরি করে এবার রাজশাহী নগরীর একটি আবাসিক রেস্ট হাউসে এক তরুণীকে পালাক্রমে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। রাজধানীর ধানমন্ডি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বিবিএর ওই ছাত্রীকে রাজশাহী নগরের শাহ মখদুম থানার নওদাপাড়ার নির্জন এলাকায় একটি রেস্ট হাউসে নিয়ে দুই বন্ধু মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষকসহ দুই বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতেই আটক দুই বন্ধুকে ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয় বলে জানান শাহ মখদুম থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন তুহিন। বুধবার সকালে ওই ছাত্রীকে রামেক হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তির পর ঘটনা জানাজানি হয়। সেখানে ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে আদালতের মাধ্যমে ওই কিশোরীকে পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় রাজশাহীতে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। আজ বৃহস্পতিবার তাদের ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।

ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতারকৃতরা হলো ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি এ্যান্ড সায়েন্সের (ইউআইটিএস) রাজশাহী শাখার সাবেক শিক্ষক সামশুল আলম বাদশা ও রাজশাহী নগরীর গোরহাঙ্গা এলাকার ‘ইজিটাচ’ কম্পিউটার দোকানের মালিক আবু ফায়েজ নাহিদ। এদের মধ্যে বাদশার বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার মচমইল এবং নাহিদের বাড়ি একই উপজেলার হাসনিপুর গ্রামে। তারা দুইজনেই শহরের বোয়ালিয়া থানার সাগরপাড়া এলাকায় বাস করেন।

নগরীরে শাহ মখদুম থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন তুহিন জানান, ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের নামোশংকরবাটি এলাকায়। তার বাবা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।

রাজধানীর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ অধ্যায়নরত অবস্থায় চাকরির চেষ্টা করছিলেন ওই তরুণী। এরই মধ্যে ঢাকায় একাধিক প্রতিষ্ঠানে রিসেপসনিস্ট হিসেবে চাকরিও করেছেন। সাবেক শিক্ষক বাদশার সঙ্গে তার ফেসবুকে পরিচয় হয়। তারপর থেকেই তাদের মধ্যে কথপোকথন চলছিল।

সর্বশেষ সোমবার চিকিৎসার জন্য ওই ছাত্রী চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহীতে আসেন। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা শেষে বন্ধু বাদশাকে ফোন দেন। এ সময় বাদশা তাকে ডেকে নেয় নগরের গোরহাঙ্গা এলাকায় তার বন্ধুর নাহিদের ইজিটাচ কম্পিউটারের দোকানে। ওই ছাত্রী তার কম্পিউটারের দোকানে গেলে বাদশা তার বান্ধবী হিসেবে নাহিদের সঙ্গে পরিচয় করে দেয়। এর পর দুপুরে খাবারের কথা বলে নগরের শাহ মখদুম থানার নওদাপাড়া এলাকার ‘গ্রীন গার্ডেন’ নামের একটি বাগান বাড়িতে (গেস্ট হাউস) নিয়ে যায় ওই ছাত্রীকে।

সেখানে একটি কক্ষে রেখে প্রথমে বাদশা ও পরে নাহিদ তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এর পর তারা খাবার নিয়ে আসার কথা বলে ওই ধর্ষিত ছাত্রীকে সেখানে রেখেই পালিয়ে যায়। ওইদিন সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলেও দুই বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে রাতে হোটেল কর্মচারীদের সহযোগিতায় নগরীর শাহ মখদুম থানায় হাজির হয়ে পুরো ঘটনা পুলিশকে জানায়। পরে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করে রাতেই অভিযান শুরু করে পুলিশ। মঙ্গলবার ভোরে গোরহাঙ্গা এলাকা থেকে পুলিশ বাদশা ও নাহিদকে গ্রেফতার করে বলে জানান পুলিশ পরিদর্শক তুহিন। গ্রেফতারের পর বাদশা ও নাহিদ পুলিশের কাছে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত দুই আসামিকে মঙ্গলবারই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়ে। বৃহস্পতিবার তাদের ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।

শাহ মখদুম থানার ওসি জিল্লুর রহমান বলেন, ফেসবুকে পরিচয়ের মাধ্যমে বাদশার সঙ্গে সম্পর্কের কারণে মেয়েটি রাজশাহীতে এসেছিল। পরে বাদশার বন্ধু নাহিদের সহায়তায় গেস্ট হাউসে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করা হয়। ঘটনার পর গেস্ট হাউসের ওই কক্ষ থেকে ধর্ষণের আলামত জব্দ করা হয়েছে।

তিনি জানান, দুই বন্ধু পালাক্রমে ধর্ষণের পর ভয় পেয়ে কিশোরীকে ফাঁকি দিয়ে সটকে পড়ার চেষ্টা করেছিল। তবে পুলিশ রাতেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কৌশলে তাদের গ্রেফতার করে। ওসি জানান, আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।

এদিকে নির্জন এলাকার ওই গেস্ট হাউস নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছে। কনফারেন্স কাম আবাসিক গেস্ট হাউসের নামে সেখানে প্রায় নারীদের নিয়ে অপরিচিতদের উঠতে দেখা যায় বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। সাজু নামের এক ব্যক্তি ওই রেস্ট হাউসের মালিক। বুধবার ওই রেস্ট হাউসে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। মালিক সাজুর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0076169967651367