শিক্ষামন্ত্রী সমীপে, প্রসঙ্গ এমপিওভুক্তকরণ - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষামন্ত্রী সমীপে, প্রসঙ্গ এমপিওভুক্তকরণ

মো: আলমগীর কবির |

আমরা জানি শিক্ষা জাতির মেরুদ-। আর শিক্ষিত জনগন দেশের সম্পদ। শিক্ষার এই বিকাশকরণে শিক্ষকতা পেশায় কর্মরত শিক্ষকেরা সমাজের সম্মানী ব্যক্তি। কিন্ত দু:খের বিষয় যখন দেখা যায় শিক্ষকেরা রাস্তায় আন্দোলন করছে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার জন্য, তখন কি দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ তা দেখে না? একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে তা থেকে যায় চিরদিন; কিন্তু শিক্ষক থাকেন একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত । এরপরও একজন শিক্ষকের কাছে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনেক বড়। বিশেষ করে যে প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে একজন শিক্ষক এর সাথে জড়িত থাকে। প্রতিষ্ঠানের সাথে গভীর ভালবাসা, মায়া-মমতার মাধ্যমে একটি নামহীন সম্পর্ক হয়ে যায়। সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি দীর্ঘদিন চলার পর শুধুমাত্র এমপিওভুক্তি না হওয়ার কারনে ধুঁকে ধুঁকে বিলীন হয়ে যায় তাহলে এর চেয়ে দু:খজনক সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের কাছে আর কিছুই নেই। এটা ভুক্তভোগী ছাড়া কেই জানবে না।

উল্লেখ্য আমরা জানি স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের দান আর প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো, চেয়ার- বেঞ্চ,শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়ার উপকরণসহ যাবতীয় উপকরণ প্রথমত স্থানীয় ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তায় গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে সরকারী পষ্ঠপোষকতায় সরকারী শিক্ষা অফিস কর্তৃক পরিদর্শন/ অডিট করে প্রতিষ্ঠানটির স্থান, প্রয়োজনীতা, ভুমি, অবকাঠামো যাবতীয় তথ্যাদি বিবেচনা করে রেজিষ্ট্রেশন তথা পাঠদান করার অনমতি প্রদান করেন। পরবর্তীতে কিছুদির পরেই প্রতিষ্ঠানটি সরকারী এমপিওভুক্তিকরণ হয়ে যেত। এটাই নিয়ম, এভাবেই চলে আসছিল দেশের বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠার গড়ে ওঠার পদ্ধতি।

এভাবে সরকারী নিয়ম মেনে, শিক্ষামন্ত্রণালয়ের অনুমোদনে বর্তমানে দেশে প্রায় ২৬,০০০ এমপিওভুক্ত  বেসরকারী স্কুল, কলেজ আছে। একই নিয়মে গড়ে ওঠা, সরকারী অনুমোদন পাওয়া দেশে আরও ৭ সাত হাজার নন-এমপিওভুক্ত স্কুল/কলেজ চলমান থাকলেও বর্তমান সরকার গত ২০১০ সালে নামে মাত্র কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্ত ঘোষনা করে অনিবার্য কারন:বশত এমপিওকরণ বন্ধ করে দেন। সেই থেকে এখন ২০১৬ সালের শেষ পর্যায় চলছে এমপিওভূক্তির কোন খবর নেই। দীর্ঘ এই ৬/৭ বছর থেকে নন-এমপিওভুক্ত এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীরা অর্থ কষ্টে অত্যন্ত মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। শুধু তাই নয় এখন থেকে ১৫ (পনের) বছর আগে প্রতিষ্ঠিত অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে এমপিওভুক্ত হয়নি। এভাবে আর কত? অথচ সরকারী পৃষ্ঠপোষতায় দেশের কিছু বেসরকারী স্কুল/ কলেজ জাতীয়করন করা হচ্ছে । শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ হবে অত্যন্ত ভালো খবর; তাই বলে আগে এমপিওকরণ না করে জাতীয়কণে হস্তক্ষেপ বিষয়টি হাস্যকর। কেননা যেখানে এমপিওকরণ অভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, জীবিকার তাগিদে শিক্ষকরা তাদের পেশা পরিবর্তন করছেন; সেখানে কি আগে প্রয়োজন ছিল না এমপিওভুক্তিকরণের ঘোষনা? কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন?

পরিশেষে বিনীত নিবেদন করছি মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী  ও শিক্ষাসচিব মহোদয়কে এমপিওকরণে ভুক্তভোগী শিক্ষক কর্মচারীদের আর নিরাশ করবেন না; দেশের সর্বমোট ৭ হাজার নন-এমপিওভুক্ত স্কুল কলেজ আছে; এমপিওভুক্তির ঘোষণা দিন। এটাই শেষ ঘোষনা কেননা নতুন করে আর বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার অনুমতি নেই। অতএব বর্তমান প্রেক্ষাপট এবং সময়ের দাবী অনযায়ী নন-এমপিও বেসরকারী স্কুল/কলেজ এমপিওভুক্তিকরণ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপর্ণ। আশা করি উল্লিখিত সমস্যা সমাধানকল্পে এবং সার্বজনীন শিক্ষাকে সাধারন গ্রাম-গঞ্জের মানুষের দোরগোরায় পেীছানোর লক্ষ্যে এমপিওকরণ একটি জরুরী বিষয়। কেননা এটা শিক্ষক/কর্মচারীদের চাওয়া নয়; সমগ্র দেশের শিক্ষা সমাজের ন্যায্য অধিকার। আর এই অধিকারকে রক্ষা করা সেই দেশের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষের কর্তব্য।

বিনীত নিবেদক
মো: আলমগীর কবির
প্রভাষক (ইতিহাস ও সংস্কৃতি)
কামালের পাড়া কলেজ
পো: কামালের পাড়া
উপজেলাঃ সাঘাট
জেলা: গাইবান্ধা।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0049638748168945