বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের আর ৬০ দিনের বেশি সাময়িক বরখাস্ত করে রাখা যাবে না। উচ্চ আদালতের নির্দেশে রোববার (৬ আগস্ট) শিক্ষা মন্ত্রণালয় চিঠি দিয়ে সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি জানিয়েছে। কোন শিক্ষককে ৬০ দিনের বেশি বরখাস্ত করা হলে তাকে মাসিক বেতন ভাতা (এমপিও) প্রদান করার নির্দেশনা রয়েছে চিঠিতে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব দৈনিকশিক্ষাকে জানান, গাইবান্ধা জেলার একটি স্কুলের শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করে ম্যানেজিং কমিটি। ওই সিদ্বান্তের বিরুদ্ধে শিক্ষক হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। আদালত শিক্ষকের সাময়িক বরখাস্তের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। একই সঙ্গে একটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আদালত। তাতে বলা হয়েছে, ৬০ দিনের বেশি কোন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা যাবে না। এর বেশি বরখাস্ত করা হলে তাকে বেতন ভাতা দিতে হবে। আদালতের রায় বাস্তবায়ন করতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর ও সব শিক্ষাবোর্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার উজান তেওড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নূরুন নবী সরকারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তিনি এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। যার ক্রমিক নং ৩৬৫৭/২০১৫। আদালত তার পক্ষে রায় দেন।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তন, প্রশ্নফাঁস, নকল সরবরাহ, শিক্ষার্থীদের হয়রানীসহ নানা ধরণের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষকদের সাময়িক বরখাস্ত করে। আবার কখনো প্রতিষ্ঠান প্রধানের মন যোগাতে না পারলেও সামান্য অজুহাত বড় করে দেখিয়ে বরখাস্ত করা হয়। একই সঙ্গে তাদের বেতন ভাতার সরকারি অংশ স্থগিত করে রাখে। বছরের পর বছর সাময়িক বরখাস্ত করে ঝুলিয়ে রাখা হয় শিক্ষকদের। এতে করে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে চরম মানবেতর জীবন যাপন করেন। আদালতের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে শিক্ষকরা এখন ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাবেন। যদি অভিযোগ গুরুতর হয় তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিক্ষককে চূড়ান্ত ভাবে চাকরিচ্যুত করতে হবে। না হলে সাময়িক বরখাস্ত প্রত্যাহার করতে হবে।
রাজধানীর কয়েকটি স্কুলে বছরের পর বছর সাময়িক বরখাস্ত রয়েছেন কয়েকজন শিক্ষক। মন্ত্রণালয়ের এমন আদেশে যারপরনাই খুশী হয়েছেন তারা।