এমপিওভুক্তির দাবিতে টানা অষ্টম দিনের মতো অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন মাধ্যমিক পর্যায়ের আইসিটি শিক্ষকরা। রোববার (২২ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা তিন’শতাধিক এমপিওবঞ্চিত আইসিটি শিক্ষক ধর্মঘটে অংশ নেন।
যতক্ষন পর্যন্ত তাদের দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ এ আন্দোলন চলবে বলে জানান বাংলাদেশ এমপিওবঞ্চিত আইসিটি শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি মো. আশিকুর রহমান। তিনি বলেন, দেশের সকল জেলা থেকে আসা আইসিটি শিক্ষকরা অনাহারে, অতিকষ্টে, নিদ্রাহীনভাবে পরিবার পরিজনের মায়া ত্যাগ করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে অনেক শিক্ষক এখন অসুস্থপ্রায়। তবুও আমাদের দাবি আদায়ে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
আশিকুজ্জামান আরো বলেন, শিক্ষামন্ত্রী তাদের বলেছেন, ‘তার কাছে কোনো ফাইল আটকে থাকে না। আইসিটি শিক্ষকদের এমপিও-সংক্রান্ত কোনো ফাইল এখনও তিনি হাতে পাননি। তা ছাড়া সরকারের টাকায় শিক্ষকদের বেতন দিতে তার কোনো আপত্তি নেই। তবে এ জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভর করতে হয়।’
আইসিটি শিক্ষকদের এমপিও বিষয়ে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন বলেন, আইসিটি শিক্ষকদের যারা এখনও এমপিওবঞ্চিত, তাদের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সংশ্লেষবিষয়ক তথ্য তৈরি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এখন বাকি বিষয় মন্ত্রণালয় দেখবে।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া এক শিক্ষক বলেন, ইসলামের ইতিহাসে অনার্স ও মাস্টার ডিগ্রি অর্জনের পর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ে বিশেষ শিক্ষা নিয়ে পাঁচ বছর ধরে স্কুলে শিক্ষকতা করছেন তিনি। বাসায় তার স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। সবার মায়া ছেড়ে রুটি-রুজির জন্য তিনি ধর্মঘটে এসেছেন। তার মতো শতাধিক শিক্ষক একইভাবে দিনাতিপাত করছেন।
সরকার শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের আলোকে ‘৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ’ শ্রেণি পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেছে। এরপর ২০১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে, ২০১৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে সপ্তম শ্রেণিতে ও ২০১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে, ২০১৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে নবম শ্রেণিতে ও ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নামক নতুন বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত ও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান তিন বিভাগেই বিষয়টি বাধ্যতামূলক।
এরপর ২০১১ সালের নভেম্বরে এক পরিপত্রের মাধ্যমে সরকার আইসিটি শিক্ষকদের এমপিও স্থগিত করে। বছরের পর বছর ধরে এমপিওভুক্তি বন্ধ থাকায় বেতন-ভাতা ছাড়াই পাঠদান করে আসছেন এসকল শিক্ষক।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম শামীমুর রহমান বলেন, বর্তমান পেক্ষাপটে ‘আইসিটি’ সেক্টরকে সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিলেও ধুঁকে ধুঁকে চলছে আইসিটি শিক্ষা। কম্পিউটার শিক্ষকদের বেতন ভাতা না দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ করা সম্ভব নয়। অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেয়া আইসিটি শিক্ষকদের দাবি, চাকরিতে যোগদানের তারিখ থেকে তাদের এমপিও দিতে হবে।