শিক্ষকদের জন্য বেতন আমের চারা ও মুরগি - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষকদের জন্য বেতন আমের চারা ও মুরগি

যশোর প্রতিনিধি |

শিক্ষকদের বেতন হিসেবে টাকা-পয়সা দেওয়ার রেওয়াজ তো সব জায়গায়ই চলমান। সেখানে ব্যতিক্রম কেবল যশোর সদরের ‘জ্ঞানের মেলা’। জ্ঞানের মেলার শিক্ষকদের বেতন হিসেবে দেওয়া হলো আমের চারা এবং মুরগি। শুধু শিক্ষকদের নয়; শিক্ষার্থীদেরও দেওয়া হলো উন্নত জাতের আমের চারা আম্রপালি। তবে সেটা বেতন হিসেবে নয়, উপহার হিসেবে।

যশোর সদর উপজেলার হামিদপুর গ্রামে গত শুক্রবার শিক্ষা সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সেখানেই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের হাতে যথাক্রমে বেতন ও উপহার হিসেবে গাছের চারা তুলে দেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল।

এ সময় উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সেতারা খাতুন, শিক্ষাবিদ ড. সবুজ শামীম হাসান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম, সমাজসেবক গোলাম মোস্তফা প্রমুুখ উপস্থিত ছিলেন। টাকার বদলে শিক্ষকরা এমন অভিনব বেতন পেয়ে দারুণ খুশি। তাঁরা শপথ নিলেন যে করেই হোক গাছগুলোকে বাঁচিয়ে রাখবেন। নিজেদের গ্রামকে সবুজে আচ্ছাদিত করবেন।

শুধু তা-ই নয়; যৌতুক, বাল্যবিয়ে আর নিরক্ষরতাকে গ্রাম থেকে বিদায় করবেন তাঁরা। গ্রামের সব মানুষও একই শপথ গ্রহণ করল।

এলাকার তরুণ কৃষিবিদ ইবাদ আলী নতুন এক শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে নিরক্ষরতা দূর করার জন্য মাঠে নেমেছেন। তাঁর উদ্ভাবিত স্কুলের কোনো নির্দিষ্ট স্থান নেই। নির্দিষ্ট সময় নেই। শিক্ষার্থীদেরও বয়সসীমা নেই। একজন শিক্ষক পাঁচজন শিক্ষার্থীকে তাঁর (ইবাদ আলীর) রচিত ‘গণশিক্ষার প্রথম পাঠ’ পড়িয়ে তাদেরকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করবেন। নিরক্ষরতা দূরীকরণ, বাল্যবিয়ে ও যৌতুক সমাজের এই অভিশাপগুলোকে তাড়ানোর জন্য ইবাদ আলী জ্ঞানের মেলা সমাজকল্যাণ সংস্থা নামের একটি সংগঠন গড়ে তুলেছেন। সংগঠনটি এরই মধ্যে ৯৭৭ জনকে নিরক্ষরতামুক্ত করেছে। বর্তমানে হামিদপুর দক্ষিণ পাড়ার ৯৭ জন নানা বয়সী শিক্ষার্থীকে ২৩ জন শিক্ষক বিদ্যা শিক্ষা দিচ্ছেন। এই শিক্ষকদের প্রত্যেককে উন্নত জাতের মুরগি ও আম্রপালির চারা বেতন হিসেবে দেওয়া হলো।

শুধু এ মাসেই নয়, গত এক বছর ধরে এরকম অভিনব বেতন দিচ্ছেন ইবাদ আলী।

এমন অভিনব বেতন পেয়ে রাণী খাতুন ও তন্দ্রা নামের দুই শিক্ষকের ভাষ্য, ‘আমরা মুরব্বিদের লেখাপড়া শিখাচ্ছি। তাঁদেরকে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করছি। আমাদের মুরগি আর আমের চারা বেতন দেওয়ায় আমরা খুবই খুশি। ’ শিক্ষার্থী কৃষক আবু বক্কার (৫০), গৃহিণী আছিয়া বেগম (৪৫) বলেন, ‘আগে জানতাম লেখাপড়া খুব কঠিন। এখন মনে হচ্ছে এর চেয়ে সহজ আর কিছু নেই। আমরা শিক্ষিত হচ্ছি। ’ অভিনব এ পদ্ধতির আবিষ্কারক ইবাদ আলী বলেন, ‘আমার নিজের বেতনের টাকা আর বন্ধুবান্ধবের দেওয়া টাকায় নিরক্ষরতা দূর করার জন্য কাজ করছি। কম টাকায় অল্প সময়ের মধ্যে আমার এই পদ্ধতিতে দেশ থেকে নিরক্ষরতা দূর করা সম্ভব। এর জন্য ছয় মাস ধরে কোর্স নির্ধারণ করে থাকি। অর্থাত্ কোনো একটি গ্রাম বা এলাকাকে লক্ষ্য করে ছয় মাসের কোর্স শুরু হয়। এর মধ্যে ওই গ্রাম বা এলাকাটি নিরক্ষরতামুক্ত করণের প্রক্রিয়া চলে। পাশাপাশি আমি পুষ্টিহীনতা দূর করার জন্য উন্নত জাতের মুরগি ও আমের চারা (আম্রপালি) শিক্ষকদের বেতন হিসেবে দিয়েছি। যা তাঁদের খুবই কাজে লাগবে। ’

হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.026055097579956