শিক্ষাভবনে কে কতদিন কর্মরত: পর্ব-২ - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষাভবনে কে কতদিন কর্মরত: পর্ব-২

নিজস্ব প্রতিবেদক |

২০১০ খ্রিস্টাব্দ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের বেসরকারি কলেজ শাখায় কর্মরত মো: মেজবাহ উদ্দিন। পদটি সহকারি অধ্যাপকের। কিন্তু অধ্যাপক হয়েও ওই পদে আসীন রয়েছেন। নজিরবিহীনভাবে তার হাতে দেয়া হয়েছে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের কাজ। অতীতে এই কাজটা করেছে উপ-পরিচালক (প্রশাসন)। ২০১০ খ্রিস্টাব্দের আগে মেজবাহ উদ্দিনের পদায়ন কোথায় ছিলো তা লেখা হয়নি সম্প্রতি পূরণকৃত ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো তথ্যছকে। অথচ ওই তথ্যছকটিকে ভিত্তি ধরে চলতি ও আগামী সপ্তাহে কয়েকদফা বদলির আদেশ জারি হতে পারে বলে কানাঘুষা চলছে।

অধিদপ্তরের সাবেক সফল মহাপরিচালক অধ্যাপক মো: নোমান উর রশীদ মেজবাহর দুর্নীতি ও অনিয়ম চিহ্নিত করেন। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয় তদন্ত প্রতিবেদনে। শাস্তি না হলেও কলেজে বদলি করা হয় বি সি এস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজের শিক্ষক মেজবাহকে। কিন্তু শিক্ষা প্রশাসনের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ‘জালালী’ হাতের স্পর্শে মেজবাহকে কলেজে যেতে হয়নি। ওই আদেশ বাতিল করা হয়। মেজবাহ এখনও টিকে আছেন শিক্ষা অধিদপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ উপ পরিচালক পদে।

‘বাগেরহাট-খুলনা-চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়-এন্টি আওয়ামী লীগ এলিমেন্টভুক্ত ও মোল্লা ইজভুক্ত অনুসারী ড. মোহাম্মদ মোস্তফা কামালকে বসানো হয়েছে সরকারি কলেজ শাখার উপ-পরিচালক পদে। এর আগে ওই পদ থেকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে সরিয়ে দেয়া হয় আবু সুলতান মো: এ কে সাব্রীকে। সরকারি কলেজের অন্যান্য অপেক্ষাকৃত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সহযোগী অধ্যাপকদের বঞ্চিত করে ইতিহাসের শিক্ষক মোস্তফা কামালকে সম্প্রতি অধ্যাপক করা হয়েছে জালালী হাতের জাদুতে! ২০১৫ ও ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে কয়েকমাস কুমিল্লাবোর্ডের পরিদর্শক থাকাকালে বিস্তর অভিযোগ থাকা মোস্তফা কামালকে অধিদপ্তরের কলেজ শাখার উপ-পরিচালক পদে বসিয়ে জাতীয়করণকৃত কলেজের ‘ননী-মাখন’ খাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয় মর্মে বলাবলি হয় শিক্ষা প্রশাসনে। জাতীয়করণের তালিকাভুক্ত কলেজ পরিদর্শন ও শিক্ষক-কর্মচারীদের নানাবিধ বিষয়ের ফাইলে সর্বাধিক আগ্রহ মোস্তফা কামালের! শিক্ষা ক্যাডারের পদোন্নতির কাজের তুলনায় বেশি আগ্রহ জাতীয়করণের কাজে। ২৮৫ কলেজ অধ্যক্ষদের সংগে ভাল যোগাযোগ তার। ঢাকায় একটি ফ্ল্যাট কেনার টাকা নিয়ে ঘুরছেন মর্মে কানাঘুষা চলছে। জালালী হাতের একই বিশ্ববিদ্যালয, মিরপুরের একই বাডী ও খুলনার একই কলেজে চাকরির অভিজ্ঞতা রয়েছে কামালের।

মো: মান্নান চৌধুরীর দূর্ব্যবহারের কারণে প্রশিক্ষণ শাখার পরিচালক তার নিজ পদ ছেড়ে কলেজে বদলি হয়েছেন সম্প্রতি। গতমাসে দৈনিকশিক্ষায় মান্নান চৌধুরীর কর্মকা- নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর মান্নান ছুটে যান আগারগাওয়ের একটি অফিসে। সেখানে সাবেক একজন শিক্ষাসচিবের কাছে নিজেকে সৎ হিসেবে বর্ণনা করে এসেছেন মান্নান। এলএসবিই প্রকল্পের কেনাকাটা সংক্রান্ত বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয় মান্নানকে। কিন্তু মান্নান ওই নোটিশের জবাব না দিয়ে দৌড় দেন ‘জালালী’ হাতের স্পর্শ পেতে। সারাদেশের সরকারি কলেজে গণিতের শিক্ষকের হাহাকার হলেও গণিতে সহকারি অধ্যাপক মান্নান প্রশিক্ষণ শাখার সহকারি পরিচালক পদে রয়েছেন ২০১৪ থেকে। পদটি প্রভাষকের। নিন্মপদে কম বেতনে চাকরি কেন করেন মান্নান? কী মধু? এমন প্রশ্ন সবার মুখে মুখে। ২০১৪’র আগে মান্নান কোথায় ছিলেন সেই তথ্য নেই।
খুরশীদ আলমকে গুরুত্বপূর্ণ উপ-পরিচালক পদে বসানো হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারিতে। তার আগে চার বছর অধিদপ্তরের কর্মাশিয়াল এডুকেশন সেলে ছিলেন। কোনও কাজ ছিলো না প্রায় দুই বছর । বসে বসে জামাতী পত্রিকা পড়তেন খুরশীদ। তারও আগে ২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত ওএসডি থেকে সংযুক্ত ছিলেন তিনি। ক্যামব্রিয়ানে এক তদন্তে গিয়ে ভাগ্য খুলে যায় খুরশীদের। তদন্ত প্রতিবেদন অভিযুক্তদের পছন্দ মতো দেয়া হয়। ফ্ল্যাটের মালিক বনে যান খুরশীদ! খুরশীদের মাথায় বোলানো রয়েছে ‘জালালী’ হাত! অধিদপ্তরাধীন প্রকল্পের যাবতীয় অনুষ্ঠানের কেনাকাটার কাজ খুরশীদের হাতেই হয়।

শতকোটি টাকার কেনাকাটার কাজে নিয়োজিত অর্থ  ও ক্রয় শাখার মোহাম্মদ আনিছুর রহমান ও ড. ফারহানা বেগম। আনিছ বর্তমান পদে এসেছেন ২০১৬-তে। তার আগে কোথায় কতদিন ছিল তা উল্লেখ্ নেই।

নিজ কক্ষের কম্পিউটার চুরির তদন্তে দোষী করা হয় অধিদপ্তরের তিনজন আনসারকে। কিন্তু ২০১৪ থেকে সহকারি পরিচালক ও জাতীয়কৃত শিক্ষক ফারহানা নির্দোষ! কান্নাভেজা কন্ঠে আল্লাহর কাছে বিচার দেন তিন আনসার সদস্য।

আরও পড়ুন

শিক্ষা ভবনে কে কত দিন কর্মরত: পর্ব-১

 

পরবর্তী কিস্তি আগামীকাল

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032958984375