বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের ৩২ জন কর্মকর্তাকে বদলি/পদায়ন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের পৃথক তিনটি প্রজ্ঞাপনে বদলির খবর জানা যায়। বদলিকৃতদের মধ্যে অন্তত ২৫ জনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর এবং পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে কর্মরত থেকে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে যুক্ত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সরকারের একাধিক তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা ও বদলি করার সুপারিশ ছিলো। কামাল উদ্দিন হায়দারের বিরুদ্ধে তিন বছর আগে ক্রিড়া প্রতিযোগীতায় পাকিস্তানি পতাকা বানিয়ে স্টেডিয়ামে শিক্ষার্থীদের হাতে বিতরণ, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে মন্ত্রীর অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকার আদলে কেক বানানো এবং মনিটরিং ও ইভ্যালূয়েশন উইংয়ে থেকে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগ, ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে নিয়োগ, বেসিক ব্যাংকে বোর্ডের ৮০ কোটি টাকা জমা রাখা ও কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, বদলিকৃতদের মধ্যে শিক্ষা অধিদপ্তরের দুইজন সহকারি পরিচালকের বর্তমান পদে মাত্র দেড় বছর হলেও তাদেরকে বদলি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো সংস্থা কোনো নেতিবাচক প্রতিবেদন দেয়নি। অপরদিকে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের উপ-সচিব নাজমুল হকের বিরুদ্ধেও কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু ওই পদে তার পাঁচ বছর হয়েছে এবং সম্প্রতি তিনি পদোন্নতি পাওয়ার তাকে বদলি করা হয়েছে বলে জানা যায়। কলেজ পরিদর্শক ড. আশফাকুস সালেহীনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। পদোন্নতি পেয়ে অধ্যাপক হওয়ায় তাকে বদলি করেছে।ক্যামব্রিয়ানসহ কয়েকটি বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানকে পছন্দমতো পরীক্ষা কেন্দ্র সেন্টার না দেয়ায় ক্ষুব্ধ ছিলো একটি শিক্ষা মাফিয়া চক্র। চক্রটি সৎ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে লেগেছিলো।
তবে, ঢাকা বোর্ডের মাসুদা ও মন্মথ বোর্ডের মান-সম্মান ভূলুন্ঠিত করেছে—এমন কথা বোর্ডের সবার মুখে মুখে। নিজের মেয়ের ফলাফল জলিয়াতি করে পরিবর্তন করার অভিযোগ মাসুদার বিরুদ্ধে। ‘আমি মন্ত্রী-সচিবের সঙ্গে চলাফেরা করি’ —এমন হুমকি দিয়ে শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করার অভিযোগ মাসুদার বিরুদ্ধে। পুরান ঢাকার আনন্দময়ী স্কুলের সভাপতি হিসেবে সাদ আহমদসহ কয়েকজন শিক্ষককে দিয়ে গাইড ও নোট বই বাণিজ্য করার অভিযোগ মাসুদার বিরুদ্ধে। স্বামীকে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার পদে নিয়োগ দেয়ায় নেপথ্য ভূমিকা পালন করেছেন মাসুদা।
মাউশি পরিচালক (মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন) ড. মো. সেলিমের বিরুদ্ধে শিবিরপন্থী মিডিয়াকর্মীদের তথ্য সরবরাহ, সেকায়েপের ভুয়া ভাউচারে কেনাকাটা ও ভুয়া ভ্রমণ বিল তৈরির অভিযোগ রয়েছে। সেলিমকে মাদারীপুরের বরহামগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ করে পাঠানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মেজবাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ১৯৬৫ জনবল নিয়োগে দুর্নীতি ও এমপিওভুক্তিতে জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন উপ-পচিালকের বদলি ঠেকাতে মন্ত্রীর কাছে তদবিরে গিয়েছিলেন পারিবারিকভাবে শিবিরপন্থী ও নৈতিক এবং মানসিকভাবে অসৎ এক ব্যক্তি।
বদলির আদেশটি দেখুন: