শিবিরের সাবেক নেতা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যলয়ের ছাত্র না হয়েও চবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদকের পদ পেয়েছেন মো. জাহাঙ্গীর রাসেল ওরফে জাহাঙ্গীর আলম নামের এক তরুণ। এখন সে চবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুজনের কর্মী। এর আগে যুদ্ধাপরাদের দায়ে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের সাবেক নেতার রায়ের প্রতিবাদে ছাত্রশিবিরের ডাকা হরতালের মিছিলে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে তাকে।
সদ্য ঘোষিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে অনেক ত্যাগী ও অতীতে শিবির বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া অনেক কর্মী বাদ পড়লেও একজন শিবির নেতা ও অছাত্র কমিটিতে পদ পাওয়ায় বিষ্মত ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
অভিযোগ আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না হয়েও পদ পেয়েছেন নতুন ছাত্রলীগের নতুন কমিটি। কখনো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হননি। অথচ নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের ছাত্র হিসেবে দাবি করে ছাত্রলীগের সভা-সমাবেশে সরব থাকছে সে।
কিন্তু উক্ত বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাহাঙ্গীর রাসেল কিংবা জাহাঙ্গীর আলম নামে তাদের নথিপত্রে কোন শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ নেই।
এ বিষয়ে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী জানান, ‘আমাদের অনার্স ও এক বছর মেয়াদের ভাষা শিক্ষা কোর্সের শিক্ষার্থীদের নথিপত্র যাছাই করা হয়েছে। সেখানে জাহাঙ্গীর আলম কিংবা জাহাঙ্গীর রাসেল নামের কোন শিক্ষার্থীর নাম নেই।’
নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং শিবিরের কেউ নয় দাবি করে মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “শিবিরের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। আমাকে রাজনৈতিক ময়দান থেকে সরাতেই কিছু ব্যক্তি এ সকল প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।’
এ ব্যাপারে সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি সুজন সাংবাদিকদের বলেন, “কারো বিরুদ্ধে যদি এ রকম অভিযোগ পাওয়া যায় সে যেই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
চবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আলমগীর টিপু বলেন, “এ রকম বিষয়ে যদি কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে তাহলে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিব। তবে সে যেহেতু সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি সুজনের সাথে রাজনীতি করে সেহেতু তার ব্যাপারে সুজনই ভাল জানবে।”
এদিকে কমিটি হওয়ার পর থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে মো. জাহাঙ্গীর রাসেল প্রকাশ জাহাঙ্গীর আলমকে দেখা গেছে সামনের সারিতে। আবার ২০১৩ সাল থেকে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে ও অবস্থান করে আসছেন। এমনকি ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বা বিবাদে তাকে ক্যাম্পাসে সোচ্চার দেখা যায়। সে কখনো বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি হননি অথবা ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাননি। তিনি নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি সুজনের অনুসারী হিসেবে বিভিন্ন কাজ-কর্ম সম্পাদন করে আসছেন।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকুর রহমান পাঠান সেতু বলেন, অভিযোগের সত্যতা যাচায় করে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলবো। তারা ব্যর্থ হলে কেন্দ্রীয় কমিটি ব্যবস্থা নেবে।