চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদরের নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজটি দীর্ঘদিন ধরেই মারাত্মক শিক্ষক সংকটের মধ্যে রয়েছে। আছে শ্রেণিকক্ষের সংকটও। এর ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে এখানকার শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া।
কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম মনজুর রেজা বলেন, এমনিতেই সৃষ্ট পদের সংখ্যা কম। প্রতিটি স্নাতক সম্মান বিষয়ে নিয়মানুযায়ী ১০ জন করে শিক্ষক থাকার কথা। এ ছাড়া যে সব বিষয়ের স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) রয়েছে, সেগুলোতে ১২ জন করে শিক্ষক থাকার কথা। কিন্তু এ কলেজে কোনো বিষয়েই চার থেকে পাঁচজনের বেশি শিক্ষক নেই। ব্যবস্থাপনা বিভাগ চলছে মাত্র একজন শিক্ষক দিয়ে। অর্থনীতি ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রতিটিতে রয়েছেন মাত্র দুজন করে শিক্ষক। এ তিনটিসহ ১৪টি বিষয়ে সম্মান ও তিনটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পাঠদান চালু রয়েছে কলেজটিতে।
অধ্যক্ষ আরও বলেন, ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজে ১০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে ৮২ জন শিক্ষকের পদ থাকলেও আছেন মাত্র ৫১ জন। রয়েছে শ্রেণিকক্ষেরও সংকট। শিক্ষার্থীদের ফলাফল বিবেচনায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোর মধ্যে রাজশাহী বিভাগে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অবস্থান সপ্তম।
ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র অহিদুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য বিভাগের তুলনায় এ বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। কিন্তু বর্তমানে একজন মাত্র শিক্ষক ও দুজন অতিথি শিক্ষক দিয়ে চালানো হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম। এ বিষয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পাঠদানের ব্যবস্থা থাকলেও শিক্ষকের অভাবে নিয়মিত ক্লাস হয় না। এ ছাড়া নির্দিষ্ট কোনো শ্রেণিকক্ষও নাই। শিক্ষার্থীদের এক ভবন থেকে অন্য ভবনে ছোটাছুটি করে ক্লাস করতে হয়।
একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী নার্গিস পারভিন বলেন, প্রয়োজনীয় শিক্ষক তো নেইই। যে তিনজন আছেন তাঁদের আবার দুজন অতিথি শিক্ষক। এতে শিক্ষার্থীদের প্রোজেক্ট, প্রেজেন্টেশন ইত্যাদি পেতে ও দিতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুস সালাম বলেন, এ বিভাগে পদ রয়েছে ছয়টি—একজন করে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপক এবং প্রভাষকের তিনটি পদ। কিন্তু আছেন তিনিসহ দুজন অতিথি শিক্ষক। এতে পাঠদান কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত শিক্ষা থেকে।
হিসাববিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রবিউল ইসলাম বলেন, শিক্ষকের অভাবে নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে না। একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী ফাহিমা আক্তার বলেন, ‘প্রথম বর্ষ থেকেই শিক্ষকের সংকটে ভুগছি। চতুর্থ বর্ষের যে কয়টা ক্লাস পেয়েছি তার বেশির ভাগই অতিথি শিক্ষক দিয়ে করানো হয়েছে। এ ছাড়া শ্রেণিকক্ষের সমস্যা তো আছেই।’