শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার বনাম ব্লু হোয়েল গেম - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার বনাম ব্লু হোয়েল গেম

মাছুম বিল্লাহ |

বর্তমানের ডিজিটাল যুগে ইন্টারনেট এখন আমাদের নিত্যজীবনের একটি অপরিহার্য উপাদান। তাই ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে কিভাবে নিরাপদ থাকা যায় সেটি এখন মুখ্য বিষয়গুলোর মধ্যে একটি। সবাই বিশেষ করে শিশু-কিশোররা যেন তাদের হাতে থাকা প্রযুক্তির মধ্য থেকে সেরাটা গ্রহণ করতে পারে সেজন্য নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ে সচেতনতা তৈরিকে দায়িত্ব বিবেচনা করে গ্রামীণফোন।গ্রামীণফোনবিষয়টি নিয়ে চারবছর যাবত কাজ করছে। গ্রামীণফোন বিশ্বাস করে যে, মানুষের মধ্যে ইন্টারনেট সুবিধা ছড়িয়ে দিয়ে সমাজের অসমতা দূর করা সম্ভব। প্রযুক্তির সর্বাপেক্ষা ব্যবহার এবং তা ব্যবহারের সুযোগ পাওযার ক্ষেত্রে যেসব বাঁধা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম ইন্টারনেটের অনিরাপদ ব্যবহার। বর্তমানকালের তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে লাভবান করেছে সত্যি কিন্তু সাথে সাথে তরুণদের একটি বড় অংশ এর অপব্যবহারের মাধ্যমে নিজেদের মেধা ও যোগ্যতার অপচয় করছে। আমরা যদি ফেসবুকের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাব তারা এক ধরনের একাকীত্বে ভুগছে, সমাজের বাস্তব ও মূলধারার সাথে এক ধরনের দূরত্ব তৈরি করে ফেসবুকের বন্ধু বান্ধবী, ফেইক বন্ধু ও বান্ধবীদের সাথে ঘন্টার পর ঘন্ট সময় কাটাচেছ।সারারাত এ কাজ করতে করতে অনেকেই ক্লাস মিস করে কিংবা ক্লাসে উপস্থিত হলেও মনোযোগী হতে পারেনা।প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ প্রবণতা যেন আরও বেশি।বিষয়টি তাদেরকে অলস, কর্মবিমুখ ও বিচিছন্নতার দিকে ঠেলে দিচেছ। ধীরে ধীরে তারা মাদকেও আসক্ত হয়ে পড়ছে।কেউ কেউ আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্রের সঙ্গেও জড়িয়ে পড়ছে, সন্ত্রাসবাদে জড়িয়ে পড়ছে। এসব বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, অভিভাবক ও জনপ্রতিনিধিদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। ডিজিটাল যুগে তাদের ভূমিকাও ডিজিটাল হতে হবে, শুধু ট্রাডিশনাল দায়িত্ব পালন করলে চলবে না।

ইন্টারনেটের ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি অনলাইনে শিশুদের নিরাপদ রাখার চ্যালেঞ্জ ও অনলাইনের হুমকি থেকে তাদের সুরক্ষিত রাখাটা এখন সময়ের দাবী। অতি সম্প্রতি আমরা ব্লু হোয়েল গেমসের কথা জানি। ব্লু হোয়েল গেমটি আবিস্কার করেছে ‘ফিলিপ বুদেকি’। ইন্টারনেট ভিত্তিক ’ব্লু হোয়েল’ গেমসের আলোচনা বাংলাদেশে কখন শুরু হয়? আমরা জানি ঢাকা সেন্ট্রাল রোডেল স্কুল পড়–য়া মেধাবী এক কিশোরীর আত্মহত্যার পর পরই ইন্টরভিত্তিক এই ভয়ংকর গেমটির কথা মুখে মুখে আলোচত হচেছ। যেসব কম বয়সী ছেলে-মেয়ে অবসাদে ভোগে, তারাই অসাবধনাবশত এই গেমে আসক্ত হয়ে পড়ে যদিও এটি ক্লান্তি বা বিষণœতা দূর করার গেম নয়। এই গেমে পঞ্চাশটি লেভেল রয়েছে। এক বা একাধিক কিউরেটর দ্বারা পরিচালিত এই গেমের শেষ লেভেলের টাস্কগুলো খুবই ভয়ংকর। এ সমাজে কোন দাম নেই, হতাশ এবং নিজের প্রতি কোন ভরসা নেই এ ধরনের তরুণ, কিশেরা কিশোরী আত্মহত্যার মধ্যদিয়ে এ পৃথিবী থেকে নিজকে সরিয়ে নিতে চায়। এ ধরনের তরুণ, কিশোর-কিশোরীদের মানসিক চিকিৎসার দরকার কিন্তু সেই জায়গাটি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দখল করেছে ইন্টারনেট হ্যাকার তথা ভয়ংকর কিউরেটরগন। তারা নিশ্চয়ই মেধাবী কিন্তু তাদের মেধা কাজে লাগানো হচেছ বিশ্বের চরম অকল্যাণে। শুনেছি অনেক ভয়ংকর সর্পের মাথায় নাকি মণিমুক্তা থাকে। তো তাতে কি লাভ?তারুণ্যের সময়, বয়স পরিবর্তনের সময় যে ছেলে বা মেয়েটি ঝুঁকিপূর্ন এবং হীনমন্যতায় ভোগে এবং মনে হতাশা এবং আত্মসম্মানে ঘাটতি রয়েছে তাকেই এ গেমগুলো টার্গেট করে। কারণ যারা এ ’ ব্লু-হোয়েলে মতো গেমগুলো তৈরি করে তারা জানে ওই হতাশাগ্রস্ত ছেলেমেয়েগুলো মস্তিস্ক কিভাবে দখল করতে হয়। মানুষের উৎসাহ, আকাঙ্খা, চাহিদা, যে লক্ষ্যের দিকে টেনে নিয়ে যায়, তার যে অন্তর্গত খোঁজ তা কীভাবে দখল করতে হয় তা তারা জানে।

এই গেমের পঞ্চাশটি ধাপের মধ্যে প্রথম দিকের কাজগুলো বেশ মজার ও আকর্ষণীয় হওয়ায় এই গেমের প্রতি সহজেই আকৃষ্ট হয়ে পড়ে কিশোর-কিশোরীরা। নিয়ম অনুযায়ী একবার এই গেম খেললে তা থেকে আর বের হওয়া যায় না। কেউ বের হতে চাইলেও তাদের চাপে রাখতে এমনকি পরিবারকে মেরে ফেলার হুমিকও দেয়া হয়ে থাকে । এই গেমের বিভিন্ন ধাপে রয়েছে ঝুঁকিপূর্ন চ্যালেঞ্জ। যেমন ব্লেড দিয়ে হাতে তিমির ছবি আঁকা, সারা গায়ে আঁচড় কেটে রক্ষাক্ত করা, কখনো ভোরে একাকি ছাদের কার্ণিশে ঘুরে বেড়ানো, রেল লাইনে সময় কাটানো, ভয়ের সিনেমা দেখাই ইত্যাদি। চ্যালেঞ্জ নেয়ার পর এসব ছবি কিউরেটরকে পাঠাতে হয়। সাতাশতম দিনে হাত কেটে ব্লু হোয়েলের ছবি আঁকতে হয়। একবার এই গেম খেললে কিউরেটরের সব নিদের্শই মানতে হয়। তার শেষের দিকের লেভেলে আত্মনির্যাতনমূলক বিভিন্ন টাস্ক সামনে এলেও কিশোর-কিশোরীরা এতটাই নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন যে, গেম ছেড়ে বের হতো পারেনা। তবে গেমের শেষ ধাপ অর্থাৎ পঞ্চাশতম ধাপে ইউজারদের এমন কিছু টাস্ক দেওয়া হয়, যা সর্র্ম্পূর্ন করা মানেই আত্মহত্যা। আর মাধমেই ঘটে গেমের সমাপ্তি। এই গেমিং অ্যাপ মোবাইলে একাবর ডাউনলোড করা হলে তা আর কোনভাবেই মুছে ফেলা যায় না। শুধু তাই নয়, ওই মোবাইলে ক্রমাগত নোটিফিকেশন আসতে থাকে যা ওই মোবাইলে ইউজারকে এই গেম খেলতে বাধ্য করে।গেমের ধাপ যত এগোয় ততই অংশগ্রহণকারীকে একান্ত সব তথ্য আর ছবি দিতে হয়, যা অংগ্রহনকারীর মাথাতেই আসেনা। এক সময় যখন অংশগ্রহনকারী খেলা থেকে বের হয়ে আসতে চায় তখন ওই তথ্য আর ছবিগুলো দিয়েই ব্লাকমেইল করা হয়। যার শেষ পরিণতি হয় আত্মহত্যা। বিশ্বে প্রায় হাজার খানে প্রাণ চলে গেছে এ খেলার আগ্রহ থেকেই। ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহারের প্রতি আমাদের শিক্ষার্থীদের, শিশু কিশোরদের কেন সচেতন করতে হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। এটি বর্তমান সময়ের দাবী।

দেশের ৪৯ শতাংশ স্কুল শিক্ষার্থী সাইবার বুলিং বা ইন্টারনেটে অশোভন বার্তা পাওয়ার মতো ঘটনার শিকার হচেছ। দেশের শীর্ষ সেলফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের সিংহভাগ শেয়ারের মালিক টেলিনর। এই প্রতিষ্ঠানটি সৃত্রে জানা যায় যে, বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলোয় ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী ১ হাজার ৮৯৬জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ইন্টারনেট বিষয়ক জ্ঞান নিয়ে জরিপ চালানো হয়। এর ভিত্তিতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। টেলিনরের হেড অব সোস্যাল রেসপন্সিবিলিটি ওলা জো বলেন, নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহারের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে টেলিনর। বিশেষত শিশু ও তরুণদের মধ্যে এটির গুরুত্ব রয়েছে। টেলিনরের দেশভিত্তিক এ গবেষণা ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রতি মা-বাবা ও শিক্ষকদের নিরাপদ ইন্টারনেটের গুরুত্ব বোঝার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে। পাশাপাশি এ গবেষণা সম্ভাবনা, মা-বাবাদের শিশুদের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা ও এ নিয়ে তাদের পরামর্শ দেয়ার বিষয়ে উৎসাহ জোগাবে। এর মাধ্যমে মূল বার্তাগুলা হচেছ–(ক) সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক গড়ে ইন্টারনেটের বিপজ্জনক দিকগুলো তাদের জানাতে হবে। (খ) নিজের পাসওয়ার্ড কাউকে বলা যাবে না।(গ) নিয়মিত প্রাইভেসি সেটিং পরীক্ষা ও নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত (ঘ)অপরিচিতজনদের সাথে চ্যাট করা বন্ধ করতে হবে।বর্তমানে সমাজে যেটি হচেছ শিশুরা খেলাধুলা করেনা, আত্মীয়স্বজনের সাথে কথা বলেনা, সারাক্ষণ মোবাইল নিয়ে বসে থাকে।এ থেকে তাদের বেড়িয়ে আসতে হবে। ইন্টারনেট আমাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক অবদান রাখছে।ইন্টারনেটের ব্যবহার জিডিপিতে ভূমিকা রাখছে। বিশ্বের মোবাইল ব্যবহারকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ন অবস্থানে আছে।

শিশুদের ইন্টারনেটে সহজে প্রবেশাধিকারের কারণে মা-বাবার কাছে আলোচিত ও শঙ্কার একটি বিষয় হচেছ সাইবার বুলিং। বাংলাদেশের ৪৯ শতাংশ স্কুল শিক্ষার্থীর একই ব্যক্তি দ্বারা উৎপীড়নের শিকার হওয়া অথবা অনলাইনে উত্যক্ত হওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী নারীদের মধ্যে ৭৩ শতাংশ নানা ধরনের সাইবার অপরাধের শিকার হচেছ বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। তিনি জানান, ৪৯শতাংশ স্কুল শিক্ষার্থী সাইবার হুমকির শিকার।তবে ২৩ শতাংশই অভিযোগ করেনা।তিনি ছাত্রছাত্রীদের ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় অজানা কারু’ ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট’ গ্রহন না করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, সমস্যা হলে তা দ্রুত অভিভাবকদের জানাতে হবে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে কিছু পোস্ট করাই স্মার্টনেস নয়, স্মার্টনেস হচেছ নিজকে নিরাপদ রাখা। ইন্টারনেটের দুটো দিক আছে-একটি গঠনমূলক, অপরটি ধ্বংসাত্মক।গঠনমূলক দিকটি শিক্ষার্থীদের সমৃদ্ধ করবে, জ্ঞানের পরিধি বাড়ানোর জন্য অবশ্যই ইন্টারনেটের ব্যবহার প্রয়োজন। একই সংগে দেশ ও সমাজকে নিরাপদ রাখার দায়িত্বও সবার। নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার কর্মসূচিতে গ্রামীণফোন দেশজুড়ে ৫০০ স্কুলের ৮০ হাজার শিক্ষার্থীর সচেতনতায় কাজ করছে। ব্য্রাকের সহায়তায় চলতি বছর আরো ২৫০টি স্কুলের ৫০ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করবে গ্রামীণফোন।’’তরুণদের জন্য বর্তমানে ভয়াবহ দুসময় যাচেছ।চাকরির অনিশ্চয়তা, সমাজের পরিবর্তনের এ সময়ে তরুণদের অভিভাবকহীন ইন্টারনেটের জগতে ছেড়ে দেয়া হচেছ।সে কারণে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিচেছ। তাই দায়িত্বশীলভাবে নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে শিশু ও অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনাতা বৃদ্ধিতে এখন থেকে গ্রামীণফোনের সঙ্গে ব্র্যাকও থাকবে।’’-এ গুরুত্বপূর্ন কথাগুলো বলেছেন ব্র্যাকে জেষ্ঠ পরিচালক- আসিফ সালেহ।

নারীরাও পুরুষদেরকে সাইবার ক্রাইমে জড়িয়ে ফেলছে। তারা বিভিন্ন ধরনের মেসেজ ও আবেদনময়ী ছবি পাঠিয়ে সহজেই পুরুষের মন দুর্বল করে ফেলে এবং কেউ কেউ লাঞ্চনের লেডি গেস্টের মতো পরিস্থিতিতে পড়ে, ্েকউবা হারায় সবকিছু। আবার অনেক পুরুষ নারী সেজে অন্য পুরুষদের ধোকা দিয়ে থাকে। কাজেই সাইবার ক্রাইম সম্পর্কে সবাইকেই সচেতন হতে হবে। ইন্টারনেটে সবচেয়ে বেশি যে জিনিস খোঁজা হয় সেটা পর্ন। আর তাই এই জগতের বাসিন্দাদের সম্পর্কেও মানুষের জানার কৌতুহল কম নয়। তাদের জীবন-যাপন, সংসার, আয়-রোজগার সবকিছুই মানুষ জানতে চায়। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও পর্ন অভিনেত্রীদের থেকে অভিনেতাদের গড় আয় বেশি। একটি পুরুষ –নারী দৃশ্যে নায়িকা পান ৩০০ থেকে ১৫০০ মার্কিন ডলার।নারী-নারী দৃশ্যে নায়িকা পান ৭০০ থেকে ১২০০ মার্কিণ ডলার। নায়ক পান ৫০০ থেকে ১৫০০ মার্কিন ডলার।আর একজন পরিচালক পান ১০০০ থেকে ৩০০০ মার্কিন ডলার।অর্থাৎ বিরাট এক আন্তর্জাতিক চক্র ও সিন্ডিকেট এই পর্ণ ব্যবসার পসার জমিয়েছে আর তা ছড়িয়ে দিচেছ পৃথিবীময়। এত অর্থ প্রাপ্তিতে বহুলোক আসছে এই পর্ন বাণিজ্যে। সবচেয়ে বড় কথা হচেছ, কোন ধরনের বিজ্ঞাপন দিতে হয়না এই ব্যবসা চালানোর জন্য কারণ নিষিদ্ধের প্রতি মানুষের বরাবরই আগ্রহ থাকে অনেক বেশি। আর তাই সব বয়সের নারীপুরুষ এই পর্ন ছবি খুঁজে নেয় নিজেরাই। বিছানায় বসে, ঘরে, বাইরে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, অফিসে সর্বত্র এই পর্ণের বিস্তার। গোটা বিশ্বের সমাজ বিজ্ঞানী ও ধর্মীয় নেতাদের ভাবিয়ে তুলছে এসব নতুন নতুন সামাজিক সমস্যা। এসবের সমাধান কোথায়? বিষয়টিকে কোনভাবে এড়িয়ে যাওয়া যাবেনা কারণ আমি, আপনি এবং সবাই এই সাইবার ক্রাইমের জালে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে বন্দী।

জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তার অংশ হিসেবে অনলাইনে শিশুর নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করাকে নির্বাচন করেছে গ্রামীণফোন ও টেলিনর গ্রুপ। শিশুরা যাতে আত্মবিশ্বাসের সাথে ও দাযিত্ব নিয়ে ই›ন্টানেট ব্যবহার করে ও এ মাধ্যমে যোগাযোগ করে এবং এক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয় সে লক্ষ্যেই কাজ করছে তারা। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা যখন কোন বিপজ্জনক ওয়েবসাইট পরিদর্শন করার চেষ্টা করেন তখন তাদের সতর্ক করার মাধ্যমে এই উদ্যোগ মূলত মালওয়ের এবং ফিশিং প্রচেষ্টা থেকে ঈযৎড়সব ব্যবহারকারীদের রক্ষা করার জন্য নরিাপদ ব্রাউজংি প্রযুক্তি তরৈি করেেছ৷ ইন্টারনেটের ব্যবহার সকলের জন্য নিরাপদ করতে এই প্রযুক্তিটিকে অঢ়ঢ়ষব ঝধভধৎর এবং গড়ুরষষধ ঋরৎবভড়ী সহ অন্যান্য কোম্পানীকে বিনামূলে তাদের ব্রাউজারে ব্যবহার করতে দেয়া হয়। আজ পৃথিবীর অর্ধেক অনলাইন জনসংখ্যা নিরাপদা ব্রাউজিং দ্বারা সুরক্ষিত। ওয়েবসাইটে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ত্রুটি ঘটলে গ্রামীণফোন সেই ওয়েবসাইট মালিকদের সতর্ক করে দেয় এবং দ্রুত সমস্যা সমাধান করার জন্য তাদের বিনামূল্যে সরঞ্জামসমূহ প্রদান করে।ঐঞঞচঝ এনক্রপিশান গ্রামীণফোনের পরিষেবায় সংযুক্ত হওয়ার মাধ্যমে ব্যবহারী ঠিক যা চান এবং সেখানে থেকে পেতে চান সেই বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে অনধিকার প্রবেশ এবং ক্ষতিকারক হ্যাকারদের হাত থেকে নিজকে সুরক্ষিত রাখতে পারেন। এই অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাটিকে গ্রহন করতে ওয়েবসাইটগুলিকে অনুপ্রাণিত করার জন্য, সংকেতগুলির অন্যতম একটি গ্রামীণফোন ঐঞঞচঝ এনক্রপিশান তরৈি করেেছ, যেটিকে এড়ড়মষব অনুসন্ধান অ্যালগরিদম অনুসন্ধানের ফলাফলে ওয়েবসাইটের রেঙ্কিং করার জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

বান্দরবানসহ দেশে দশটি ইন্টরনেট স্কুল অছে, এসব স্কুলে মানসম্মত শিক্ষা দেওয়া হচেছ। বাংলাদেশে প্রায় ছয় কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী আছে , তাদের মধ্যে ৮৫শতাংশ ব্যবহারকারী তরুন। মেয়েদের থেকে ছেলেরা ইন্টারনেট ব্যবহারে এগিয়ে আছে। অর্ধেক ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কি করে, কি দেখে তা বাবা-মায়েরা জানেনা।কাজেই বাবামকে এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। তরুণরা মা, বাবা ও শিক্ষকের কাছ থেকে ও বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে শেখে। তাই সরকারের পরিকল্পনা হচেছ প্রত্যেক নাগরিককে ইন্টারনেট ব্যবহারের আওতায় নিয়ে আসা এবং তাদের মধ্যে অর্ধেককে ব্রডব্যান্ড সংযোগ দেয়া যাতে আইসিটি খাত থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে এক বিলিয়ন ডলার, ২০২১ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলার এব ২০৪১ সালের মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলার উপার্জন করা যায়। ২০০৮সালের ব্যান্ডউইথের মূল্য ছিল ৭৮ হাজার টাকা যা কমিয়ে বর্তমানে করা হয়েছে ৬২৫ টাকা। ইন্টরনেটকে আরও জনপ্রিয় করার নিমিত্তে সরকার দেশের ৪৮৭উপজেলায় আইসিটি সপ্তাহ পালন করছে প্রতিবছর। গ্রামীণফোন পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায় যে, ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করে ইন্টারনেটে কোন সমস্যায় পড়লে তাদের সহায়তা বা দিকনির্দেশনা দেয়ার কেউ নেই। কারণ বিদ্যালয়, শিক্ষক বা অভিভাবকগন এ বিষয়ে যথেষ্ট সক্ষম নয়। ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ থাক ১১-১৮ বছর বযসী গ্রাম ও শহর অঞ্চলের এক হাজার পাঁচ শ শিক্ষার্থীর মধ্যে গবেষণাটি পরিচালিত হয়। সত্যিকার অর্থে ইন্টারনেট ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করতে পারলে তরুণদের জীবনই বদলে যাবে, তাই এর ক্ষতিকর দিকগুলোও তাদের জানাতে হবে। একজন মানুষ যা জানতে চায় তার প্রায় সবই পাওয়া যাবে এই ডিভাইসে।তরুণেরা আমাদের থেকে অনেক বেশি জানে ও বুঝে।তারা জীবনকে সমৃদ্ধ করতে পারে ইন্টারনেট ইতিবাচকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে। তবে নিয়ন্ত্রণহীন ইন্টারনেট সমাজকে এবং জীবনকে বিপর্যস্ত করতে পারে। আমরা তরুণদের প্রযুক্তিনির্ভর করতে চাই, প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের জীবন ইতিবাচকভাবে বদলাতে চাই কিন্তু ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের জীবন অন্ধকার হয়ে যাক তা নিশ্চয়ই আমরা কেউ চাইনা। তাই, বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে হবে।

মাছুম বিল্লাহ: শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক, ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচিতে কর্মরত সাবেক ক্যাডেট কলেজ শিক্ষক।

মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003788948059082