শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার পণ্ডিতসার উচ্চ বিদ্যালয়ের বাংলা বিষয়ের শিক্ষক গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে আজ শনিবার সকালে পণ্ডিতসার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও টায়ার জ্বালিয়ে নড়িয়া-পণ্ডিতসার সড়ক অবরোধ করে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়রাও একাত্মতা প্রকাশ করে ওই শিক্ষকের অপসারণ দাবি করেছে।
খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নানের নেতৃত্বে নড়িয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনার পর বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি সভা করে শিক্ষক গোলাম মোস্তফাকে সাময়িক বরখাস্ত করে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়। বিদ্যালয়ের সভাপতি গোলাম মোর্সালীনের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আ. হান্নান, প্রধান শিক্ষক মো. মোসলেহ উদ্দিন, নড়িয়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. জাহাঙ্গীর হোসেনসহ শিক্ষকরা। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
বিদ্যালয় সূত্র ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানায়, ৭৬তম স্কুল-মাদ্রাসা গ্রীস্মকালীণ ফুটবল প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলা বৃহস্পতিবার বিকেলে শরীয়তপুর স্টেডিয়াম মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এতে পণ্ডিতসার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা (খেলোয়াড়সহ) চূড়ান্ত খেলায় অংশগ্রহণ করতে বাসযোগে শরীয়তপুর যাচ্ছিল।
পথে উৎসুক খেলোয়াড়দের মধ্য থেকে কেউ একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (বাংলা) মো. গোলাম মোস্তফাকে কটাক্ষ করে হাসাহাসি করে।
এর জের ধরে খেলা শেষে শরীয়তপুর থেকে বাড়ি ফেরার পথে নড়িয়া উপজেলার মানাখান নামক স্থানে ওই শিক্ষক গোলাম মোস্তফার বাড়ির সামনে খেলোয়াড়দের বাস পৌঁছালে তিনি স্থানীয় ক্যাডার রমজান ও রনি দালালসহ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে দেশীয় অস্ত্র রামদা ছেনদা, লাঠিসোঁটা ও হকিস্টিক নিয়ে বাসের গতিরোধ করেন। এ সময় বাসে থাকা খেলোয়াড়সহ অন্যদের বেদম মারপিট করে তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল, ঘড়ি, আংটিসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যান। এ ঘটনায় মমিন মৃধা, রিগান বেপারী, অপু ছৈয়াল, শুভ, শিপন, রবিন, রাকিবসহ ১১ জন খেলোয়াড় ছাত্র আহত হয়। আহত খেলোয়াড় (ছাত্র) শুভ বলে, “আমরা শরীয়তপুর থেকে বাড়ি ফেরার পথে মোস্তফা স্যার বাড়ির লোকজন দিয়ে আমাদের বাস থামিয়ে মারপিট করেছে। তাই আমরা তার অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছি।
শিক্ষক গোলাম মোস্তফার দাবী, ছাত্রদের মারপিটের সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তিনি বলেন, “যারা ছাত্রদের মারপিট করেছে তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য আমি অনুরোধ করছি। ” প্রধান শিক্ষক মো. মোসলেহ উদ্দিন বলেন, “আমরা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি সভা করে শিক্ষক গোলাম মোস্তফাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছি। এ ছাড়া কমিটির সদস্য কাঞ্চন মীরকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সভাপতি মো. গোলাম মোর্সালীন বলেন, “এ ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ” অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নড়িয়া সার্কেল মো. আ. হান্নান বলেন, “পরিস্থতি আপাতত শান্ত রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। “