যশোর আদ্-দ্বীন সখিনা মেডিকেল কলেজের ইন্টার্নি কো-অর্ডিনেটর ও সহকারী অধ্যাপক রিচমন্ড রোলান্ড গোমেজের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। যৌন হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের এই অভিযোগ তুলে এক ইন্টার্নি চিকিৎসক সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
ইন্টার্নি চিকিৎসক শারমিন সুলতানা অভিযোগ করেছেন, অশালীন প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তার কোর্স সম্পন্ন করতে দেয়া হবে না বলেও হুমকি দেয়া হচ্ছে। রোববার প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন নির্যাতনের শিকার ইন্টার্নি চিকিৎসক শারমিন সুলতানা। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগও দাখিল করেছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ও থানার অভিযোগে ইন্টার্নি চিকিৎসক শারমিন সুলতানা দাবি করেন, আদ্-দ্বীন সখিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্নি কো-অর্ডিনেটর সহকারী অধ্যাপক রিচমন্ড রোলান্ড গোমেজ অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনের জন্য তাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় রিচমন্ড তাকে উত্ত্যক্ত করে মানসিকভাবে অসুস্থ করে তুলেছেন। শিক্ষকদের হাতে ৫০ শতাংশ নম্বর থাকায় তাকে কোর্স সম্পন্ন করতে দেয়া হবে না বলেও হুমকি দেয়া হয়েছে।
ইন্টার্নি চিকিৎসক শারমিন সুলতানা জানান, যশোর আদ্-দ্বীন সখিনা মেডিকেল কলেজের প্রথম ব্যাচের ২৬ জন পাস উত্তীর্ণ হয়েছে। তিনি এদের একজন। গত ২৫ এপ্রিল তিনি ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করতে গেলে যোগদানপত্র গ্রহণ করা হয়নি। কয়েক দফা ঘুরিয়ে পরে গত ৮ মে তাকে যোগ দিতে দেয়া হয়। তখন থেকেই নির্যাতন শুরু হয়।
ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ক্লিনিক্যাল ইন্টার্নিতে দুই দিন অনুপস্থিত থেকেও স্বাক্ষর করায় এর সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করেন ডা. রিচমন্ড। অনুপস্থিতির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে গত ৩ আগস্ট দুপুরে ডা. রিচমন্ড তাকে রুমে ডেকে অশালীন প্রস্তাব দেন। এ সময় তাকে লাঞ্ছিতও করার চেষ্টা করেন। এতে অসুস্থ হয়ে পড়লে শারমিন সুলতানার মা-বাবা খবর পেয়ে হাসপাতালে যান। এ সময় ওই শিক্ষক তার মা-বাবাকেও লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ। সংবাদ সম্মেলনে ডা. শারমিন সুলতানার বাবা আলাউদ্দিন, স্বামী খন্দকার মুজাহিদুল ইমাম উপস্থিত ছিলেন। তবে অভিযুক্ত শিক্ষক দেশের বাইরে ইন্দোনেশিয়ায় থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আদ-দ্বীন সখিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. খান শাকিল আহমেদ বলেন, শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ সঠিক নয়। ওই ইন্টার্নি চিকিৎসক কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিল। পরে তিনি ওই শিক্ষকের কাছে গিয়ে ক্ষমা চান। শিক্ষক তাকে আশ্বাস দেন পরে তার বিষয়টি দেখবেন। কিন্তু ইন্টার্নি চিকিৎসক সেখানে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলেন। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ইন্টার্নি চিকিৎসকের বাবা এসে শিক্ষক রিচমন্ডকে মারপিট করেন।
তিনি আরও বলেন, যদি ওই শিক্ষক জিম্মি করে যৌন হয়রানি করে থাকেন তাহলে এতদিন কেন অভিযোগ করেননি। অভিযোগ করলে তো তদন্ত করে ব্যবস্থ নিতাম। এখন কেন তিনি অভিযোগ করছেন? ওই চিকিৎসক গত শুক্রবার ইন্দোনেশিয়া গেছেন বলে জানান অধ্যক্ষ।
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি একেএম আজমল হুদা জানান, ইন্টার্নি চিকিৎসকে যৌন হয়রানির অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সত্যতা পেলে মামলা রেকর্ড করা হবে।