শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির মামলা সুপ্রিম কোর্টর আপিল বিভাগের শুনানি শেষে হাইকোর্ট বিভাগের আগেকার আদেশ ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে| রোববার চেম্বার জজ এমন আদেশ দেন। এর ফলে লেংথ হিসাবে পদোন্নতির সভা করতে পারবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় । চলতি সপ্তাহেই ডিপিসির সভা হতে পারে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, সরকারের পক্ষ থেকে তিতুমীর কলেজের অধ্যাপক আমেনা বেগমের দায়েরকৃত রিট মামলার রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগে সিএমপি নং-৯১৪/২০১৬ দায়ের করা হয়ে। হাইকোর্টের রায়ের কপি স্বাক্ষর হওয়ায় সরকারের পক্ষে সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগে সিপি (আপীল) মামলা ফাইল করেন যার সিপি (আপীল) নং-২৮৯০/২০১৬। উক্ত সিপি (আপীল) মামলাটি আজ রোববার চেম্বার কোর্টে শুনানীর জন্য যায়।
অধিদপ্তরের আইন শাখার দুই কর্মকর্তা বলেছেন, “আইনী লড়াইয়ের মাধ্যমে পদোন্নতি পাওয়া অধ্যাপক আমেনার দায়ের করা মামলার কারণে শিক্ষা ক্যাডারের সর্বস্তরের পদোন্নতি আটকে রয়েছে।”
আইন কর্মকর্তাদ্বয় হলেন মু: আবুল কাসেম ও মো: আল আমিন সরকার। দুজনই বি সি এস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজ শিক্ষক। বর্তমানে তারা আইন আইন শাখায় কর্মরত ।
তাদের দেয়া এক পৃষ্ঠায় মোট পাঁচটি অনুচ্ছেদের মতামতের শেষ অনুচ্ছেদ মোটামুটি এ রকম: “যেহেতু জনাব আমেনা বেগমকে অনুসরণ করে দায়েরকৃত অন্য ১০ মামলায় কোন স্থগিতাদেশ নাই এবং আমেনার অধ্যাপক পদে চাহিত পদোন্নতির বিষয়টি ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে সেক্ষেত্রে আমেনা কর্তৃক দায়ের কৃত মহামান্য হাইকোটে রিট পিটিশন নং ১৪৩১/২০১৫ এর চলতি বছরের ২৪ মার্চ হাইকোট বিভাগের রায় মহামান্য সুপ্রীম কোটের আপীল বিভাগে স্থগিতকরণ হলে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি সংক্রান্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করা যেতে পারে।”
সরকারি কলেজ শিক্ষকদের পদোন্নতি সংক্রান্ত বিষয়ে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগের দায়েরকৃত মামলার তথ্যাদিসহ বর্তমান অবস্থা: (আমেনা বেগম কর্তৃক মামলাসহ আরও ১০টি রীট পিটিশন মামলা) শিরোনামে এক পাতার মতামতে আরো বলা হয়, “১৪তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের কর্মকর্তা আমেনা বেগম (সহযোগী অধ্যাপক হিসাববিজ্ঞান) সরকারি জগন্নাথ কলেজ, ঢাকায় কর্মরত থাকা অবস্থায় ভূতাপেক্ষভাবে সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য বিজ্ঞ প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল, ঢাকায় এ.টি মামলা নং ১৯/২০১১ দায়ের করেন। উক্ত এ.টি মামলার রায় তার পক্ষে হয়। উক্ত রায়ের পক্ষে সরকার পক্ষে আপীল দায়ের করা হলে এ.টি মামলার আদেশ পরিবর্তন করে পুনরায় তার পক্ষে রায় ঘোষিত হয়। পরবর্তীতে রায় বাস্তবায়নের জন্য আমেনা বেগম প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে কনটেম্পট মামলা নং ১/২০১৫ দায়ের করেন। উক্ত কনটেম্পট মামলার প্রেক্ষিতে তাকে ২৫/১০/২০১৫ তারিখে রায় মোতাবেক পদোন্নতি প্রদান করা হয়।
আমেনা বেগম কর্তৃক প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে কনটেম্পট মামলা চলাকালীন একই বিষয়ে (গ্রেডেশন লিষ্টকে চ্যালেঞ্জ করে) তিনি হাইকোর্ট রীট পিটিশন নং ১৪৩১/২০১৫ দায়ের করেন। উক্ত রীট মামলার অর্ন্তবর্তীকালীন আদেশে সহযোগী অধ্যাপকের পদোন্নতির তালিকাকে স্থগিত করা হয় এবং একই সাথে তাকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য বিবাদীগণকে নির্দেশ দেয়া হয়। উক্ত রীট মামলার চুড়ান্ত রায় বিগত ২৪/০৩/২০১৬ তারিখে ঘোষিত হয়। এখানে উল্লেখ্য যে, রীট মামলার রায়ের পূর্বে কনটেম্পট মামলার আদেশের প্রেক্ষিতে বিগত ২৫/ ১০/ ২০১৫ তারিখে আমেনা বেগমকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেয়া হয়।
আমেনা বেগম পদান্নোতি পেয়েও রীট মামলা প্রত্যাহার না করার কারণে তার দায়েরকৃত রীট মামলায় রায়ের প্রেক্ষিতে শিক্ষা ক্যাডারের সর্বস্তরের পদোন্নোতি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে আমেনা বেগমের দায়েরকৃত রীট মামলার রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগে সিএমপি নং-৯১৪/২০১৬ দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে হাইকোর্টের রায়ের কপি স্বাক্ষর হওয়ায় সরকারের পক্ষে সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগে সিপি (আপীল) মামলা ফাইল করেন যার সিপি (আপীল) নং-২৮৯০/২০১৬। উক্ত সিপি (আপীল) মামলাটি আগামী ২৫/০৯/২০১৬ তারিখে চেম্বার কোর্টে শুনানীর জন্য যাবে।
আমেনা বেগমের রীট মামলাকে অনুসরণ করে একই বিষয়ে আরও ১০টি মামলা দায়ের হয়েছে (রীট পিটিশন নং- ৫৪১৬/২০১৫, ৫৪১৭/২০১৫, ৫৪১৮/২০১৫, ৫৪১৯/২০১৫, ৫৪২০/২০১৫, ৯৫৫১/২০১৫, ৯৫৫২/২০১৫, ৯৫৫৩/২০১৫, ৯৫৫৪/২০১৫ ও ২৩২৪/২০১৬) যা হাইকোর্ট বিভাগে এনেক্স-১৩ নং কোর্টে একত্রে শুনানী চলছে। বর্মানে হাইকোর্ট বিভাগ অবকাশকালীন বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে ১০টি মামলায় কোনো স্থগিতাদেশ নাই। অবকাশকালীন বন্ধের পরে কোর্ট খুললে মামলাগুলোর শুনানী হবে।