বিনিয়োগ হিসেবে শিক্ষা সবচেয়ে লাভজনক হলেও এ খাতে প্রত্যাশা অনুযায়ী বাজেট বরাদ্দ হচ্ছে না। অথচ শিশু বিকাশে এ খাতে সঠিকভাবে এক টাকা বিনিয়োগ করলে তার বিপরীতে ১৯ গুণ সুফল পাওয়া যাবে।
বুধবার (৪ জানুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে নীতিগত অগ্রাধিকার’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশ সরকারের রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নে করণীয় নিয়ে সুপারিশমালা তুলে ধরতে ব্র্যাক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা কোপেনহেগেন কনসেনসাস সেন্টারের যৌথ আয়োজনে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে ‘দক্ষতামূলক প্রশিক্ষণের স্বীকৃতি’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অতনু রাব্বানি। এ ছাড়া ‘বিলম্বে বাল্যবিবাহ ও শিক্ষামাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন’ শীর্ষক আরেকটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আহসানুজ্জামান।
অতনু রাব্বানি তাঁর প্রবন্ধে শিক্ষায় বিনিয়োগের ওপর গুরুত্ব দেন। শিশুদের বিকাশে শিক্ষায় বিনিয়োগের সুফল তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, এ খাতে এক টাকা বিনিয়োগ করলে তার ১৯ গুণ সুফল পাওয়া যাবে। পোশাক বা অন্য কারখানার শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়াতে এক টাকার বিনিয়োগের বিপরীতে ৫ টাকা ৪০ পয়সার সুফল পাওয়া সম্ভব।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সরকার জনগোষ্ঠীকে সম্পদে পরিণত করতে চায়। তাই শিক্ষা খাতে নীতিগত অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়টিই গুরুত্বপূর্ণ। মানসম্মত শিক্ষার দিকে সরকারের নজর রয়েছে।’
ইউনিসেফ প্রতিনিধি এডওয়ার্ড বেগবেদার বলেন, ‘কোপেনহেগেন কনসেনসাস ও ব্র্যাক আয়োজিত সেমিনারে আলোচনায় যেসব পদক্ষেপের সুপারিশ এসেছে, সরকার তা ইতিবাচকভাবে নিয়ে বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে বলে আশা করি।’
সেমিনারে বিভিন্ন বক্তার বক্তব্যে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের কথা উঠে আসে। এর মধ্যে রয়েছে মানসম্মত শিক্ষার অভাব, প্রাথমিক পর্যায়ের পর মাধ্যমিক পর্যায়ে ঝরে পড়ার হার বৃদ্ধি, শিশুদের মেধাভিত্তিক ভাগ না করে শিক্ষা দেওয়া, শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি, শিক্ষক স্বল্পতা, শিক্ষকদের জবাবদিহি কম থাকা ইত্যাদি।
ব্র্যাকের শিক্ষা কর্মসূচির পরিচালক শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমেদ, ব্র্যাকের গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক আবদুল বায়েস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট অধ্যাপক এস এম হাফিজুর রহমান, কোপেনহেগেন কনসেনসাস সেন্টারের আউটরিচ ম্যানেজার হাসানুজ্জামান জামান, ব্র্যাকের অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেঞ্জ কর্মসূচির পরিচালক কে এ এম মোর্শেদ, সেভ দ্য চিলড্রেনের শিক্ষা কর্মসূচির পরিচালক তালাত মাহমুদ, ব্র্যাকের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির পরিচালক গওহার নঈম ওয়ারা প্রমুখ।