বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জামায়াত-শিবির জঙ্গি কার্যক্রম চালাচ্ছে কি না, সে বিষয়ে চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে অনুসন্ধান। গঠন করা হয়েছে একাধিক কমিটি। শিবির অধ্যুষিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি জামায়াত পরিচালিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চলছে নজরদারি। আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকেও এ ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কোচিং সেন্টার এবং মেস-বাসাসহ সার্বিক বিষয়ে অনুসন্ধান হচ্ছে। কোনো মাধ্যমে জঙ্গিবাদী কার্যক্রম ছড়ানো হচ্ছে কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে। শুধু জামায়াত-শিবির নয়, সব ক্ষেত্রেই অনুসন্ধান চলছে।’
এদিকে মহানগরের ছাত্রশিবির অধ্যুষিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কলেজ ও কোচিং সেন্টারগুলোতে জঙ্গি তত্পরতা আছে কি না, তা যাচাইয়ে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন নগর পুলিশের কমিশনার মো. ইকবাল বাহার। গত সোমবার এ-সংক্রান্ত চিঠি ইস্যু হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে নগর পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) অতিরিক্ত উপকমিশনার মির্জা সায়েম মাহমুদকে।
এসবির অতিরিক্ত উপকমিশনার মির্জা সায়েম মাহমুদ বলেন, শিবির অধ্যুষিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টারগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশনা দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে।
পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, চট্টগ্রাম কলেজ ও হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ ঘিরে ছাত্রশিবির বেশ কিছু মেস ও কোচিং সেন্টার পরিচালনা করছে। এসব স্থান থেকে বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার নজির রয়েছে। জঙ্গিবিরোধী অভিযানে পুলিশ এখন বিশেষ নজরদারি করছে এসব প্রতিষ্ঠানে। মূলত ছাত্রশিবির নিয়ন্ত্রিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্যানুসন্ধানে জোর দিচ্ছে বিশেষ কমিটি। জেলা পর্যায়ে জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত আর্থিক, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসবি) রেজাউল মাসুদ বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর সময় এখনো আসেনি।’
ওদিকে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সীতাকুণ্ড ক্যাম্পাস এবং নগরের ক্যাম্পাসে পুলিশ ও গোয়েন্দারা বিশেষ নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারীদের বিশদ তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক সহায়তা ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগ পর্যালোচনায় রাখা হয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কেউ নিখোঁজ রয়েছে কি না, তাও যাচাই করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি শফিকুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আগে থেকেই নজরদারিতে ছিল। এখন সেখানে পুলিশ ছাড়াও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা নজরদারি করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম যাতে জঙ্গিদের অনুপ্রাণিত করতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক পর্যালোচনা করা হচ্ছে।