শিওরক্যাশের যাতনা থেকে মুক্তি চান শিক্ষকরা - দৈনিকশিক্ষা

শিওরক্যাশের যাতনা থেকে মুক্তি চান শিক্ষকরা

মো. মাসুদুর রহমান |

১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গবন্ধু একযোগে সাইত্রিশ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬ হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেন। প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তিনি। এর মধ্যে মানসম্পন্ন প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণের জন্য আই সি টি বিষয়ে অধিকতর গুরুত্ব প্রদান করা হয়। দেওয়া হয় শিক্ষকদের বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ।

সব শিশুই যাতে শিক্ষার আওতায় আসে সেজন্য শতভাগ শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদান কার্যক্রম চালু করা হয়। ইতোপূর্বে উপবৃত্তির টাকা বিতরণ করা হতো ব্যাংকের মাধ্যমে। শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত উপবৃত্তি কার্ডে তথ্য সংযুক্ত করে বিতরণ করা হতো এই উপবৃত্তির অর্থ। এভাবে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের জুন মাস পর্যন্ত উপবৃত্তির অর্থ বিতরণ করা হয়েছিল।

২০১৬ খ্রিস্টাব্দের জুলাই থেকে ডিসেম্বর এই ছয়মাসের এক কিস্তির অর্থ প্রদান করা হয় রুপালী ব্যাংকের শিওরক্যাশের মাধ্যমে। তাই প্রয়োজন হয়েছিল প্রতিজন সুবিধাভোগীর জন্য শিওরক্যাশের একাউন্ট খোলার। রুপালী ব্যাংক শিওরক্যাশের একাউন্ট খুলতে শিক্ষকদেরকে কাজে লাগিয়েছেন। দেখা গেছে, শিক্ষকরা শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রেখে ৪/৫ দিন ধরে এক নাগারে এই শিওরক্যাশের একাউন্ট খোলার ফরম পূরণ করছেন। এর পরে আছে টপশিট তৈরি ও সংশোধন। এ এক মহা কর্মযজ্ঞ। অত:পর বিতরণ করা হয়েছিল জুলাই-ডিসেম্বর কিস্তির উপবৃত্তির টাকা।
শিওর ক্যাশের মাধ্যমে উপবৃত্তি প্রদানে অনেক বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়। ২০ থেকে ২৫ ভাগ অভিভাবক এখন পর্যন্ত গত ছয় মাসের টাকা মোটেও পাননি। আবার গত কয়েকদিন থেকে শুরু হয়েছে নতুন বিড়ম্বনা। ভুলে ভরা শিওর ক্যাশের তথ্য আপডেট করতে হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষকরা। সকাল থেকে শুরু করে বিকেল পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে শ্রম দিয়ে সেই তথ্য নির্দিষ্ট ছকে সংযোজন ও সংশোধন করতে হয় তাদের। আবার দু’এক দিন পর পর নতুন নতুন ফরম্যাটে তথ্য প্রদান, যেন এক বিরক্তিকর অবস্থা। এ বিষয়ে বিভিন্ন তথ্যের জন্য শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করলে তারা কিছুই বলতে পারেন না। এভাবে ছোটাছুটি আর হয়রানির শিকার হতে হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের।

বহুবছর যাবৎ শিক্ষকগণ শ্রেণি পাঠদান কার্যক্রম বহির্ভুত কিছু কাজে যুক্ত। যেমন- ভোটার তালিকা হালনাগাদ, আদমশুমারি, অর্থনীতি শুমারি, কৃষিশুমারি, মৎস্যজীবী শুমারি, বিস্কুট বিতরণ ও জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ কার্যক্রম ইত্যাদি। অথচ শিক্ষকদেরকে শ্রেণিতে পাঠদানে ব্যস্ত থাকার কথা।

সারাদেশে যখন দাবি উঠছে পাঠদান বহির্ভূত কাজ থেকে বিরত রাখার। ঠিক সেই সময়ে বোঝার ওপর শাকের আটির মতো শিক্ষকগণের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে শিওরক্যাশের তথ্য পূরণ যা শিক্ষকদের জন্য সত্যি এক অবর্ণনীয় যন্ত্রণা। তারা মুক্তি পেতে চান এই যাতনা থেকে।

মো. মাসুদুর রহমান : শিক্ষক, সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা। 

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0061819553375244