ওসমানীনগরে বসবাসরত বেদে পরিবারের অন্তত ৪০ শিশু শিক্ষার সুবিধা থেকে বঞ্চিত। দারিদ্র্য, সচেতনতার অভাবসহ নানা কারণে এখানকার শিশুরা বিদ্যালয়বিমুখ। অভাবের তাড়নায় শিশুদের লেখাপড়া নিয়ে ভাবারও সময় নেই অভিভাবকদের। সকাল হলেই অভিভাবকরা দু’মুঠো অন্নের ব্যবস্থা করতে ঘর থেকে বেরিয়ে ফেরেন রাত হলে। খেলাধুলা করেই দিন কাটে এসব শিশুর।
৮ বছর ধরে ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারের গয়নাঘাট এলাকায় ২০-২৫টি বেদে পরিবার বসবাস করছে। একটি কলোনিতে ঘর ভাড়া করে এবং তাঁবু টানিয়ে বসবাস করছে তারা। পরিবারগুলোয় বিদ্যালয়ে ভর্তির উপযুক্ত শিশুর সংখ্যা অন্তত ৪০ জন। তাদের বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেওয়ার কোনো আগ্রহ নেই নিরক্ষর বাবা-মায়ের। আবার কেউ কেউ অভাবের কারণে সন্তানদের লেখাপড়া করাতে পারছে না। যাযাবর বলে এদের খবর রাখছে না কেউ।
তিন সন্তানের জননী আমিরুন বেগম জানান, দু’মুঠো ভাতের ব্যবস্থা করতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাইরে থাকতে হয়। কীভাবে সন্তানদের লেখাপড়া করাব। বেদে সর্দার সোনাফর আলী বলেন, প্রতিটি পরিবারের তিন-চারটি করে শিশু রয়েছে। নিজের ১৬টি সন্তান রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবাই চায় তার সন্তান লেখাপড়া করে শিক্ষিত হোক। কিন্তু আমাদের শিশুদের লেখাপড়া করানোর কথা ভাবার সময় বা সুযোগ নেই। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সবাইকে দু’মুঠো ভাতের ব্যবস্থা করতে বাইরে থাকতে হয়।
ওসমানীনগর ইউএনও মোহাম্মদ শওকত আলী বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আসছে। তাদের ব্যাপারেও খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে বেদে পরিবারের অভিভাবকরাও অসচেতনতার কারণে সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠান না।