কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার চরকাজাইকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোখছানা বেগমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। এর একটি অভিযোগ হচ্ছে, শিশুশিক্ষার্থীদের দিয়ে প্রধান শিক্ষক সন্তানের কাপড় কাচা থেকে শুরু করে রক্ষণাবেক্ষণে ব্যবহার করেন।
অভিযোগে জানা গেছে, গত ২০১৫ সাল থেকে বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় না। তবে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখিয়ে ভুয়া বিল-ভাউচারে প্রতিবছর সরকারি বরাদ্দ দুই হাজার করে টাকা উত্তোলন করেন প্রধান শিক্ষক। ২০১৬ সালে স্লিপে বরাদ্দ ৪০ হাজার টাকা প্রতিষ্ঠানের কোনো উন্নয়ন না করে ভুয়া বিল-ভাউচারে আত্মসাৎ করেন। প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির জন্য আসবাবপত্র বাবদ প্রতি বছর বরাদ্দ পাঁচ হাজার করে টাকা তুলে নেন। বন্যা পরবর্তী প্রতিষ্ঠান সংস্কারে ২০১৫ সালে এক লাখ টাকা এবং ২০১৭ সালে ৪০ হাজার টাকা সরকারিভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠান সংস্কারে এক টাকা খরচ না করে প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি ভাগাভাগি করে নেন।
প্রধান শিক্ষক রোখছানা ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৭৫ জন ভুয়া শিক্ষার্থী দেখিয়ে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ করেন। বর্তমানে ৩০ জনের মতো ভুয়া শিক্ষার্থী রয়েছে যাদের নামের বিস্কুট তুলে তিনি বাইরে বিক্রি করে দেন। বিদ্যালয়ের একটি স্টিলের শোকেস তিনি বাড়িতে নিয়ে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন। শিশুদের দিয়ে তাঁর সন্তানের কাপড় কাচা থেকে শুরু করে রক্ষণাবেক্ষণে ব্যবহার করেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক রোখছানা বেগম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে। শিক্ষকরা গোপনে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। সংস্কার, স্লিপ, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সরকারি বরাদ্দ পরিচালনা কমিটিকে নিয়ে যথাযথভাবে ব্যয় করা হয়েছে।’
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক একা একা কী করেন—আমাকেও জানান না। তবে সব অভিযোগ সত্য নয়।’ এই প্রতিষ্ঠানের সাব-ক্লাস্টারের দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল করিম বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের কিছু অনিয়ম-দুর্নীতি রয়েছে। বিষয়টি আমি শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।’