রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাতিলের দাবিতে ঢাকায় প্রগতিশীল ছাত্রজোটের রাজপথে অবস্থান কর্মসূচিতে লাঠি চালিয়েছে পুলিশ।বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর জোটটির নেতা-কর্মীরা মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগে গিয়ে সড়কে অবস্থান নিলে ঘণ্টাখানেক পর পুলিশ লাঠিপেটা করে তাদের তুলে দেয়।
জোটের নেতারা জানিয়েছেন, পুলিশের লাঠির আঘাতে তাদের ছয়জন আহত হয়েছেন, তার মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।শাহবাগ থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিকবলেন, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিক্ষোভকারী সড়কে অবস্থান নিলে তাদের বারণ করা হয়।
কিন্তু তারা তা না শুনে পুলিশকে ধাক্কাধাক্কি করে। এরপর পুলিশ তাদের উঠিয়ে দিয়ে যান চলাচল নির্বিঘ্ন করে। সুন্দরবনের কাছে বাগেরহাটের রামপালে ভারতের সঙ্গে যৌথউদ্যোগে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের বিরোধিতা শুরু থেকে করে আসছে বাম রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো।
এই তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে সুন্দরবন ঝুঁকির মুখে পড়বে বলে আন্দোলনকারীদের দাবি। তবে তা নাকচ করে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পরিবেশগত নিরাপত্তার বন্দোবস্তু রেখেই এই বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে।বিরোধিতা উপেক্ষা করে সরকার রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শুরুর পর আন্দোলন জোরদার করেছে বাম দলগুলো।
এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার কর্মসূচি ডাকে প্রগতিশীল ছাত্রজোট।রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল কর, সুন্দরবন রক্ষা কর’ ব্যানার নিয়ে জোটের মিছিলটি মধুর ক্যান্টিন থেকে শুরু হয়ে চারুকলা অনুষদের সামনে গেলে পুলিশের ব্যারিকেডের মুখে পড়ে।
পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষোভকারীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয়। এসময় ওই চৌরাস্তার সড়কগুলোতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।দেড়টার দিকে পুলিশ লাঠিপেটার পর পরে শাহবাগে সমাবেশ করে কর্মসূচি শেষ করে তারা।
ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তাহসিন মাহমুদ বলেন, “আমরা ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগ অবস্থান নিলে পুলিশ মারধর শুরু করে। এতে ছয়জন আহত হন।
”পুলিশের লাঠিপেটায় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অর্থ সম্পাদক গোবিন্দ দাস, নগর শাখার সদস্য অরূপ দাস শ্যাম, প্রগতি বর্মণ তমা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য মশিউর রহমান ও হুসাইন আবেদিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির আহত হন বলে জোট নেতারা জানান।
এদের মধ্যে গোবিন্দকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির বলেন, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি নিয়ে তারা শাহবাগে অবস্থান নিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ বিনা উস্কানিতে হামলা চালায়।
শাহবাগ থানার ওসি আবু বকর বলেন, “শাহবাগের আশেপাশে হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থাকায় আমরা তাদের মানা করেছিলাম। কিন্তু তারা পুলিশকে ধাক্কাধাক্কি করে শাহবাগের মোড়ে অবস্থান নেয়। তখন যান চলাচল স্বাভাবিক করতে পদক্ষেপ নেয় পুলিশ।”
এদিকে জোটের সমন্বয়ক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকা রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলে তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এই উন্নয়ন দেশের স্বার্থ নয়। এটি বাস্তবায়ন হলে ওই এলাকার ৫ লাখ মানুষের জীবন জীবিকা ধ্বংস হবে।
“সব কিছু জেনেও সরকার এ বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে যাচ্ছে। ছাত্র সমাজ বুক পেতে দেবে, তবুও এ বিদ্যুৎকেন্দ্র হতে দেবে না।